তিথি অনুসারে প্রতি বছর মধু কৃষ্ণা ত্রয়োদশী তিথিতে শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মতিথি পালন করা হয় সারা বিশ্ব জুড়ে।এই বছর হরিচাঁদ ঠাকুরের ২১২ তম জন্ম তিথি উপলক্ষে ঠাকুরনগরে রবিবার থেকে শুরু হচ্ছে বারুনী মহামেলা। এই উৎসবের কেন্দ্র বিন্দুতে থাকে একটি অদ্ভুত জলাশয় যার প্রতিটি জলবিন্দু আধ্যাত্মিক ক্ষমতায় পরিপূর্ণ। ভক্তদের কাছেএই জলাশয়টি কামনা সাগর নামে পরিচিত।এই উৎসব ও কামনা সাগরের মাহাত্ম জানতে হলে আগে মতুয়া দর্শন ও শ্রী শ্রী হরি চাঁদ ঠাকুরকে জানা প্রয়োজন।আজ দেশে বিদেশে ছড়িয়ে থাকা কোটি কোটি মতুয়াদের কাছে শ্রী শ্রী হরিচাঁদ চাঁদ ঠাকুর কলি যুগের শেষ এবং শ্রীহরি-র পূর্ণ অবতার|যথার্থ অর্থেই তিনি পতিতপাবন|তিনি ছিলেন মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রান পুরুষ|সারা জীবন তিনি উৎসর্গ করেন মতুয়া আদর্শের প্রচারে এবং প্রসারে|তিনি মনে করতেন ঈশ্বর প্রাপ্তির জন্য সন্ন্যাস নেয়ার প্রয়োজন নেই অন্তরে শ্রদ্ধা ও ভক্তি থাকলে এবং নিষ্ঠা সহকারে ঈশ্বর চিন্তা করলে গৃহীরও ঈশ্বর লাভ সম্ভব|নানা শ্রেণী ও জাতি তে বিভক্ত হিন্দু সমাজ কে তিনি ঐক্যবদ্ধ করতে পেরেছিলেন মতুয়াবাদের দ্বারা|তৎকালীন হিন্দু সমাজের অসংখ্য নিপিড়িত, দরিদ্র ও তথা কথিত নিম্ন শ্রেণীর মানুষ দের তিনি পরম স্নেহে বুকে টেনে নিয়েছিলেন এবং তাদের সার্বিক উন্নতি সাধনই ছিলো তার জীবনের প্রধান লক্ষ্য|ঠাকুর বাড়ি ছিলো শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের দিব্য লীলা স্থল। কামনা সাগরের জল তার পদধূলিতে ধন্য। প্রতিটি জলবিন্দু তার চরণামৃত সমান যা অলৌকিক ক্ষমতা সম্পন্ন।ভক্তদের বিশ্বাস, এই জলে স্নান করলেই মেলে রোগ মুক্তি থেকে নানা সমস্যার সমাধান।কামনা সাগরে হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মতিথিতে স্নান করলে মনোবাসনা পূরন হয়।শুধু স্নান নয়। তারা এই জল বাড়ি নিয়ে যান। সারাবছর সংরক্ষন করে রাখেন। যেকোন শুভ অনুষ্ঠানে তারা এই কামনা সাগরের জল ব্যবহার করে থাকেন। এমনকী শরীরে কোন রোগ-ব্যধির প্রকোপ দেখা দিলে এই জল বিশ্বাস নিয়ে পান করলে সেরে যায় তাদের ব্যাধি।ঠাকুরবাড়ির মন্দির পার্শ্বস্থ মাঠেই সাত দিন ধরে চলবে বারুনী মহা মেলা। হরিচাঁদ ও গুরুচাঁদ ঠাকুর সহ বিনাপানি দেবী অর্থাৎ বড় মা’র মন্দিরে চলে ভক্তদের বিশেষ প্রার্থনা।ভারতের বাইরে বাংলাদেশেও ঠাকুরের জন্ম স্থানে ঠাকুরের জন্ম তিথি উপলক্ষে উৎসব পালন হয় মহা সমারোহে|সারা বিশ্বের মতুয়াদের কাছে এই উৎসব এক মহা মিলন উৎসব।জয় হরি চাঁদ ঠাকুরের জয়। জগৎ এর সব মতুয়া ভাই বোনেদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।