আগেই জানিয়েছিলাম বর্তমানে নেপালে আছি, উদেশ্য ভ্রমণ…বছরের শেষ টা হিমালয়ের কোলে এই সুন্দর দেশেই কাটাবো আর যা কিছু দেখবো যা কিছু শুনবো, যা অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করবো সব ভাগ করে নেবো আপনাদের সাথে, যেমনটা বরাবরই করে থাকি….. আজ শুরু করবো নেপালের দুটি বিখ্যাত ধার্মিক পর্যটন স্থল দিয়ে…নেপাল বলতেই আমাদের মনে ভেসে ওঠে সত্যজিৎ রায়ের বিখ্যাত উপন্যাস ” যত কান্ড কাটমান্ডু ” গোটা উপন্যাসটি নেপালের পটভূমিকায় লেখা, সেখানে বার বার ঘুরে ফিরে এসেছে এই পশুপতি নাথ মন্দিরের কথা..কাঠমান্ডু শহরের খুব কাছে দিওপাটন শহরের বুকে,বাগমতি নদীর তীরে পশুপতিনাথ মন্দির অবস্থিত। হিন্দু ধর্মালম্বীদের কাছে এই মন্দিরটির গুরত্ব অপরিসীম|শিবের আরেক নাম হল পশুপতিনাথ। সেই নামেই এই মন্দিরটির নাম পশুনাথ মন্দির।পশুপতি নাথ মন্দিরটি কবে প্রতিষ্ঠা হয়েছে, সে সম্পর্কে কোনও সঠিক তথ্য পাওয়া যায়না তবে ঐতিহাসিকদের মতে এই মন্দির চতুর্থ শতাব্দী থেকেই নেপালের এই জায়গায় মন্দিরটির অস্তিত্ব ছিল।মন্দিরকে কেন্দ্র করে একটি পৌরাণিক ঘটনার উল্লেখ পাওয়া যায় – একবার শিব ও পার্বতী কাটমান্ডুর বাগমতী নতীর তীরে ভ্রমণ করতে এসেছিলেন। নদী তীরবর্তী উপত্যকায় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মুদ্ধ হয়ে হরিণের বেশ ধরে ওই এলাকায় ঘুড়ে বেড়াতে থাকেন দুজনে। কিন্তু দেবতারা পড়েছেন মহাফাঁপরে।শিব ছাড়া সৃষ্টি অচল প্রায়!অনেক কষ্টে শিবকে খুঁজে পেলেও দেবাদিদেব শিব এই স্থান থেকে যেতে নারাজ।বহু অনুরোধে পরে শিব ঠিক করেন, তিনি যখন হরিণ বেশে এখানে ঘুড়েছেন তখন পশুদের পালন কর্তা হিসাবে এখানে তিনি পরিচিত হবেন। তারপর থেকেই এখানে শিবকে পশুপতিনাথ হিসেবে পূজা করা হয়ে আসছে।অপূর্ব সুন্দর এই প্রাকৃতিক পরিবেশে এমন রাজকীয় শিব মন্দির প্রাঙ্গনে দাঁড়িয়ে মন চলে যায় সেই আদিম, প্রাকৃতিক পৌরাণিক কালে|যে আধ্যাত্মিক উপলব্ধি হয় অন্তরে তা ভাষায় প্রকাশ করা যায়না….এখানে বলে রাখি নেপালের রাজারাই ছিলেন বিশ্বের শেষ হিন্দু রাজা, তাদের পৃষ্ঠপোষকতায় ও অন্তরিক প্রচেষ্টায় বার বার নবরূপে সেজে উঠেছে পশুপতি নাথের মন্দির|হয়ে উঠেছে দেশ বিদেশের পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ|নেপাল হচ্ছে ভগবান বুদ্ধের জন্মদেশ তাই সারা দেশ জুড়ে রয়েছে অসংখ্য বৌদ্ধ স্তুপ যার মধ্যে অন্যতম শয়ম্ভু বৌদ্ধ মনেস্ট্রি বা বৌদ্ধ স্তুপ|আজই সৌভাগ্য হয়েছিলো এও বৌদ্ধ স্তুপটি দর্শন করার|অদ্ভুত অভিজ্ঞতা|কাট মান্ডু শহরের পশ্চিমে পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত এই স্তুপের সৌন্দর্য ও আধ্যাত্মিক পরিমন্ডল চোখে না দেখলে বা অনুভব না করলে ঠিক ভাষায় প্রকাশ করা মুশকিল|গুনে গুনে 365 টি পাথরের সিঁড়ি অতিক্রম করে এখানে পৌঁছাতে হয়|টবে পৌঁছানোর পর|সব ক্লান্তি সব পরিশ্রম এক নিমিশে উধাও হয়ে যায়|সবে শুরু হলো আমার স্বপরিবারে নেপাল যাত্রা|থাকবো কিছুদিন|সব ঘুরে দেখবো|এখনো অসংখ্য তীর্থ স্থান দেখা বাকি|সে সব ও আপনাদের সাথে ভাগ করে নেবো আগামী পর্বগুলিতে|পড়তে থাকুন|সঙ্গে থাকুন|আরো অনেক চমক অপেক্ষা করে আছে|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|