দেবী কালীর অদ্ভুত রূপসজ্জা

333

স্বয়ং মহাদেব যার পদতলে শুয়ে আছেন, যিনি কাল কে গ্রাস করেন, যিনি সকল শক্তির আধার আমরা সেই দেবীর কালীর আরাধনা করবো আর মাত্র কটা দিন পরেই|আগামী 24 অক্টোবর দীপান্বিতা অমাবস্যা উপলক্ষে সেই রাতেই হবে মহা যজ্ঞ ও শাস্ত্র মতে অশুভ গ্রহের প্রতিকার|দেবী কালীর আশীর্বাদে বহু মানুষ ফিরে পাবেন নতুন করে বাঁচার পথ|আজ কালী তত্ত্বে বলবো দেবী কালীর অদ্ভুত রূপসজ্জা নিয়ে জানবো তার রূপসজ্জার আসল ব্যাখ্যা|শাস্ত্রে বহু রূপের উল্লেখ থাকলেও দেবী কালী বা কালিকার প্রধানত দুটি রূপ যথা দক্ষিণা কালী ও বামাকালী। দক্ষিণা কালীর রূপ হচ্ছে দেবী শিবের ওপর বিপরীত ভঙ্গিতে উপবিষ্টা|অন‍্যদিকে বামাকালীর বাম পদ অর্থাৎ বাঁ পা থাকে সামনের দিকে প্রসারিতদেবী কালী কৃষ্ণ বর্নের| তারও ব্যাখ্যা আছে আসলে কালো রঙ অন্য সব রঙকেই শোষণ করে নিতে পারে আর তাই কালী কালো। সমাজ -সংসার-সন্তানের সমস্ত অজ্ঞানতা নিজের দেহে শোষণ করে কালী হয়েছেন কালী। তাই রামপ্রসাদ বলছেন, —“কালোরূপ অনেক আছে, এ বড়ো আশ্চর্য কালো—যারে হৃদমাঝারে রাখলে পরে হৃদপদ্ম করে আলো।”রূপসজ্জার অন্যতম অংশ হিসেবে মায়ের কন্ঠে মুণ্ডমালা থাকে|দেবীর গলায় ৫০টি পিশাচের কাটা মুণ্ডের মালা বা হার থাকে প্রকৃত অর্থে ৫০টি কাটা মুণ্ড ৫০টি সংস্কৃত বর্ণমালার প্রতীক, ১৪টি স্বরবর্ণ আর ৩৬টি ব্যঞ্জন বর্ণ। এখানে প্রতিটি বর্ণ মানে প্রতিটি বীজমন্ত্র। শব্দ ব্রহ্ম। তাই এখানে অক্ষর রূপ বীজমন্ত্রগুলি শক্তির উৎস। দেবী এখানে স্বয়ং শব্দব্রহ্মরূপিণী। কামধেনু তন্ত্রে দেবী স্বয়ং নিজের সম্পর্কে বলেছেন বলেছেন“ মম কণ্ঠে স্থিতং বীজং পঞ্চাশদ্ বর্ণমদ্ভুতম্ । ”সাধক রামপ্রসাদ তাই গেয়েছেন”যত শোন কর্ণপুটে সকল মায়ের মন্ত্র বটে ” আবার অন্য একটি ব্যাখ্যা অনুসারে মুন্ডমালা হল জ্ঞান শক্তির প্রতীক । দেবী ব্রহ্মজ্ঞান প্রদান করেন তিনি চেতনা দান করেন । অন্ধকারে আবদ্ধ জীবকে আলোর পথ দেখান|তাই তার এরূপ সাজ|দেবী কালীর কটি দেশে নর হস্তের মেখলা রয়েছে যা আসলে কর্মশক্তির এবং কর্ম ফলের প্রতীক,এখানে কাটা হাত দিয়ে কর্ম বা কর্মফলকে বোঝানো হয়েছে। মানুষের মৃত্যুর পর জীবাত্মা দেবীর অঙ্গে অঙ্গীভূত হয়ে থাকে, তিনি আবার সমস্ত কর্মের ফলদাত্রী। পরবর্তী জন্মে তাদের কর্মফল অনুসারে আত্না বিভিন্নস্থানে বিভিন্ন গর্ভে জন্মগ্রহণ করে থাকে।সবই দেবীর কৃপা|দেবীর বাহন শিয়াল বলা হলেও আসলে শেয়াল তার সহচর, শিয়াল দেবীকে বাহন করেনা, বা তার বাহন নয়|তন্ত্র শাস্ত্র মতে দেবীর বাহন স্বয়ং মহাদেব|তিনি দেবীকে বহন করে আছেন|দেবী কালী চাইলে সবই সম্ভব|সমস্যা যত বড়োই আসুক|আসন্ন দীপান্বিতা অমাবস্যায় সঠিক ভাবে গ্রহের প্রতিকারের মাধ্যমে সব সমস্যার সমাধান সম্ভব|বিশেষ করে যারা আর্থিক সমস্যায় রয়েছেন, দাম্পত্য জীবনে অশান্তি আছে, শারীরিক সমস্যা আছে, কর্মে বাঁধা আসছে|তারা এই তিথিকে কাজে লাগান|আমি নিজে থাকছি তারাপীঠে|যোগাযোগ করুন|আগামী দিনে কালী তত্ব এবং আরো কালী কথা নিয়ে আপনাদের সামনে আসবো|পড়তে থাকুন|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|