তীর্থক্ষেত্রে পন্ডিতজি – মিনাক্ষী মন্দির

777

আমার দক্ষিণ ভারত ভ্রমণের আজকের গন্তব্য বিখ্যাত মিনাক্ষী মন্দির|বিশ্বের অন্যতম সুন্দর মন্দির মাদুরাইয়ের মিনাক্ষী মন্দির যা শিল্প ও আধ্যাত্মিকতার এক অদ্ভুত মেল বন্ধন|মিনাক্ষী মন্দিরের ইতিহাস বহু প্রাচীন|অনেকে মনে করেনঅনেকে মনে করেন, দেবরাজ ইন্দ্র শিবলিঙ্গ প্রাপ্তির পরই এই মন্দিরটি স্থাপিত হয়েছিল।সবার আগে জানা দরকার কে এই দেবী মিনাক্ষী|দক্ষিণ ভারতের রাজা মলয়দাজা এবং রানী কাঞ্চণমালি অনেকদিন ধরে সন্তানের জন্য ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করছিলেন। ঈশ্বর তাদের এই আকুল প্রার্থনায় সন্তুষ্ট হয়ে সন্তান দান করেন। ঈশ্বরের কৃপায় যজ্ঞের আগুন থেকে এক পরম সুন্দরী কন্যা শিশুর জন্ম হয়। যার নাম রাখা হয় মীনাক্ষী।এই মীনাক্ষীর বিয়ে হয় দেবতা শিবের সঙ্গে। মিনাক্ষী মন্দিরের ইতিহাসের সাথে জড়িত আছে আরেক ঘটনা আলাউদ্দিন খিলজির সেনাপতি মালিক কাফুর দক্ষিণ ভারতের মন্দির গুলি যখন আক্রমন করে সেসময় সে এই মন্দিরটি লুট করে এর মূল স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেয় । এরপর ১৬ সালের দিকে শাসক বিশ্বনাথ নায়াক এই মন্দিরটি আবার পুনঃসংস্কার করে ভক্তদের প্রার্থনার জন্য পুনরায় খুলে দেন।মিনাক্ষী মন্দিরটির স্থাপত্যকলার এক অনন্য নিদর্শন।

মোট ১৫ একর জায়গার ওপর প্রতিষ্ঠিত এই মন্দিরটি সূক্ষ্ম কারুকার্য ও চোখধাঁধানো ভাস্কর্য মুগ্ধ করে দেশে বিদেশের পর্যটক ও তীর্থ যাত্রীদের|শোনা যায় এককালে মাদুরাই শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এই মন্দিরের চূড়া দেখা যেত। এই মন্দিরের সবচেয়ে আকর্ষণীয় অংশ হল আস্থা শক্তি মন্ডপ। এই মন্ডপটি থিরুমালাই নায়াকারের স্ত্রীর নির্দেশে নির্মান করা হয়েছিল।

মন্দিরের প্রবেশ পথেই রয়েছে এই মণ্ডপ|মিনাক্ষী মন্দিরের গায়ে খোদাই করা আছে বহু দেব দেবী ও পৌরাণিক ঘটনা|যদিও এই মন্দির অতুলনীয় তবে কিছুটা মিল রয়েছে কৈলাশে অবস্থিত শিব মন্দিরের সাথে|মিনাক্ষী মন্দিরের বিশালত্ত্ব ও তার সৌন্দর্য ঠিক ভাষায় প্রকাশ করা যায়না|উপলব্ধি করতে হয় এই মন্দিরের আধ্যাত্বিক পরিবেশ ও প্রাচীনত্ব|আমার সৌভাগ্য হয়েছিলো এই অদ্ভুত ও অপার্থিব সৌন্দর্যকে কাছ থেকে দেখার|আপনারাও সময় সুযোগ হলে অবশ্যই দর্শন করুন তীর্থ ক্ষেত্রটি|আবার অন্য কোনো তীর্থস্থান ও তার সাথে জড়িত পৌরাণিক ঘটনা নিয়ে ফিরে আসবো যথা সময়ে|পড়তে থাকুন|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|