আজ প্রথমে আসুন জেনে নিই শিবের মাথায় জল ও বেল পাতা কেনো অর্পণ করা হয়|বিষ্ণু পুরান মতে সমুদ্র মন্থনের পরে বিষ পান করেন মহাদেব, বিষের প্রভাবে শিবজির মস্তক গরম হয়ে যায়, তখন সমস্ত দেবতারা মিলে শিবজির মাথায় জলাভিষেক করেন,এইভাবে শিবজির মস্তকের গরমভাব দূর হয়ে যায় কিন্তু উনার কণ্ঠে তখনও বিষের প্রভাবে তীব্র জলন বাকি ছিল, তো দেবতারা তখন মহাদেবকে বেলপত্র খাওয়ান, কেননা বেলপত্র বিষের প্রভাবকে কম করে দেয়। এই জন্যই শিবলিঙ্গে জলাভিষেক করা হয়ে থাকে ও বেলপত্র অর্পন করা হয়ে থাকে।আসলে অসীম শক্তির আধার শিব লিঙ্গর তেজ কে ঠান্ডা ও নিয়ন্ত্রিত রাখতেই এই নিরন্তর জল অভিষেক ও বেল পত্র অর্পণ|শিব ভূমি তে আজ নাগেশ্বর নিয়ে আলোচনা করবো|এই বিশেষ জ্যোতির্লিঙ্গ টির সঠিক অবস্থান নিয়ে কিছু বিতর্ক বা মতপার্থক্য রয়েছে|যদিও বর্তমানে এই শিব লিঙ্গ ও মন্দির ভারতের গুজরাটের দ্বারকায় অবস্থিত কিন্তু অনেকেই মনে করেন ভারতের উত্তরে, হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত যোগেশ্বর শিব লিঙ্গই আসলে জ্যোতির্লিঙ্গ নাগেশ্বর| এই জ্যোতির্লিঙ্গ সৃষ্টি নিয়ে শিব পুরানে এক সুন্দর পৌরাণিক আখ্যান আছে|এক কালে এই অঞ্চলের শাসক ছিলো দারুক নামে এক অত্যাচারি রাক্ষস|নিজের প্রাধান্য বিস্তারের জন্য সে সবার উপর খুব অত্যাচার করতো|তার রাজ্য বাস করতো সুপ্রিয় নামে এক শিব ভক্ত|একদিন দারুক তাকে বন্দী করে ও অত্যাচার শুরু করে|সুপ্রিয় ভয় না পেয়ে আরাধ্য মহাদেব কে ডাকতে থাকেন|ভক্তর ডাকে সাড়া দিয়ে প্রকট হন মহাদেব ও বধ করেন রাক্ষস দারুককে|এর পর সুপ্রিয়র অনুরোধে এখানেই জ্যোতির্লিঙ্গ রূপে বাস করতে সম্মত হন মহাদেব|এই বিশেষ জ্যোতির্লিঙ্গ নাগেশ্বর রূপে খ্যাত|অর্থ্যাৎ নাগেদের ঈশ্বর|দেবী পার্বতীও এই স্থানে নাগেশ্বরী রূপে বিরাজিতা|সারা বছর অসংখ্য ভক্ত ও দর্শনার্থী ভীড় করেন নাগেশ্বর মন্দিরে|জ্যোতির্লিঙ্গ ও সুন্দর শিব মন্দিরটি দর্শন করে নিজেদের ধন্য করেন|অন্যান্য জ্যোতির্লিঙ্গের ন্যায় শিব রাত্রিতে ও কিছু বিশেষ তিথীতে এখানেও বিশেষ পূজা হয় ও সেই উপলক্ষে ব্যাপক জনসমাগম হয়|দুর দূরান্ত থেকে মানুষ আসেন তাদের মনোস্কামনা নিয়ে|ভক্তদের বিশ্বাস বাবা নাগেশ্বর সকল ভক্তের মনোস্কামনা পূরণ করেন|এই পর্ব এখানেই শেষ করে আজ বিদায় নেবো|দেখা হবে পরের পর্বে, শিব ভূমি চলতে থাকবে সারা চৈত্র মাস ধরে,ভুলবেন না এই মাসের গুরুত্ব কারন এই মাস জ্যোতিষ প্রতিকার গ্রহনের জন্য অতি উত্তম সময়|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|