আজকের পর্বে আলোচনা করবো গোকর্ণের শ্মশান কালী নিয়ে শতাধিক বছর আগে গ্রামে কালীপুজো হত একটিই। গোটা গ্রামের মানুষ স্থানীয় জমিদার হট্টেশ্বর রায়ের বাড়িতে ভিড় করত। এখন সেই জমিদারিও নেই। কিন্তু রায় বাড়ির পুজো ঘিরে গ্রামের আবেগ এখনও একই রকম।প্রাচীন ইতিহাস সমৃদ্ধ কান্দীর গোকর্ণ গ্রাম। শক্তির আরাধনা হয় এই গ্রামের অলিগলিতে। আর প্রাচীন পুজো গুলির মধ্যে অন্যতম বড়রায়,শ্যামরায়ের পুজো। স্থানীয়রা বলেন বড়রায় কালী পুজোর সূচনা কাল নির্দিষ্ট করে বলা যায় না, ধরে নেওয়া হয় আনুমানিক এক হাজার বছরের পুরনো এই পুজো। শায়িত অবস্থায় রয়েছে বড়রায় মন্দিরের বেদি। দেবীর সামনে পুরোহিতদের বসার জন্য পঞ্চমুণ্ডির আসন রয়েছে। দেবীর পেছনে ১০৮ টি প্রদীপ দানের ব্যবস্থাও রয়েছে। কালী পুজোয় সেজে উঠেছে মন্দির।গোকর্ণের অন্যতম শ্যামরায় কালীপুজোর প্রচলন করেন প্রয়াত জমিদার হটেশ্বর রায়। তবে গ্রামের বাইরে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন শ্মশান কালীর। হট্টরায় কালী থেকে ওই বংশেরই এক সাধকের নামানুসারে পরবর্তীতে নাম হয় শ্যামরায় কালী। আগে শ্মশানে মায়ের আসনে রত্নবেদির ওপর পুজো হত। রক্ষনাবেক্ষনের অভাবে নানা রকম অসুবিধা দেখা দেয়। কালী প্রতিমা গ্রামের বাইরে থাকার কারনে পরবর্তীতে হট্টেশ্বর রায়ের বংশধর শ্যামচরণ রায় স্বপ্নাদেশ পেয়ে গোকর্ণের পুকুরপারের শ্মশান বেদী থেকে পাঁচবাড়ি পাড়াতে ওই কালীকে পুনঃ প্রতিষ্ঠা করেন। পঞ্চমুণ্ডি আসনে প্রতিষ্ঠিত এই শ্মশান কালীর পুজো হয় তান্ত্রিক মতে। লোক মুখে প্রচলিত আনুমানিক দুশো বছর আগে এই পুজোর সূচনা।কথিত, গোকর্ণে বহুবছর আগে ‘ঘোষকুঁড়ো’ নামে এক পুকুর ছিল। পুকুরের ধারে গোকর্ণ গ্রামের জমিদার হট্টেশ্বর রায় প্রথম শ্মশানকালীর পুজো শুরু করেছিলেন। তবে দেবীপ্রতিমা গ্রামের বাইরে থাকায় প্রতিমার বেদির রক্ষণাবেক্ষণ ঠিক ভাবে হত না। কথিত আছে, হট্টেশ্বর রায়ের বংশধর শ্যামাচরণ রায় স্বপ্নাদেশ পান, পুকুরের ধার থেকে প্রতিমা জমিদার বাড়িতে অথবা জনবসতিপূর্ণ কোনও স্থানে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। জনশ্রুতি, সেই নির্দেশ পেয়ে শ্যামাচরণ গ্রামের মধ্যে বেদি প্রতিষ্ঠা করেন। চারশো বছরের পুরনো ওই পুজো। বর্তমানে স্থায়ী মন্দিরে পুজো হয়।ফিরে আসবো পরের পর্বে পড়তে থাকুন|