আপনাদের আমার এই পুরুলিয়া ভ্রমণের অভিজ্ঞতা পড়তে ভালো লাগছে জেনে বেশ আনন্দ পাচ্ছি, উৎসাহিত বোধ করছি|প্রথম পর্বে অযোধ্যা পাহাড় নিয়ে বলেছি, এবার ডেস্টিনেশন ছৌনাচ|
পুরুলিয়া বেড়াতে যাবো আর ছৌনাচ দেখবো না বা ছৌনাচ নিয়ে দু চার কথা লিখবো না তা অসম্ভব, গতকাল রাতেই দেখলাম সেই বিখ্যাত ছৌনাচ, এক অদ্ভুত অভিজ্ঞতা|এখানে ছৌনাচ নিয়ে দু চারটে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আপনাদের দিয়ে রাখি|
ছৌ নাচের সাজসজ্জায় প্রধান উপকরণ মুখোশ৷ রংবেরঙের মুখোশ তৈরির জন্য প্রসিদ্ধ পুরুলিয়ার চড়িদা নামে এক অখ্যাত স্থান|মূলত পৌরাণিক কাহিনীর উপর নির্ভর করে তৈরি হওয়া ছৌ নাচের পালায় কখনো সেই মুখোশ হয় দুর্গা-মহিষাসুরের, কখনো বা রাম-লক্ষ্মণ-সীতার অর্থাৎ ওই পৌরাণিক দেব দেবী দের রুপদানে ব্যাবহৃত হয় মুখোশ গুলি|এই বিখ্যাত মুখোশ যে শুধু ছৌনাচ এ সীমাবদ্ধ তানয়, অনেকেই ঘরে সাজিয়ে রাখার জন্যে এই মুখোশ সংগ্রহ করেন|
খোঁজ নিয়ে জানলাম,চড়িদায় শ’-খানেক পরিবার ছৌ মুখোশ তৈরি করে৷ শিল্পীর সংখ্যা ৩০০-র মতো৷ এই ছৌনাচ অতি প্রাচীন শিল্প যা পুরুলিয়া তথা বাংলাকে এনে দিয়েছে আন্তর্জাতিক সন্মান|ছোটনাগপুর মালভূমির অন্ত্যজ শবর সাঁওতালদের একমাত্র বিনোদ ছিলো এই ছৌনাচ তবে বর্তমানে আমাদের মতো শহুরে মানুষ রাও ভাগ বসাচ্ছে এই আনন্দে|এই নির্মল প্রকৃতির বুকে, শহরের কোলাহল থেকে দুরে এই প্রাচীন শিল্প কলা আপনাকে মুহূর্তে নিয়ে যেতে পারে এক প্রাচীন ভারতবর্ষে, সে অভিজ্ঞতা ঠিক লিখে বোঝানো যায়না, অনুভব করতে হয়, এক অদ্ভুত ও রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা হলো আজ|একফাঁকে এখানকার এক গ্রামের কিছু কচিকাঁচা দের সাথেও কিছুটা সময় কাটালাম, যৎসামান্য উপহার তুলে দিলাম তাদের হাতে, তাদের নিষ্পাপ মুখের হাসিও অনেক বড়ো প্রাপ্তি|পরবর্তী গন্তব্য ও তার অভিজ্ঞতাও আপনাদের সাথে ভাগ করে নেবো যথা সময়ে|পড়তে থাকুন|জানাবেন আপনাদের মতামত|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|