দীপান্বিতা অমাবস্যার কর্ম ব্যাস্ততা কাটিয়ে আপাতত কিছুদিনের ছুটি, ওদিকে আবার শীতের আমেজ ও এসেছে, সবমিলিয়ে স্বপরিবারে এবার ভ্রমণের উদ্দেশ্যে পুরুলিয়া যাত্রা, এই যাত্রা পথের কিছু ভালো লাগা, কিছু অভিজ্ঞতা আর অবশ্যই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ভাগ করে নেবো আপনাদের সাথে আরো যা কিছু তথ্য পাবো সেগুলিও তুলে ধরবো সময়ে সময়ে, আজ শুরু করছি পুরুলিয়ার অন্যতম আকর্ষণ অযোধ্যা পাহাড় দিয়ে|বহু প্রাচীন কাল থেকে এই পাহাড় রয়েছে এই স্থানে, রামায়ণ অনুসারে, রাম ও সীতা বনবাসের সময় অযোধ্যা পাহাড়ে এসেছিলেন। এখানে এসে সীতা তৃষ্ণার্ত হয়ে পড়লে রাম নিজের তীরের সাহায্যে মাটি খুঁড়ে জল বের করে আনেন। সেই জায়গাটি সীতাকুণ্ড নামে পরিচিত।
এটিও এখানে একটি দর্শনীয় স্থান|চার পাশে শাল, শিরিষ, মহুয়া, সেগুনে ছাওয়া সবুজ অরণ্যভূমি আর ছোট-বড় পাহাড়ি ঝোরা নিয়ে মনোরম পাহাড়ি পরিবেশ। পাহাড়ের ঢালে আদিবাসী গ্রাম, চাষের ক্ষেত। ট্রেকিংয়ের জন্যই অযোধ্যা পাহাড় বেশি পরিচিত। এর একটা এন্ট্রি পয়েন্ট পূর্ব দিকে সিরকাবাদ, অন্যটি পশ্চিমে বাঘমুন্ডি। দু’টি দিক দিয়েই ট্রেকিং করে পাহাড়ে ওঠা যায়। পাহাড়ে ট্রেকিং করা ছাড়াও ঘুরে নেওয়া যায় ছৌ শিল্পের পিঠস্থান চোড়িদা গ্রাম, চাণ্ডিল ড্যাম, পাখি পাহাড়, সীতা কুণ্ড, টুরগা ফলস প্রভৃতি, এই অরণ্যে বৈশাখ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে স্থানীয় আদিবাসীরা বন্য পশু শিকার উৎসবে যোগ দেয়|এই প্রথা বহু প্রাচীন কাল থেকে চলে আসছে|ভৌগোলিক ভাবে,পুরুলিয়া জেলার ঝাড়খণ্ড সীমান্তে দলমা পাহাড়ের একটি অংশ ও পূর্বঘাট পর্বতমালার একটি সম্প্রসারিত অংশ অযোধ্যা পাহাড়। উচ্চতা প্রায় ২০০০ফুট।
অযোধ্যা পাহাড়ের উচ্চতম শৃঙ্গটি হল গোরগাবুরু। এই অঞ্চলটি ছোটো নাগপুর মালভূমির সবচেয়ে নিচু ধাপ অযোধ্যা পাহাড়,ময়ূর পাহাড় ও আছে, অযোধ্যা পাহাড়ের সবচেয়ে উঁচু টিলা এটি। মায়াবী আলোয় সূর্য ডোবে এখানে। গাড়ি রাস্তা ফেলে হেঁটে খানিকটা উঠলেই একটা ছোট হনুমান মন্দির। নিস্তব্ধ সেই বিকেলের ধার ঘেঁষে টুপ করে ঢলে পড়ে সূর্য। সে এক দেখার মতো দৃশ্য|আগামী দিনে এই ভ্রমণ নিয়ে আরো কিছু তথ্য ও গল্প আপনাদের সাথে ভাগ করে নেয়ার ইচ্ছে রইলো এই লেখা লেখির মাধ্যমে|পড়তে থাকুন এবং জানাবেন কেমন লাগছে|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|