অম্বুবাচী – প্রথম পর্ব

941

আগামী সাতই আষাঢ় অর্থাৎ 22 এ জুন এবছর অম্বুবাচী|আষাঢ় মাসে মৃগশিরা নক্ষত্রের তিনটি পদ শেষ হলে অম্বুবাচী কালের সূচনা হয় হন|শুরুর দিনটি অম্বুবাচী প্রবৃত্তি ও ও শেষের দিনটি হলো অম্বুবাচী নিবৃত্তি|পৃথিবী আমাদের কাছে কোনো জড় বস্তু নয় আমরা আগাগোড়াই প্রথিবী কে এক দেবী বা মাতৃ রূপে দেখি ও পূজা করি তাই স্বাভাবিক ভাবেই এক নারী যেমন সন্তান ধারনের পূর্বে ঋতুমতী হয় ধরিত্রী ও তেমন ফসল উৎপাদনের পূর্বে রজঃস্বলা হয় ও পরবর্তীতে ফসল উৎপাদনের জন্য আরো বেশি উর্বর হয়ে ওঠে|এই সময়ে কৃষকরা কৃষি কাজ থেকে বিরত থাকেন ও ধরিত্রী কে বিশ্রাম দেন|ধরিত্রীর এই ঋতুমতী হওয়াকেই অম্বুবাচী হিসেবে পালন করা হয়|

আমাদের দেশে যেকোনো ধার্মীক ও আধ্যাত্মিক ঘটনাই উৎসবের আকার নেয়,এর প্রধান কারন মানুষের উৎসাহ ও উদ্দীপনা তার সাথে অবশই জড়িয়ে আছে বহু প্রাচীন কিছু রীতি নীতি ও পরম্পরা|অম্বুবাচীও তার ব্যতিক্রম নয়|সারা দেশে নানা স্থানে নানা ভেবে উৎসব ও উদ্দীপনার মাধ্যমে পালন করা হয় অম্বুবাচী, আজ এই ধারাবাহিক লেখনীর তৃতীয় পর্বে আলোচনা করবো সেই সব বর্ণময় উৎসব নিয়ে, জানবো কোথায় কিভাবে পালন হয় অম্বুবাচী|

অম্বুবাচী উপলক্ষে উড়িষ্যায় ভূদেবীর বিশেষ পূজা মেলা ও উৎসবের আয়োজন করা হয় ও ব্যাপক জন সমাগম হয়|ভূদেবী কে উড়িষ্যায় স্বয়ং জগন্নাথ দেবের স্ত্রী হিসেবে কল্পনা করা হয়|এই দেবীর ঋতুমতী হওয়ার সময় কাল কে চারদিনের রজ উৎসব হিসেবে পালন করা হয়|চারদিনের এই উৎসব কে চারটি আলাদা পর্যায় উদযাপন করা হয় প্রথম দিনকে বলা হয় পহিলি রজ। দ্বিতীয় দিন মিথুন সংক্রান্তি| তৃতীয় দিন ভূদহ বা বাসি রজ এবং চতুর্থ দিন বসুমতী স্নান। প্রাচীন কাল থেকে এই চার দিনব্যাপী উত্সব উদযাপিত হয়ে আসছে উড়িষ্যায়|এনিয়ে মেতে ওঠেন রাজ্যবাসী|নারীর ঋতু চক্র কে প্রাকৃতিক নিয়ম হিসেবে মেনে নিয়ে তার প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয় এই উৎসবের মাধ্যমে|

অম্বুবাচী উপলক্ষে গ্রামবাংলার বিধবা মহিলারা তিন দিন ধরে ব্রত রাখেন|দেশ তথা বাংলার প্রায় সব গুলো শক্তি পীঠেই নিষ্ঠার সাথে অম্বুবাচী পালন হয় ও সেই উপলক্ষে বিশেষ উৎসব এবং কোথাও কোথাও মেলার আয়োজন করা হয়|
এই প্রথা চলে আসছে হাজার হাজার বছর ধরে|

অম্বুবাচী সব থেকে বৃহৎ ভাবে এবং জাঁকজমক পূর্ণ ভাবে পালন করা হয় আসামে|দেশের অন্যতম শক্তি পীঠ কামরূপ কামাখ্যায় অম্বুবাচী একটি মহোৎসবের রূপ নেয়|কামাখ্যার অম্বুবাচী পালন নিয়ে আছে অসংখ্য রহস্য, কিংবদন্তি ও গল্প যার সাথে জড়িয়ে আছে সনাতন ধর্মের বহু গূঢ় তত্ত্ব|
সে সব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো তবে আজ নয়,পরের পর্বে|

অম্বুবাচিতে দেবী পুজো হয়না তবে অম্বুবাচী তন্ত্র সাধনার ও শাস্ত্র মতে গ্রহ দোষ খণ্ডনের উপযুক্ত তিথি|এবছর এই তিথিতে আপনাদের মা হৃদয়েশ্বরী সর্বমঙ্গলা মায়ের মন্দিরের হোম যজ্ঞ ও গ্রহ দোষ খণ্ডনের সকল ব্যবস্থা থাকবে|সঙ্গে থাকুন আর অবশই এই বিশেষ সময়ে সঠিক বিধি মেনে,সঠিক জ্যোতিষ পরামর্শ ও প্রতিকারের মাধ্যমে নিজের জীবনের যাবতীয় বাধা বিপত্তিকে দূরে সরিয়ে জীবনে সফল হন,তার জন্য আমি আপনাদের সাথে, আপনাদের পাশে প্রয়োজন মনে করলেই ফোন করুন উপরে দেয়া নাম্বারে বাকিটা আমার ও জ্যোতিষ শাস্ত্রের উপর ছেড়ে দিন আর আস্থা রাখুন ঈশ্বরে|ভালো থাকুন, আনন্দে থাকুন|ধন্যবাদ |