অম্বুবাচী ও মহা পীঠ কামরূপ কামাখ্যা

866

অম্বুবাচী ও পূর্ণিমা মিলিয়ে মিলিয়ে সময় টি আধ্যাত্মিক ও ধর্মীয় দিক থেকে বেশ তাৎপর্য পূর্ন, দীর্ঘ তিরিশ বছরের পেশা দার জ্যোতিষ জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি জীবনের যাবতীয় সমস্যা দুর করে জীবন কে সুন্দর করে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে সঠিক জ্যোতিষ পরামর্শ ও প্রতিকার যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি গুরুত্বপূর্ণ এই সময়কাল বা বিশেষ গ্রহগত সংযোগ, এই সময়কে সঠিক ভাবে কাজে লাগালে অনেক ভালো ফল পাওয়া যায়|তাই জ্যোতিষ শাস্ত্রে যাদের বিশ্বাস আছে, যারা জ্যোতিষ পরামর্শ বা প্রতিকার নেবো নেবো করেও ঠিক নিয়ে উঠতে পারছেন না তারা আর দেরি করবেন না এগিয়ে আসুন, কাজে লাগান এই বিশেষ সময় কে নিজের বাড়িতে বসেই|

আজ জানবো শক্তি পীঠ কামাখ্যা ও তার সাথে জড়িয়ে থাকা অম্বুবাচী সংক্রান্ত নানা প্রথা, কিংবদন্তি ও তার আধ্যাত্মিক ব্যাখ্যা|এই বিশেষ স্থানটি অম্বুবাচী উৎসবের সাথে বিশেষ ভাবে সংযুক্ত তাই একটি গোটা পর্বজুড়ে এর তাৎপর্য জানা প্রয়োজন বলে মনে হয় নাহলে অনেক কথাই হয়তো না বলা থেকে যাবে|

আমার একান্ন পীঠ নিয়ে লেখা পর্ব গুলির মধ্যে একটি পর্বে কামাখ্যা নিয়ে বিশদে আলোচনা করেছিলাম|পুরান মতে দেবী সতীর গৰ্ভ ও যোনি পতিত হয়েছিল এই স্থানে এই কারণে এই দেবীকে অনেকে উর্বরতার দেবী বা রক্ত ক্ষরণ কারী দেবীও বলে থাকেন|তাই স্বাভাবিক ভাবেই অম্বুবাচী যা দেবীর ঋতু মতি হওয়ার উৎসব এই স্থানে সর্বাধিক গুরুত্ব সহকারে পালন হয়|অম্বুবাচীর দিন থেকে পরবর্তী তিন দিন দেবীর মন্দির বন্ধ থাকে|এই সময় দেবীর দর্শন নিষিদ্ধ|এই সময়ে একটি লাল কাপড় দিয়ে দেবী কে ঢেকে রাখা হয়, ভক্তরা মন্দিরের বাইরে থেকে দেবীকে প্রনাম করেন ও নিজের মনোস্কামনা ব্যক্ত করেন|অম্বুবাচীর চতুর্থ দিন থেকে দেবীর স্নান এর পর তার দর্শন ও স্বাভাবিক পূজা প্রক্রিয়া পুনরায় আরম্ভ হয়|এই পরম্পরা অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে যুগ যুগ ধরে পালিত হয়ে আসছে|অম্বুবাচী নিবৃত্তির পর দেবীর রক্ত বস্ত্র ভক্ত দের মধ্যে দান করা হয়, প্রচলিত বিশ্বাস মতে এই রক্ত বস্ত্র লাভ করলে জীবনের অনেক সমস্যা দুর হয় ও বহু মনোস্কামনা পূর্ন হয়|

প্রতি বছর অম্বুবাচী উপলক্ষে আসামের কামাখ্যায় দেশের সর্ব বৃহৎ উৎসবটি আয়োজন করা হয় যা অম্বুবাচী মেলা নামে প্রসিদ্ধ|এই মেলা উপলক্ষে দেশ বিদেশ থেকে বহু তীর্থ যাত্রী এসে জড়ো হন কামাখ্যায় আর আসেন অসংখ্য সন্ন্যাসী ও তন্ত্র সাধক|ব্যাপক জন সমাগম হয় এই মেলায়, দর্শনার্থীর সংখ্যা লক্ষ ছাড়িয়ে যায় প্রতি বছর|এই উৎসব ও মেলা পরিচালনার ভার থাকে ‘মা কামাখ্যা দেবালয়’ এর উপর|

দুক্ষের বিষয় হয়তো ইতিহাসে এই প্রথমবার ধুমধাম করে পালন হবে না এই অম্বুবাচী মেলা কারন করোনা আতঙ্ক এখনো কাটেনি, তাই জারি রয়েছে কিছু নিদ্দিষ্ট বিধি নিষেধ|তবুও মা কামাখ্যার অগনিত ভক্ত দের কাছে এটা একটা বিশেষ সময়,অন্তরে তারা মাকে ডাকবে আর নিজেদের মনোস্কামনা জানবে|আমরা আশা রাখবো আগামী বছর আবার মহা সমারোহে, যাকজমকপূর্ন ভাবে পালিত হবে অম্বুবাচী উৎসব ও মেলা|

আজ এই পর্ব এখানেই শেষ করছি খুব শিগ্রই ফিরে আসছি অন্য লেখা নিয়ে,দেখতে থাকুন আমার টিভির ও ইউটিউব এর অনুষ্ঠান আর যোগাযোগ করুন যেকোনো জ্যোতিষ সংক্রান্ত সমস্যা ও পরামর্শর জন্য, সঠিক জ্যোতিষ পরামর্শ ও প্রতিকার আপনারা জীবন পাল্টে দিতে পারে|অম্বুবাচী উপলক্ষে মা হৃদয়েশ্বরী সর্বমঙ্গলার মন্দিরের বিশেষ হোম যজ্ঞ ও গ্রহ দোষ খণ্ডন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে যোগাযোগ করুন উল্লেখিত নাম্বারে|বিশ্বাস রাখুন, ভালো থাকুন |ধন্যবাদ|