অসুর ও দেবতা,অর্থাৎ শুভশক্তি ও অশুভ শক্তি | এই দুই শক্তির দ্বন্দ্ব চলছে সেই পুরা কাল থেকে |দেবতা দের বলে বলিয়ান হয়ে একের পর এক অসুর আক্রমণ করে বসেছে দেবতাদের কেই |অধিকার করে নিতে চেয়েছে স্বর্গ মর্ত পাতাল | আবার সেই দেবতা দের ই কৌশলে রক্ষা করতে হয়েছে সৃষ্টি কে ভয়ানক সব অসুরদেয় হাত থেকে|এই দেব অসুরের সংঘর্ষ নিয়ে অসংখ গল্প ও ইতিহাস ছড়িয়ে আছে আমাদের পুরান ও অন্যান্য ধর্ম গ্রন্থ গুলিতে, আছে অনেক রহস্যময় ঘটনার উল্লেখ যার কিছু আমি ইতিমধ্যে পৌরাণিক অসুর কাহিনী তে উল্লেখ করছি, আপনারা চাইলে আমার ওয়েবসাইট এ গিয়ে পড়তে পারেন সে সব|আজ বলবো দেবরাজ ইন্দ্র ও তার রহস্যময় অস্ত্রর কথা, জানাবো কিভাবে সেই অস্ত্র সৃষ্টি হলো ও এক ভয়ানক অসুর কে বধ করা হলো সেই অস্ত্র দিয়ে|হিন্দুধর্মে দেবতাদের অনেক ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করতে দেখা যায়, যেমন – আগ্নেয়াস্ত্র, ব্রহ্মাস্ত্র, গরুড়াস্ত্র, কৌমদকী, নারায়ণাস্ত্র, পশুপতাস্ত্র, শিবধনু, সুদর্শন চক্র, ত্রিশূল, বৈষ্ণবাস্ত্র, বরুণাস্ত্র ও বায়বাস্ত্র।যেকোনো যুদ্ধে, যেকোনো প্রতিকূল পরিস্থিতি তে ইন্দ্র এর সাথে সদা থাকে তার বজ্র |এই জাতীয় অস্ত্র আর কোনো দেবতা কে ব্যবহার করতে দেখা যায়না, হয় তো তিনি দেবরাজ তাই |অসীম শক্তিশালী এই অস্ত্র বহু শত্রুর বিনাশ করে একাধিক বার সৃষ্টি রক্ষা করেছে এই বজ্র | যেমন শিবের ত্রিশূল, কালীর খরগ, তেমনি ইন্দ্রের বজ্র যেন একে ওপরের পরিপূরক|অসুর তৃষিরা সুর এর সাথে যুদ্ধে ইন্দ্রের বজ্র ধ্বংস হয় |তার পর কি হয়? সেই ঘটনায় পরে আসছি তবে এখন যে দেবাসুর দ্বন্দ্বর কথা বলবো সেখানে ইন্দ্রের বজ্রর এক বিশেষ ভূমিকা আছে |ইন্দ্র এক বৈদিক দেবতা | সনাতন ধর্মে তিনি আর সকল দেবতা দের রাজা, তিনি স্বর্গের শাসক |তার রাণীর নাম শচীদেবী এবং হাতীর নাম ঐরাবত। তার বাহন পুষ্পক রথ। অনেক বিশেষজ্ঞ আবার মনে করেন মূলত ইন্দ্র কোন বিশেষ দেবতা নন, যিনি স্বর্গের রাজা হন তিনিই ইন্দ্র। ইন্দ্রের বিশেষ অস্ত্র হল বজ্র বা বিদ্যুৎ।ইন্দ্র আদতে একজন বিশেষ পদাধিকারী |এই শুভ ও অশুভের যুদ্ধে ইন্দ্রের প্রতিপক্ষ বৃত্যাসুর,তিনি প্রজাপতি ত্বষ্টার পুত্র এক অসুর। ইন্দ্র ত্রিশিরাকে বধ করলে ত্বষ্টা ত্রুদ্ধ হয়ে ইন্দ্রকে বিনষ্ট করার জন্য অগ্নিতে আহুতি দিয়ে বৃত্রাসুরকে উৎপন্ন করেন। ত্বষ্টার নির্দেশে বৃত্রাসুর গিয়ে ইন্দ্রকে আতর্কিতে গ্রাস করেন। বৃত্রাসুর মুখ হাঁ করলে ইন্দ্র অবশ্য দেহ সংকুচিত করে বেরিয়ে আসতে পারলেন, কিন্তু বহুকাল যুদ্ধ করেও বিত্রাসুরকে পারাজিত করতে পারলেন না।অবশেষে ঋষিরা বৃত্রকে ইন্দ্রের সঙ্গে সন্ধি করার প্রস্তাব দিলে বৃত্র সব শুনে বললেন যে, তিনি তাতে রাজি আছেন। কিন্তু ঋষিদের কথা দিতে হবে যে, শুষ্ক বা আদ্র্র বস্তু দ্বারা, প্রস্তর কাষ্ঠ বা অস্ত্রশস্ত্র দ্বারা, দিবসে বা রাত্রিতে ইন্দ্র অথবা অন্যদেবতারা ওঁকে বধ করতে পারবেন না। ঋষিরা তাতে রাজি হলে সন্ধি স্থাপিত হল।অর্থাৎ দেবতা দের সব অস্ত্র সস্ত্র বৃত্যাসুর কে বধ করার ক্ষমতা হারালো|এদিকে ক্রমে বৃত্যাসুর যখন অত্যাচারি হয়ে উঠতে লাগলো এবং এক সময় তাকে বধ করা ছাড়া আর কোনো উপায় রইলো না, কিন্তু অস্ত্র নেই | তখন ঋষিরা একটা উপায় বাতলালেন | কোনো ত্যাগী এবং তেজময় সন্যাসীর অস্থি থেকে অস্ত্র তৈরী করে বৃত্যাসুর কে বধ করতে হবে |কিন্তু কে করবেন এই ত্যাগ? ত্যাগের জন্য সদা প্রস্তুত সেই বৈদিক ঋষি হলেন দধীচি | দেবতারা দধীচীর কাছে তার অস্থি চাইলেন | এই অনুরোধ শুনে দধীচি নামক এই মহুমুনি সাধক আত্মত্যাগ করতে রাজি হন। দধীচিকে হত্যা করা হয় এবং তার দেহের হাড় দিয়ে বৃত্তাসুরকে হত্যার জন্য ইন্দ্রের জন্য একটি বিশেষ বজ্র তৈরি করা হয়|তার পর ইন্দ্র ও বৃত্তাসুরের মধ্যে ভীষণ যুদ্ধ হলো |অবশেষে সেই বজ্র দিয়ে ইন্দ্র বৃত্যাসুর কে যুদ্ধে পরাজিত করেন এবং হত্যা করেন |ঋষি দের বর অটুট থাকলো এবং অশুভ শক্তির বিনাশ হলো, রক্ষা পেলো স্বর্গ মর্ত পাতাল |ইন্দ্রের বজ্র একদিকে যেমন ত্যাগের প্রতীক অন্যদিকে শৌর্য ও বীর্যের প্রতীক, মহা বিনাশকারী এই অস্ত্র জন্ম নিয়েছে আত্মত্যাগের মাধ্যমে যা রক্ষা করে চলেছে স্বর্গের সিংহাসন|আবার ফিরবো মকর সংক্রান্তিতে বিশেষ আকর্ষণ নিয়ে, পড়তে থাকুন, দেখতে থাকুন আর অবশ্যই যোগাযোগ করুন জ্যোতিষ ও তন্ত্র সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে, আমাকে ফোন করে সরাসরি কথা বলতে পারেন আমার সাথে, জেনে নিতে পারেন কবে, কখন ও কোথায় আমাকে পাবেন, জানতে পারেন বুকিং সংক্রান্ত সব তথ্য|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|