বিপদ তারিণী পুজোর শাস্ত্রীয় তাৎপর্য 

9

বিপদ তারিণী পুজোর শাস্ত্রীয় তাৎপর্য

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

যিনি দুর্গা তিনিই বিপদতারিনী।আষাঢ় মাসের শুক্লা পঞ্চমী তিথিতে বিপদতারিনী পুজো হয়। তিথি অনুসারে আজ বিপদতারিণী পুজো।

 

শাস্ত্র মতে বিপত্তারিণীর ব্রত পালনের অর্থ দেবী দুর্গার আরাধনা করা। দেবী দুর্গা হিন্দুধর্মের দেবী। দেবাদীদেব মহাদেবের অর্ধাঙ্গিনী আদি শক্তি। অন্যান্য দেবী তাঁরই অবতার বা ভিন্ন রূপ। সিংহবাহিনী দেবী দুর্গা কখনও অসুরনাশিনী, আবার কখনও বা মাতৃ রূপিণী। মা বিপত্তারিণী দেবী দুর্গার ১০৮ অবতারের একটি রূপ।

 

বিপত্তারিণী ব্রত পালনের মাধ্যমে দেবী বিপদতারিণীর আরাধনা করা হয়।পুজোর আগের দিন নিরামিষ আহার করতে হয়।

১৩ রকম ফুল, ১৩ রকম ফল, ১৩টি পান, ১৩টি সুপারি এবং ১৩ গাছা লাল সুতোতে ১৩ গাছা দূর্বা সহযোগে ১৩টি গিঁট বেঁধে ডুরি তৈরি করতে হয়। আম্রপল্লব-সহ ঘট স্থাপন করে ব্রাহ্মণ দ্বারা নাম গোত্র সহযোগে পূজা দিতে হয়। পূজার পরে বিপত্তারিণী দেবীর ব্রতকথা শোনা পুজারই অঙ্গ।

পুজোর পর বিপদ তারিণীর নামাঙ্কিত লাল সুতোর ডুরি পুরুষদের ডান এবং মহিলাদের বাম হাতে ধারণ করাই নিয়ম।

 

বিপত্তারিণী ব্রত সাধারাণত মহিলাদের ব্রত। এই ব্রত কমপক্ষে ৩ বছর পালন করা নিয়ম।বিপত্তারিণী ব্রত পালনে মনোবাঞ্ছা পূর্ণ হয়। সাংসারিক বিপদ থেকে রক্ষা করে জীবনে সুখ, শান্তি এবং সমৃদ্ধি দান করেন মা বিপত্তারিণী।

 

গ্রামাঞ্চলে বিপদতারিনী পুজো চারদিন ধরে চলে। প্রথম দিনে দেবীর “আরাধনা” করা হয়। তারপর দুই রাত্রি ধরে রাতে বাংলা লোকগান, ভজন ও কীর্তন চলে। চতুর্থ দিনে বিসর্জন হয়।পুজোর পর বিপদ তারিণীর নামাঙ্কিত লাল সুতোর ডুরি পুরুষদের ডান এবং মহিলাদের বাম হাতে ধারণ করাই নিয়ম।

 

এই পুজোর নিয়ম অনুসারে মা বিপদতারিনী পুজো করা ভক্তরা সুখ ও শান্তি লাভ করে। শাস্ত্রে যেমন মা লক্ষ্মী মাকে ধন সম্পদের দেবী হিসাবে বিবেচনা করা হয়। তেমনি এটা বিশ্বাস করা হয় যে মা বিপদতারিনী উপাসনা করলে তিনি সকলের উপর আশির্বাদ বজায় রাখেন। একই সঙ্গে সমস্ত ঝামেলা, অর্থ সঙ্কট থেকে মুক্তি দেন। ঘরে সুখ এবং সমৃদ্ধি লাভ হয়।

 

সবাইকে মা বিপদ তারিণী পুজোর শুভেচ্ছা।

শাস্ত্র মতে বিপদ তারিণী ব্রত পালন করুন।

ফিরে আসবো আগামী পর্বে অন্য শাস্ত্রীয়

বিষয় নিয়ে। পড়তে থাকুন।

ভালো থাকুন।ধন্যবাদ।