অম্বুবাচীর কিছু বিধি নিষেধ

32

অম্বুবাচীর কিছু বিধি নিষেধ

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

অম্বুবাচী সংক্রান্ত নানা শাস্ত্রীয় বিধি নিষেধ বা নিয়ম কানুন আছে আজকের পর্বে জানাবো এই সব নিয়ম এবং সেগুলির অন্তর্নিহিত তাৎপর্য|

আসলে এই বিশেষ সময় ধরিত্রী যেহেতু ঋতুমতী হয় তাই লৌকিক আচার বা প্রথা গুলিকে সাময়িক ভাবে স্থগিত রাখা হয় এর পেছনে আছে বা বিশ্বাস, শ্রদ্ধা এবং হাজার হাজার বছরের প্রাচীন পরম্পরা সাথে শাস্ত্রীয় বিধান|যদিও চতুর্থ দিন অম্বুবাচির নিভৃতির পর থেকে শুভ কাজে আর কোনো রকম বাধা থাকেনা।

শাস্ত্র মতে অম্বুবাচীর প্রথম তিন দিন কৃষি কাজ ছাড়াও আরো অনেককিছুই করা নিষেধ। এই সময় কোনো শুভ বা মাঙ্গলিক কাজের সূচনা করা হয়না যেমন বিবাহ,অন্নপ্রাসন গৃহ প্রবেশ বা মন্দিরের স্বাভাবিক পূজাঅর্চনা ইত্যাদি|

আদি শক্তির বিভিন্ন রূপকে যারা পূজা করেন অর্থাৎ কালী, চন্ডি, দূর্গা জগদ্ধাত্রী ইত্যাদি তারা দেবীমূর্তি কে একটি লাল কাপড়ে ঢেকে রাখতে পারেন।এই সময় দেবী মূর্তিকে স্পর্শ করা বা মন্ত্রউচ্চারণ করা উচিৎ নয়|গৃহী রা এই সময় কয়েকটি নিয়ম মেনে চললে গৃহের কল্যাণ হয় যেমন নতুন বৃক্ষ রোপন না করা বা দাম্পত্য জীবনে সংযম এবং শুদ্ধতা বজায় রাখা ইত্যাদি।

গ্রাম বাংলার বহু স্থানে নিষ্ঠার সাথে অম্বুবাচী পালন করা হয়|সাধারণত বিধবা মহিলারা অম্বুবাচী চলা কালীন আগুন জ্বালিয়ে খাবার রান্না করেন না|যারা ব্রহ্মচর্য পালন করেন তাদের এই সময় আমিষ খাবার বর্জন করে মূলত ফল মুল খেয়ে থাকতে হয়|এই কটাদিন বেদ পাঠ করা যায়না এবং উপনয়ন অনুষ্ঠান করা যায়না|অম্বুবাচীর আগের দিনটিকে বলা হয় ‘অম্বুবাচী প্রবৃত্তি’। তিন দিনের পরের দিনটিকে বলা হয় ‘অম্বুবাচী নিবৃত্তি’ যার পর আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাওয়ার সূচনা হয় ধীরে ধীরে|

আবার তন্ত্র বা জ্যোতিষ শাস্ত্র মতে অম্বুবাচী নিবৃত্তির সময় তন্ত্র সাধনা এবং শাস্ত্র মতে
গ্রহ দোষ খণ্ডনের উপযুক্ত সময়।

আগামী পর্বে আবার অম্বুবাচি সংক্রান্ত একটি বিশেষ পর্ব নিয়ে আপনাদের সামনে আসবো।
চলতে ধারাবাহিক এই শাস্ত্রীয়
আলোচনা। পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।