ভক্তের ভগবান – শ্রী চৈতন্যদেব এবং জগাই মাধাই

22

ভক্তের ভগবান – শ্রী চৈতন্যদেব এবং জগাই মাধাই

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

যুগাবতার শ্রী চৈতন্যদেবের নাম এলেই আসে জগাই-মাধাইয়ের নাম। চৈতন্য দেবের কৃষ্ণ নাম প্রচারে বাধা দেওয়া জগাই মাধাই পরে কৃষ্ণ নামে বিভোর হয়ে পড়েন।পাপে নিমজ্জিত এই দুই ভক্তকে উদ্ধার করেছিলেন মহাপ্রভু। তার এই লীলা জগাই মাধাই উদ্ধার লীলা নামে প্রসিদ্ধ। আজকের পর্বে ভগবান এবং ভক্তের এই লীলা আপনাদের সামনে তুলে ধরবো।

 

একবার নবদ্বীপ এর পথে নাম হরি নাম প্রচার করছিলেন মহাপ্রভুর দুই সঙ্গী হরিদাস ঠাকুর এবং নিত্যানন্দ প্রভু। সেই সময়ে তারা জগাই মাধাই নামে দুই মহা পাপী এবং ব্যাভিচারির খপ্পরে পড়েন। এই দুই ভাই সমভ্রান্ত পরিবারের হয়েও মদ্যপান, মাংস আহার এবং অবৈধ নারী সঙ্গে ডুবে থাকতো।নিত্যানন্দ প্রভু তাদের উদ্ধার এর জন্য হরি নাম করার অনুরোধ করলেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে মাধাই তার মাথায় ভাঙা কলসির কানা দিয়ে আঘাত করলেন। রক্তাক্ত নিত্যানন্দ প্রভু ক্রোধ না করে তাদের ভগবানের আশ্রয় নিতে বললেন। জগাই তার পা জড়িয়ে ধরে ক্ষমা চাইলেন কিন্তু ততক্ষন এই সংবাদ পৌঁছে গেছে মহাপ্রভুর কাছে। মহা প্রভু ক্রোধের আগুনে জ্বলতে জ্বলতে ছুটে এলেন এই এই দুই পাপীকে স্বাস্তি দিতে চাইলেন। কিন্তু হরিদাস ঠাকুর এবং নিত্যানন্দ প্রভু তাকে মনে করলেন এই কলি কালে পাপীদের উদ্ধার করতেই তার আবির্ভাব হয়েছে। ক্রোধ করা উচিৎ নয়।এতে মহাপ্রভু শান্ত হলেন এবং অনুতপ্ত জগাই এবং মাধাইকে তিনি তার চরণে স্থান দিলেন।পরবর্তীতে জগাই মাধাই হয়ে উঠেছিলেন পরম বৈষ্ণব এবং মহাপ্রভুর একনিষ্ঠ ভক্ত।

 

বিষ্ণুপ্রিয়া দেবীর জন্মভিটা তথা মহাপ্রভুর শশুরবাড়ি কাছেই আছে মাধাইপুর গ্রাম। জানা যায়, মাধাই-এর নাম অনুসারেই এলাকার নাম হয় মাধাইপুর। প্রায় জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে এই জগাই-মাধাই মন্দির। মন্দিরের বর্তমান সেবাইত জানান, জাগাই-মাধাই এর পৈতৃক ভিটা বর্তমানে নদীগর্ভে। এখন যে জায়গায় তাঁদের নিত্যপুজো হয়।

 

আবার এক ভক্ত এবং ভগবানের অলৌকিক লীলা প্রসঙ্গ নিয়ে ফিরে আসবো যথা সময়ে। পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।