ভক্তের ভগবান : জগন্নাথ দেব এবং গণেশ ভট্ট

105

ভক্তের ভগবান

জগন্নাথ দেব এবং গণেশ ভট্ট

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

নানা সময়ে পুরীর জগন্নাথদেবকে নানা বেশে সাজানো হয়।প্রতিটি বেশের আছে আলাদা ব্যাখ্যা এবং আধ্যাত্মিক তাৎপর্য।জগন্নাথদেবের একটি বিখ্যাত বেশ হলো হাতি বেশ বা গজ বেশ |হাতিবেশ রথযাত্রার আগে স্নান যাত্রার সময় দেখা যায় । এই সময়ে গণপতির বেশে জগন্নাথকে সাজানো হয় বলে নাম ‘হাতি বেশ’।এই গজ বেশের নেপথ্য একটি একটি বিশেষ ঘটনা আছে যে ঘটনার প্রধান চরিত্র ভক্ত গণেশ ভট্ট বা গণপতি ভট্ট।আজকের পর্বে এই ভক্ত এবং তার সাথে ভগবানের করা একটি লীলা সম্পর্কে আপনাদের জানাবো।

পন্ডিত গণেশ ভট্ট ছিলেন পুরান এবং বিভিন্ন শাস্ত্রের বিশেষজ্ঞ। তিনি ছিলেন গণপতির উপাষক
তিনি শাস্ত্র পড়ে জানতে পেরে ছিলেনযে পুরীতে ভগবানের বামন অবতার বিরাজমান এবং রথে সেই বামন অবতারকে দর্শন করলে ব্রহ্মজ্ঞান হয়। আত্মার মুক্তি হয়। তিনি পুরীর উদ্দেশ্যে রওনা হলেন।পুরীর পথে তিনি দেখলেন বহু তীর্থ যাত্রী সেই বামন অবতার দর্শন করে আনন্দ করতে করতে ফিরে আসছেন। তার মন ভেঙে গেলো তিনি ভাবলেন যারা জগন্নাথ দর্শন করেছেন তাদের যদি মুক্তি লাভ হয় তবে তারা ফিরে আসে কি করে।তাদের তো পরমব্রহ্মতে বিলীন হয়ে যাওয়ার কথা। তার মনের সন্দেহ দুর করতে জগন্নাথদেব ছদ্মবেশে তাকে দর্শন দিলেন এবং বললেন জগন্নাথ দেব সবার মনোস্কামনা পূর্ণ করেন। এই ভক্তরা বাড়ি ফেরার ইচ্ছে প্রকাশ করেছিল তাই তারা বাড়ি ফিরে যাচ্ছে।

তারপর গণেশ ভট্ট পুরীতে যান কিন্তু জগন্নাথদেব দর্শন করে তিনি সন্তুষ্ট হলেন না। তিনি মনে মনে তার আরাধ্য গণেশের রূপ কল্পনা করেছিলেন। কিন্তু জগন্নাথ দেবের রূপ সম্পূর্ণ ভিন্ন। তার মনের কথা বুঝতে পেরে প্রভু জগন্নাথ পুরীর রাজাকে আদেশ দেন যে তিনি যেনো আরো একবার গণেশ ভট্টকে নিয়ে আসেন।

তারপর পুরীর রাজা তাঁকে জহগন্নাথ দেবের স্নানযাত্রা দেখবার জন্য আহ্বান জানান। রাজার অনুরোধে স্নানযাত্রায় গিয়ে গণেশ ভট্ট আবিষ্কার করেন জগন্নাথ গণেশ রূপেই তাকে দেখা দিয়েছেন।সেই ঘটনার পর থেকেই স্নান যাত্রায় জগন্নাথের বেশ হয় হাতিবেশ।

ভক্তের মনে যদি ভক্তি অটুট থাকে এবং আস্থা থাকে ভগবান তার মনোস্কামনা পূর্ণ করেন। তার জন্য তিনি নিজের রূপ বদলাতেও দ্বিধা করেননা।

ফিরে আসবো আগামী পর্বে আরো ভক্তের কথা নিয়ে। থাকবে আরো একটি অলৌকিক ঘটনার বর্ণনা। পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।