পিতৃ দোষ এবং তার ব্যাখ্যা
পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক
ভাদ্রপদ মাসের শুক্ল পক্ষের পূর্ণিমা তিথি থেকে পিতৃপক্ষের সূচনা ধরা হয় এবং পিতৃ পক্ষ শেষ হয়ে দেবী পক্ষ শুরু হয়। মহালয়ায়।
জ্যোতিষ ও তন্ত্র জগতেও এই প্রিতৃ পক্ষের বিশেষ মাহাত্ম আছে। বিশেষ করে যাদের জন্মছকে পিতৃ দোষ আছে তারা এই সময়ে তন্ত্র মতে গ্রহ দোষ খণ্ডন করালে পিতৃ দোষ থেকে দ্রুত এবং
চিরতরে মুক্তি পাবেন।বিশেষ করে বিয়ের আগে বা পরে পিতৃদোষের প্রতিকার অবশ্যই প্রয়োজন নাহলে বিবাহিত জীবনে সমস্যা আসে।
শাস্ত্র মতে পিতৃপক্ষে তীর্থযাত্রা গিয়ে পূর্বপুরুষদের উদ্দেশে তর্পণ করার রীতির গুরুত্ব অপরিসীম। কারন মনে করা হয় ওই পিতৃ পক্ষ থাকা কালিন
আমাদের পূর্বপুরুষের আত্মা তাদের পরিবারের সদস্যদের আশীর্বাদ দিতে মর্ত্যে আসেন। তাদের আশীর্বাদে জীবনের সব দুঃখ কষ্ট দুর হয়।
পিতৃ দোষের জন্য বা সহজ ভাবে বললে পূর্বপুরুষ দের কৃত কর্ম বা অভিশাপ সবাইকেই ভোগ করতে হয়। শুধু মানুষ নয় ভগবানের অবতাররাও নানা দুঃখ কষ্ট ভোগ করে থাকেন। শ্রী রাম কেও রাজ্য ছেড়ে অরণ্যে দিন কাটাতে হয়েছে। পরশুরামকে যুদ্ধ বিগ্রহে লিপ্ত হতে হয়েছে।শ্রী কৃষ্ণকে বিরহ সহ্য করতে হয়েছে। মহাপ্রভু কে লাঞ্চিত হতে হয়েছে। সবই হয়েছে গ্রহের ফেরে। তাই গ্রহ দোষ খণ্ডন এবং শাস্ত্র মতে প্রতিকারের বিধান সর্বজনগ্রাহ্য।
আগেই বলেছি পূর্ব পুরুষদের পাপ বা তাদের অভিশাপ থেকে সৃষ্টি হয় পিতৃ দোষ যা কয়েক প্রজন্ম পর্যন্ত ভোগাতে পারে।
শাস্ত্রে পিতৃদোষের ৭টি প্রধান কারণ উল্লেখ আছে এবার আসুন জেনে নিই সেগুলি কি কি
১. বাড়ির পিতৃপুরুষ বা বড়রা পারিবারিক পুরোহিত বা ধর্ম পরিবর্তন করে থাকলে।
২. বাড়ির পাশের কোনও মন্দিরে ভাঙচুর হলে বা অশ্বত্থ গাছ কাটা হলে।
৩. পূর্বজন্মে আপনি কোনও পাপ করে থাকলে বা মা-বাবাকে কষ্ট দিলে।
৪. আপনার পূর্বপুরুষরা কোনও পাপ করে থাকলে, যার ফল আপনাকে ভোগ করতে হচ্ছে।
৫. আপনি এমন কোনও পাপকর্মে লিপ্ত আছেন, যার ফলে আপনার পূর্বপুরুষরা আপনার প্রতি রুষ্ঠ হয়ে রয়েছেন।
৬. কিছু ব্যক্তি সব সময় নিজের মা-বাবা বা সন্তানকে দূষতে থাকেন, কষ্ট দেন।
৭. গোরু, কুকুর বা কোনও নির্দোষ জন্তুকে কষ্ট দিলে।
এছাড়াও কয়েকটি গ্রহ গত অবস্থান কেও পিতৃ দোষ হিসেবে দেখা হয় সেগুলি নিয়ে আগামী পর্বে আলোচনা করবো। থাকবে পিতৃ দোষ নিয়ে আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।