কালী কথা – খাদান কালী

111
শিল্প নগরী দুর্গাপুরে রয়েছে এক অদ্ভুত কালী মন্দির যে মন্দিরে কালীমাকে স্থানীয়রা খাদান কালী বলে ডাকেন। আজকের পর্বে জানাবো এই মন্দিরের ইতিহাস। শুরু করবো একটি
অলৌকিক ঘটনা দিয়ে।
সময়টা ষাটের দশক। খাদান অঞ্চলে একটি কয়লা বোঝাই ট্রাক খনিগর্ভে পড়ে যায়। ট্রাকটি তুলতে বড় বড় ক্রেন ব্যবহার করা হয়। কিন্তু যতবারই ট্রাকটি তুলতে যায় ততবারই ক্রেনের শেকল ছিঁড়ে যায়। কলকাতা থেকে লোকজন নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু সব চেষ্টাই ব্যর্থ হয়ে যায়। খনির পাশেই ছিল ঝোঁপজঙ্গলে ঘেরা উঁচু ঢিপিতে মা কালীর এক বেদী। কোলিয়ারির ম্যানেজার ছিলেন বেজায় কালী ভক্ত তিনি সেই কালী মায়ের কাছে মানত করেন ট্রাকটি উদ্ধার করার জন্য। এরপরে নাকি সহজেই ট্রাকটি উদ্ধার করা যায় খাদ থেকে। তখন থেকেই অখ্যাত এই জঙ্গল এলাকায় সেই কালীথান বিখ্যাত হয়ে ওঠে ‘খাদান কালী’ নামে।
খাদান কালীর ইতিহাস আরো প্রাচীন যখন এই এলাকা ছিলো ঝোঁপজঙ্গলে ঘেরা তখন ওই উঁচু ঢিবিতে বেদী তৈরি করে কয়েকশো বছর ধরে স্থানীয় মতিলাল চক্রবর্তীর বংশধরেরা কালী মায়ের পুজো করতেন। অর্থাভাবে প্রতিমা তৈরি xtকরতে পারেননি তাঁরা। তাই খোলা আকাশের নীচে বেদী তৈরি করে ছোট পাথরকে কালী রূপেই পুজো করতেন।
ট্রাক উদ্ধারের কিছুদিন পর মা কালীর স্বপ্নাদেশ পান সেই ম্যানেজার । স্বপ্নে দেবীর মন্দির নির্মাণের আদেশ পান তিনি তবে তাকে বলা হয় সেই মন্দিরে যেন কোনও ছাদ না থাকে। মায়ের স্বপ্নাদেশ মতো মন্দির তৈরির কাজ শুরু করেন তিনি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন স্থানীয়রা।
যথা সময়ে নির্দেশ মতো সেই প্রাচীন ঢিবিকে কেন্দ্র করে তৈরি হয় মন্দির। বেদীর চারদিক সাজানো হয় কলস দিয়ে। তার উপর দেওয়া হয় ত্রিশূল। এখানে দেবীর কোন মূর্তী নেই। পটের মধ্যে শ্যামবর্ণের কালী মূর্তী আঁকা।
আজও খাদান কালী মন্দিরে নিত্য পুজো হয়। অমাবস্যায় বিশেষ পুজো হয়।বহু দূরদূরান্ত থেকেও ভক্তরা আসেন এখানে পুজো দিতে।
ফিরে আসবো পরবর্তী পর্বে।
নতুন কালী কথা নিয়ে। পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন।ধন্যবাদ।