একান্ন পীঠ – হিংলাজ

54
আজ শক্তি পীঠ হিংলাজ নিয়ে লিখবো ।
পীঠ নির্ণয় তন্ত্র মতে একান্ন পীঠের অন্যতম প্রধান পীঠ হিংলাজ অবস্থিত আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র পাকিস্তানে।পাকিস্তানের বালোচিস্তান প্রদেশের লাসবেলা জেলায় হিঙ্গোল নদীর ধারে এই
শক্তি পীঠটি রয়েছে।
পাকিস্তানে হিন্দুরা ছাড়াও মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে দেবীর প্রতি অগাধ শ্রদ্ধা এবং
ভক্তি দেখা যায় তারা দেবী হিংগুলা বা দেবী কোট্টরা কে ‘নানী’ বলে ডাকে। মন্দিরের দেবীর নামেই পুরো গ্রামটির নাম হয়ে গিয়েছে হিংলাজ গ্রাম।
শাস্ত্র মতে এই স্থানে দেবী সতীর ব্রহ্মরন্ধ্রটি পড়েছিল তাই দেবীকে এখানে “কোট্টারী” রূপে পুজো করা হয়। দেবীর ভৈরবকে এখানে “ভীমলোচন” রূপে পূজা করা হয়।
পীঠ নির্ণয় তন্ত্র মতে হিংলাজ পীঠস্থানটি একান্ন পীঠের প্রথম পীঠ। কুলার্ণব তন্ত্র মতানুসারে আঠারোটি পীঠের তৃতীয় পীঠ আবার কুব্জিকা
তন্ত্র গ্রন্থ অনুসারে বিয়াল্লিশটি সিদ্ধপীঠের
পঞ্চম পীঠ এটি।
এক সময়ে অবর্ণনীয় কষ্ট সহ্য করে মরুভুমির মধ্যে দিয়ে উটের পীঠে চেপে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে এই মন্দিরে যেতে হতো। এই কষ্ট সাধ্য যাত্রা নিয়ে একটি সিনেমাও হয়েছে যার নাম মরুতীর্থ হিংলাজ
ওই তীর্থ যাত্রাকে স্থানীয়র বলতো “নানী কি হজ “
শাস্ত্র মতে রাবন কে বধ করে রামের যখন
ব্রহ্ম হত্যার পাপ হয়েছিলো তখন এই হিংলাজ শক্তি পিঠে এসে দেবীকে দর্শন করে সেই পাপ
দূর হয়েছিলো।
দুর্গম অঞ্চলে একটি গুহায় দেবী ও তার ভৈরব অবস্থান করছেন। দীর্ঘ সিঁড়ি অতিক্রম করে সেখানে প্রবেশ করতে হয়। একটি বেদীতে
শিলা রূপে দেবী অধিষ্টান করছেন।
এখানে সিঁদুর দানের রীতি আছে।
বাস্তবে হিংগুলা শব্দের অর্থই সিঁদুর।
বহু ভক্ত এখানে আসেন নিজের মনোস্কামনা নিয়ে এবং বিশ্বাস করেন তাদের সব দুঃখ কষ্ট দূর হবে
দেবীর আশীর্বাদে।
ফিরে আসবো আগামী পর্বে। সাথে থাকবে অন্য একটি শক্তি পীঠের মাহাত্ম এবং
পৌরাণিক ব্যাখ্যা।পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।