কালী কথা – দেবী রাজরাজেশ্বরীর পুজো

106

আসন্ন কৌশিকী অমাবস্যাকে উপলক্ষ করে আবার শুরু করেছি কালী কথা। আজকের পর্বে আলোচনা করবো একদা বাংলা বিহার উড়িষ্যার রাজধানী মুর্শিদাবাদের প্রসিদ্ধ রাজরাজেশ্বরী দেবীর পুজো নিয়ে।অতীতে এই পুজো ছিলো মূলত লালগোলা রাজবাড়ির পুজো।দেবী কালী এখানে রাজ রাজেশ্বরী নামে খ্যাত।রাজরাজেশ্বরী কালী পুজোর শুরু ঠিক কবে হয়েছিল, সে নিয়ে কোনও স্পষ্ট ধারণা নেই। তবে, কথিত রয়েছে এই পুজো প্রায় সাড়ে তিনশো বছর পুরনো।শোনা যায় এই কালীপুজোর শুরু করেছিলেনপ্রবল প্রতাপশালী জমিদার রাম শঙ্কর রায়। তিনি একদিন স্বপ্নদেশ পান, লালগোলার কলকলির চরে দেবী রাজরাজেশ্বরী অবস্থান করছেন এবং তাকে দেবীকে রাজবাড়ী এনে সেখানে প্রতিষ্ঠা করে পুজো করতে হবে।তারপর জমিদার রাম শঙ্কর রায় রাজপুরোহিতকে সঙ্গে নিয়ে দেবীকে উদ্ধার করে এনে রাজপ্রাসাদের সামনে পাকা দালানবাড়ি তৈরি করে সেখানে প্রতিষ্ঠা করেন তারপর থেকে শুরু হয় পুজো যা আজও চলছে।মুর্শিদাবাদের ঐতিহাসিক এই পুজোর সাথে জড়িত আছে সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিম চন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এর নাম। আনুমানিক প্রায় তিন মাস তিনি লালগোলা রাজ বাড়িতে ছিলেন। কারণ লালগোলার রাজা যোগীন্দ্রনারায়ণ রায়ের সঙ্গে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের একটা ভালো সম্পর্ক ছিল। এ ছাড়াও বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, লালগোলা রাজবাড়ির কালী মন্দিরের সঙ্গে কাজি নজরুল ইসলামের সম্পর্ক ছিল।যদিও সেই সম্পর্কে কোনো নিদ্দিষ্ট তথ্য প্রমান পাওয়া যায়নি।প্রথাগত কালী মূর্তি থেকে রাজরাজেশ্বরী কালি মুর্তি কিছুটা আলাদা। এখানে কালী মূর্তির পাশে রয়েছে লক্ষ্মী, সরস্বতী। শিবের ওপর এক পা দিয়ে ও এক পা তুলে নৃত্য রত অবস্থায় রয়েছে কালী। জমিদারি আমল থেকেই কালীপুজোয় অন্ন ভোগ দেওয়া হয় সঙ্গে পুরনো রীতি মেনে ইলিশ মাছের ভোগও দেওয়া হয়।পুজো তন্ত্র মতে হয়। বলী প্রথা আছে তবে তা বেশ অভিনব।পাঁঠাকে উৎসর্গ করে ছেড়ে দেওয়া হয়।ধারাবাহিক ভাবে চলবে কালী কথা। থাকবে এমনই সব কালী মন্দির এবং ঐতিহ্যপূর্ণবাংলার কালী পূজোর ইতিহাস।পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।