দেবী অন্নপূর্ণার রূপ ও পূজা পদ্ধতি

285

আগামী ২৯ মার্চ অন্নপূর্ণা পূজা|আজকের এই বিশেষ পর্বে দেবী অন্নপূর্ণার রূপ ও তার পূজা পদ্ধতি নিয়ে লিখবো ।শাস্ত্র মতে দেবী অন্নপূর্ণা মূলত দ্বিভূজা আবার চতুর্ভূজা রূপেও কোথাও কোথাও তার পুজো দেবীর গায়ের রঙ উজ্জ্বল গৌর বর্ণ। দেবীর বামহাতে সোনার অন্নপাত্র। ডানহাতে চামচ বা হাতা।মাথায় বিরাজিত অর্ধচন্দ্র। তিনি ক্ষুধার্ত মহাদেবকে অন্নদান করছেন স্মিতহাস্যে তার এক পাশে শ্রী ও অন্য পাশে ভূমি|সনাতন ধর্মে দেবী অন্নপূর্ণার আধ্যাত্মিক তাৎপর্য অপরিসীম|অন্নদামঙ্গল কাব্য রচিত হয়েছে দেবীর মহিমা কীর্তন করে। আবার প্রাচীন তন্ত্রসার গ্রন্থে দেবীর পূজা পদ্ধতি রয়েছে।দেবী অন্নপূর্ণা সম্পর্কে অনেকে মনে করেন যে তিনি গ্রিক ও রোমান দেবী ‘অন্নোনা’র রূপান্তর। প্রাচীন রোমান সাম্রাজ্যর ধ্বংসাবশেষ থেকে দেবীর যে মূর্তি পাওয়া যায় তাতে তার বামহাতে শিঙ্গা আর ডানহাতে তুলাদণ্ড।যদিও এই মতবাদ যুক্তি গ্রাহ্য নয় কারন। দেবী অন্ন পূর্ণা হাজার হাজার বছর থেকে সনাতন ধর্মে পূজিতা হয়ে আসছেন। তিনি শস্যর দেবী রূপে প্রাচীন হরপ্পা সভ্যতায় পূজিতা ছিলেন।বাংলায় তিনি লৌকিক দেবী। ভালো ফসল পাওয়ার জন্য এবং সংসারে স্বচ্ছলতা প্রার্থনা করে বঙ্গদেশে সাধারণ মানুষ অন্নপূর্ণার পুজো করেন অগ্রহায়ণ মাসের নবান্নের সময়। এটি প্রাচীন পুজো যা পরবর্তীকালে কাশীতে অনুপ্রবেশ করেছিল প্রবাসী বাঙালিদের হাত ধরেই।তীর্থ ক্ষেত্র কাশীতে দেবী অন্নপূর্ণার বিখ্যাত মন্দির রয়েছে। সেখানে প্রতি বছর ধুমধাম করে অন্নপূর্ণা পুজো হয়ে থাকে। এই মন্দিরে অন্নকূট উত্‍সব বিখ্যাত।তিথি মেনে চৈত্র মাসের শুক্লাপঞ্চমী তিথিতে অন্নপুর্ণার পুজা করা হয়। কালী ও জগদ্ধাত্রী পুজোর মতই তান্ত্রিক মতে এই পুজো হয়ে থাকে।সাদা কাপড়ের বেদিতে দেবীকে স্থাপন করা উচিৎ এবং সাদা পোশাক পরে পুজোয় বসতে হয় ।দেবী এতে প্রীত হন বলে মনে করা হয়।দেবী অন্নপূর্ণাকে প্রনাম জানিয়ে আজকের পর্ব শেষ করলাম। দেবী অন্নপূর্ণা প্রসঙ্গে আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও ব্যাখ্যা আপনাদের জানাবো আগামী পর্ব গুলিতে। পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।