মন্দির রহস্য – যে মন্দিরে আছে গণেশের মাথা

166

সিদ্ধিদাতা গণেশের জন্ম, তার বিবাহ ও শিরোচ্ছেদ নিয়ে আগে আলোচনা করেছি কিন্তু আজ বলবো তার জীবনের সব থেকে রহস্যময় দিক নিয়ে|তার মাথা ধর থেকে আলাদা হওয়ায় পরে কোথায় গেলো তা সত্যি এক রহস্য|আদি বিনায়ক মন্দিরে গণেশের যে আদি রূপ আছেসেই রূপে তার যে মাথা আমরা দেখতে পাই মাথা নাকি এই মর্তেরই এক মন্দিরে আছে|সে বিষয়ে লেখার আগে আসুন দেখে নিই এনিয়ে শাস্ত্রে কি বলা আছে|পার্বতীর ইচ্ছায় জন্ম হয়েছিল গণেশের। এরপর পার্বতী গনেশকে কৈলাসের দ্বার পাল হিসেবে নিযুক্ত করেন। গণেশ শিবকে কৈলাসে ঢুকতে বাধা দেন। একে অপরের পরিচয় না জেনেই যুদ্ধ শুরু হয়। আর শিব গণেশের মাথা কেটে দেন। এরপর পার্বতীকে শান্ত করতে তিনি হাতির মুন্ড গণেশের ধড়ে স্থাপন করেন‌।শিব পুরাণ পড়লে জানা যায় মস্তক ছিন্ন করার পরে তা অপ্সরাগণ নিয়েছিলেন কিন্তু তারপর তা কোথায় গেল তার শিব পুরাণে বলা নেই।আবার”ব্রহ্মবৈবর্তপুরাণের” ‘গণপতি খন্ডে’ উল্লেখ আছে গণেশের মুন্ড গোলকধাম এ চলে যায় শ্রী হরির কাছে। আর শ্রী হরির দেহের সঙ্গে সেই মস্তক মিশে যায়। গনপতি শ্রী হরির আরেক অংশ। তাই শ্রী হরির এই তেজ অর্থাৎ গণেশের কাটা মুন্ডু শ্রী হরির শরীরেই মিশে গেল।তারপর গণেশের শরীরে হাতির মুন্ড স্থাপন হলো। তবে লৌকিক মতে গণেশের কেটে যাওয়া মনুষ্য মুণ্ডটি কোথায় তা নিয়ে আছে একটি আলাদা ব্যাখ্যা আছে|প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী ভারতের উত্তরাখণ্ডের পাতাল ভুবনেশ্বর মন্দিরে আছে গণেশের কেটে যাওয়া মুন্ড আর সেই মুন্ড স্বয়ং পাহারা দিচ্ছেন দেবাদিদেব মহাদেব।উত্তরাখণ্ডের পিথোরাগড় থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে ভূবণেশ্বর গ্রাম‌। এই ভুবনেশ্বর মন্দিরের ভূগর্ভে একাধিক গুহা রয়েছে। আর এই একাধিক গুহা গুলি একটি জায়গায় গিয়ে মিলিত হয়েছে।জনশ্রুতি অনুযায়ী এই সকল গুহার মিলনস্থলে যে উঁচু পাথরের ঢিবিটি রয়েছে সেটি গণেশের মনুষ্য মুন্ড।বলা হয় এই মন্দিরে একজন মানুষ একবারই প্রবেশ করতে পারেন। তাই কোন মানুষ যদি এই মন্দিরের শ্রী গণেশের চ্ছেদ করা মুন্ড রাখার মূল স্থলে না গিয়ে মাঝপথ থেকে ফিরে আসেন তাকে আর ওই মন্দিরে নিয়ে যাওয়া হয় না।আবার এমনটাও বলা হয় যে এই মন্দিরের গুহার দেওয়াল ধরে হাঁটলে পূণ্য অর্জন হয়। এই মন্দিরের গুহার দেওয়াল ধরে হাঁটলে দুঃখ-দুর্দশা দূর হয়‌। সরযু, রামগঙ্গা ও গুপ্তগঙ্গার মিলনস্থলে গড়ে উঠেছে এই মন্দির। এই মন্দির প্রদক্ষিণ করলে পাপ ক্ষয় হয়। শুদ্ধ মনে ভক্তি সহকারে এই মন্দির দর্শন করলে গণেশের কৃপায় সকল বিঘ্ন কেটে যায় বলেও অনেকে বিশ্বাস করেন|বাকি আছে অনেক রহস্যময় মন্দিরের কথাপরের পর্বে আবার এমনই কোনো রহস্যময় মন্দিরের কথা নিয়ে ফিরে আসবো|পড়তে থাকুন|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|