আগমেস্বরী কালীমন্দিরের রহস্য

219

তন্ত্র সাধক কৃষ্ণানন্দআগম বাগীশের কথা আপনাদের আগে জানিয়েছি আজ মন্দির রহস্য পর্বে তার পারিবারিক পুজোর কথা লিখবো যা আগমেস্বরী কালী নামে প্রসিদ্ধ|কথিত আছে, প্রায় ৫০০ বছর পূর্বে মাতৃ সাধক কথা দক্ষিণাকালী মাতৃমূর্তির রূপকার মাতৃ সাধক আগমবাগীশ সর্বপ্রথম দক্ষিণা কালী মায়ের এই পূজা শুরু করেছিলেন।পন্ডিত কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশ প্রথম আগমেশ্বরীর পূজা শুরু করেন। তিনি ছিলেন নবদ্বীপের বাসিন্দা। ধ্যানযোগে আরাধ্যা দেবীর রূপ দেখেছিলেন তিনি৷ স্বপ্নে তাঁকে দেখা দিয়ে মা বলেছিলেন, “আগামীকাল প্রত্যুষে তুই সবার আগে যাকে দেখতে পাবি, সেই তোর আরাধ্যা।” পরেরদিন চোখ মেলে কৃষ্ণানন্দ দেখেন, কালো এক কন্যা একহাতে গোবর নিয়ে অন্য হাতে ঘুটে দিচ্ছে দেওয়ালে। কৃষ্ণানন্দকে দেখে উনি লজ্জায় জিভ কেটে ফেললেন। এই রূপকেই তিনি তাঁর আরাধ্যা করেন। এই বাংলায় সেই প্রথম দক্ষিণা কালীর মূর্তি তৈরি হয়।আগমবাগীশের নামানুসারে তাঁর পূজিত কালী পরে ‘আগমেশ্বরী’ নামে প্রতিষ্ঠিত হন।বর্তমানে যেসব দক্ষিণাকালী আমরা দেখি তারই আদি ও প্রাচীন প্রথম রূপ এই কৃষ্ণানন্দ কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত দেবীর মূর্তি।তার সেই বিখ্যাত কালী মূর্তি প্রতি কালীপুজোর তিথিতে সেজে ওঠে বিশেষ সাজে সারাদিন ব্যাপী অনুষ্ঠান থাকে এবং পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন এলাকা থেকে লক্ষ লক্ষ মানুষ উপস্থিত হন পুজো মণ্ডপে।পরবর্তীকালে কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশের প্রপুত্র সার্বভৌম আগমবাগীশ শান্তিপুরে মূর্তি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশ রচিত ‘বৃহৎ তন্ত্রসার’ গ্রন্থে বর্ণিত রয়েছে তান্ত্রিকের নির্দিষ্ট পূজা বিধি। সেই বিধি মেনেই হয় দেবীর পুজো|প্রতি বছর পুজোর আগের দিন থেকে প্রতিমার গায়ে খড়িমাটি করা হয় ও পুজোর দিন সকাল থেকে রঙের কাজ শুরু হয়৷ একদম শেষে হয় চক্ষুদান৷ পুজো শুরুর মুহূর্তে সোনা ও রুপোর অলংকারে সাজিয়ে তোলা হয় প্রতিমাকে তারপই শুরু হয় পুজো|ফিরবো আগামী পর্বে|আলোচনা করবো অন্য কোনো রহস্যময় মন্দির ও তার সাথে জড়িত নানা অলৌকিক ও পৌরাণিক ঘটনা নিয়ে |পড়তে থাকুন|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|