কিছুদিন আগেই আমরা হনুমান জয়ন্তী পালন করলাম, হনুমান সংক্রান্ত অনেক পৌরাণিক ঘটনাআমি ইতিমধ্যে বলেছি, আজ এই বিশেষ পর্বে জানাবো হনুমানজির পঞ্চমুখী রূপের ব্যাখ্যা ও এই রূপ ধারণের কারন|
কেনো বজরংবলী কে পঞ্চ মুখী রূপে অবতীর্ন হতে হয়েছিলো তার উত্তর রামায়নেই রয়েছে, রামায়ণ অনুসারে, প্রভু শ্রীরাম এবং রাবণের যুদ্ধ চলাকালীন পরাজয় এড়াতে রাবণ তাঁর ভাই অহিরওয়ানের কাছে সাহায্য চেয়েছিলেন, ওহিরাবন ছিলেন পাতালের রাজা। রাবণের ভাই অহিরওয়ান তার মায়ার মধ্য দিয়ে প্রভু শ্রীরামের সেনাকে ঘুমের মধ্যে ফেলে রাম-লক্ষ্মণকে বন্দী করে করে পাতালে নিয়ে যান।
হনুমান জি রাম ও লক্ষণকে উদ্ধার করতে পাতাল লোকে যাওয়ার পরে সম্মুখীন হন মকরধজ নামে এক যোদ্ধার তাকে পরাজিত করে পাতালের অভ্যন্তরে গিয়ে হনুমান দেখলেন সেখানে পাঁচটি মোবাতির পাঁচটি শিখা জ্বলছে এই গুলোই অহিরাবনের শক্তির উৎস|এই সময় হনুমান পঞ্চমুখী রূপে অবতীর্ন হন|
পঞ্চমুখ অবতারে হনুমান তার পাঁচটি মুখ দিয়ে একসাথে সেই পাঁচটি মোমবাতি নেভান ও পরে রাবণের ভাই অহিরাভানকে যুদ্ধে পরাজিত ও হত্যা করেছিলেন এবং ভগবান শ্রী রাম ও লক্ষ্মণকে মুক্তি দিয়েছিলেন।এই হলো পঞ্চমুখী রূপে অবতীর্ন হওয়ার কারন|ভারতীয় জ্যোতিষ শাস্ত্র, বাস্তু শাস্ত্র এবং আধ্যাত্মিক জগতে হনুমানের এই রূপের গুরুত্ব অপরিসীম|পাঁচটি মুখের রয়েছে নিদ্দিষ্ট নাম ও ব্যাখ্যা|
প্রথম মুখটির নাম শ্রী হনুমান –
এই মুখের তাৎপর্য হ’ল এই মুখটি পাপের সমস্ত দাগ দূর করে এবং মনের বিশুদ্ধতা দেয়।
দ্বিতীয় মুখটির নাম নরসিংহ –
এই মুখের তাৎপর্য হ’ল এই মুখটি শত্রুদের ভয়কে সরিয়ে দেয় এবং বিজয় দেয়। নরসিমা হলেন ভগবান বিষ্ণুর সিংহ-মানুষ অবতার, যিনি তাঁর ভক্ত প্রহ্লাদকে তাঁর দুষ্ট পিতা হিরণ্যকশিপু থেকে রক্ষা করার জন্য এই রূপ নিয়েছিলেন।
তৃতীয় মুখটির নাম গরুড় –
এই মুখের তাৎপর্য হলো এই মুখটি অশুভ শক্তি, নেতিবাচক প্রভাব দূরে সরিয়ে দেয় এবং শরীরের সমস্ত বিষাক্ত প্রভাব দূর করে। গরুড় হলেন ভগবান বিষ্ণুর বাহন।
চতুর্থ মুখটির নাম বরাহ –
এই মুখ ও বিষ্ণুর একটি অবতার অনুসারে সৃষ্ট এই মুখটি সুখ ও সমৃদ্ধি দান করে এবং মনকে শান্ত রাখে|
পঞ্চম মুখটি হয়গ্রিব –
এই মুখটি ঘোড়ার আকৃতি বিশিষ্ট |এই মুখে শক্তি ও জ্ঞান দান করে ও আধ্যাত্মিক উন্নতি ঘটায় |
রূদ্র অবতার হনুমান কল্যানের দেবতা হিসাবে বিবেচিত হন।শাস্ত্র মতে পঞ্চমুখী হনুমানজি তাঁর ভক্তদের সমস্ত দুর্ভোগকে নষ্ট করে দেন এবং নিয়মিত তার আরাধনা অপার ঐশ্বর্য ও সমৃদ্ধি প্রদান করে|পবন পুত্র হনুমানকে প্রনাম জানিয়ে শেষ করছি আজকের এই পর্ব| পড়তে থাকুন আগামী দিনে আরো অনেক এমন তথ্য সমৃদ্ধ লেখা ও অভিনব বিষয় নিয়ে আমি আপনাদের সামনে আসবো|যারা অনলাইন আমার কাছে জ্যোতিষ পরামর্শ চান বা অফলাইনে সাক্ষাৎ চান কমেন্ট বা মেসেজ না করে অনুগ্রহ করে উল্লেখিত নাম্বারে যোগাযোগ করুন|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|