ভারতের সাধক – স্বামী প্রনবানন্দ স্বরস্বতী

819

সম্প্রতি আরো একটি নতুন সংযোজন হলো আমার আধ্যাত্মিক কর্মকাণ্ডে|বিগত মহালয়ার পবিত্র তিথিতে প্রকাশ্যে এলো আপনাদের সর্বমঙ্গলা মায়ের মন্দিরের ওয়েবসাইট|এবার থেকে এই ওয়েবসাইট এর মাধ্যমেও আপনারা যুক্ত হতে পারবেন মন্দিরের সকল কর্ম সুচির সাথে, পাবেন সব তথ্য সবার আগে|থাকবে আরো অনেক চমক|সে নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো একটি বিশেষ পর্বে, জানাবো সবকিছু, আগামী রবিবার|চোখ রাখুন আমার ফেসবুক প্রোফাইলে|সব জানতে পারবেন|আপাতত আজ ভারতের সাধক শীর্ষক ধারাবাহিক লেখনীতে আলোচনা করবো দেশের অন্যতম বিখ্যাত ও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধ যোগী পুরুষ স্বামী প্রনবানন্দ সরস্বতী কে নিয়ে|জানবো তার জীবন কাহিনী ও আধ্যাত্মিক কর্মকান্ড|

১৮৯৬ সালে ২৯ জানুয়ারি একে মাঘী পূর্ণিমার দিন তৎকালীন অবিভক্ত বাংলার মাদারীপুরে অত্যান্ত সাধারন এক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন বালক প্রনবানন্দ|পিতার নাম বিষ্ণুচরন ভূইঞা ও মাতা ও মাতা সারদা দেবী|কথিত আছে স্বয়ং বাবা মহাদেবের বরপুত্র ছিলেন প্রনবানন্দ|বাল্যকালে তার নাম ছিলো বিনোদ|ছোটো বেলা থেকেই ঈশ্বর চিন্তা ও আধ্যাত্মিকতায় গভীর আকর্ষণ ছিলো তার|মাত্র সতেরো বছর বয়সে স্বামী গম্ভীরনাথ এর কাছে দীক্ষা নেন তিনি|মাত্র ২০ বৎসর বয়সে সাধনায় সিদ্ধিলাভ করেন এবং ১৯২৪ সালে প্রয়াগে অর্দ্ধকুম্ভমেলায় স্বামী গোবিন্দানন্দ গিরির নিকট আনুষ্ঠানিক সন্ন্যাস গ্রহণ করেন ও হয়ে যান
স্বামী প্রনবানন্দ|

নানা দিক থেকে বর্ণময় ও তাৎপর্যপুর্ন ছিলো স্বামী প্রনবানন্দর আধ্যাত্মিক জীবন|একাধারে তিনি ছিলেন সন্যাসী, সমাজ সংস্কারক এবং স্বাধীনতার যুদ্ধে অংশ গ্রহণকারী এক বীর সন্ন্যাসী|একজন বিপ্লবী দলের সক্রিয় সদস্য হিসেবে 1914 সাল গ্রেপ্তার ও হয়ে ছিলেন স্বামী প্রনবানন্দ|সারা জীবন তিনি একাধিক প্রাচীন তীর্থ ক্ষেত্র সংস্কার করার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন|তবে স্বামী প্রনবানন্দর সর্ব শ্রেষ্ঠ অবদান অবশ্যই ভারত সেবাশ্রম তৈরি|তিনি ভারত সেবাশ্রম সংঘ প্রতিষ্ঠা করেন 1917 সালে|বিশ্ব জুড়ে সমাজ সংস্কার, সেবা মূলক কর্ম সূচি ও সনাতন ধর্মের প্রচারে ভারত সেবাশ্রম আজ এক অতি পরিচিত নাম|

সারাটা জীবন ধরে স্বামী প্রনবানন্দ সক্রিয় ছিলেন দেশের হিন্দু সমাজকে ঐক্য বদ্ধ করতে এবং সংকীর্ণ জাতপাতের বেড়া জাল থেকে সনাতন ধর্ম ও সংস্কৃতিকে রক্ষা করতে|তিনি সকল রকম ধর্মীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ছিলেন|তিনি ব্যক্তি চরিত্র নির্মাণ, আদর্শ পরিবার গঠন যথাযত শিক্ষা ইত্যাদিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিতেন|তিনি বলেছিলেন – হিন্দুদের মধ্যে ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, চণ্ডাল আদির কোন ভেদ নেই|অর্থাৎ সব হিন্দু সমান, সবার সমান অধিকার এবং সবাইকে সমান চোখে দেখতে হবে|সনাতন ঐক্য ও বৈদিক সংস্কৃতি রক্ষার উদ্দেশ্যে তিনি হিন্দু মিলন মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন যা নানা রকম জন কল্যাণ মূলক কাজে নিয়োজিত ছিলো|

স্বামী প্রণবানন্দর জীবন এক আদর্শ স্বরূপ|নিজেকে সম্পূর্ণ রূপে তিনি উৎসর্গ করে ছিলেন দেশ সেবায় ও সনাতন ধর্ম রক্ষার কাজে|আজও তিনি ঘরে ঘরে পূজিত হন এক আদর্শ গুরু ও এক অন্যতম শ্রেষ্ঠ সাধক হিসেবে|১৯৪১ সালে ৮ জানুয়ারি মাত্র ৪৫ বৎসর বয়সে তিনি দেহ ত্যাগ করেন|কিন্ত তিনি অমরত্ব লাভ করেছেন তার ত্যাগ, জন সেবা ও আদর্শের মাধ্যমে|.

এই মহান সাধক কে প্রনাম জানিয়ে আজকের পর্ব
এখানেই শেষ করছি|যুক্ত হন হৃদয়েশ্বরী মা সর্ব মঙ্গলা মায়ের মন্দির ও প্রতিটি আধ্যাত্মিক কর্মসূচির সাথে, দেখতে থাকুন আমার সব অনুষ্ঠান ও অবশ্যই চোখ রাখুন মা সর্বমঙ্গলার ওয়েবসাইটে|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|