বাংলায় জগদ্ধাত্রী পুজোর ইতিহাস

13

বাংলায় জগদ্ধাত্রী পুজোর ইতিহাস

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

দুর্গা পুজো, লক্ষী পুজো এবং সর্বপরি কালী পুজোর পর বঙ্গবাসি জগদ্ধাত্রী রূপে মা আদ্যা শক্তির আরাধনা করে। জগদ্ধাত্রী পুজোর শাস্ত্রীয় এবং ঐতিহাসিক গুরুত্ব অপরিসীম।

 

জগদ্ধাত্রী পূজার ইতিহাস বেশ প্রাচীন এবং পৌরানিক দৃষ্টি কোন থেকে বেশ তাৎপর্য পূর্ন তবে আজ বাংলার জগদ্ধাত্রী পুজোর ইতিহাস নিয়ে লিখবো।

 

নদীয়া জেলার সদর কৃষ্ণনগরে জগদ্ধাত্রী পূজার সূচনা করেন রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায়। কিংবদন্তী অনুসারে নবাব আলীবর্দী তার রাজত্বকালে রাজা কৃষ্ণচন্দ্রর কাছ থেকে বারো লক্ষ টাকা নজরানা দাবি করেন।টাকা না দেয়ায় নবাব রাজা কৃষ্ণচন্দ্রকে মুর্শিদাবাদ এ নিয়ে যান এবং কিছুদিন বন্দী করে রাখেন।তারপর মুক্তির পর নদীপথে যখন কৃষ্ণনগরে রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায় নিজের রাজ্যে প্রত্যাবর্তন করেন সেই সময় ঘাটে বিজয়া দশমীর বিসর্জনের বাজনা শুনে তিনি বুঝতে পারেন যে তিনি দুর্গাপূজার সময় অতিক্রম করে এসেছেন। এবছর তিনি দুর্গাপুজো দেখতে পেলেন না, দূর্গা পূজার আয়োজন করতে না পেরে অত্যন্ত দুঃখিত হয়েছিলেন।সেই রাতে দেবী দুর্গা জগদ্ধাত্রী রূপে রাজাকে স্বপ্নে দেখা দেন এবং পরবর্তী শুক্লা নবমী তিথিতে জগদ্ধাত্রী দুর্গার পূজা করার আদেশ দেন সেই মত কৃষ্ণনগরে রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায় জগদ্ধাত্রী পূজার সূচনা করেন।

 

প্রথমে রাজ পরিবারের পরবর্তীতে বনেদি বাড়িগুলিতে শুরু হওয়া জগদ্ধাত্রী ধীরে ধীরে বাংলায় বারোয়ারী পুজোর রূপ নেয় এবং বর্তমানে বাংলার বিভিন্ন স্থানে এবং বিশেষ করে হুগলীর চন্দননগরে জগদ্ধাত্রী পুজো ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।

 

জগদ্ধাত্রী পুজো উপলক্ষে আগামী পর্ব গুলিতে দেবী জগদ্ধাত্রী সংক্রান্ত পৌরাণিক ঘটনা এবং শাস্ত্রীয় নানা দিক নিয়ে লিখবো।পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন।ধন্যবাদ