জয় জগন্নাথ – জগন্নাথ মন্দিরের বিধি নিষেধ

24

জয় জগন্নাথ – জগন্নাথ মন্দিরের বিধি নিষেধ

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

পুরীর মন্দির নিয়ে রহস্যর যেমন শেষ নেই তেমনই পুরীর মন্দিরে প্রবেশ নিয়ে রয়েছে বেশ কিছু নিয়ম বা বিধি নিষেধ যা নিয়ে অনেকের মনে অনেক প্রশ্ন এবং কৌতূহল। এই নিয়ম গুলির পেছনে থাকা শাস্ত্রীয় এবং ঐতিহাসিক কারন গুলি নিয়ে আজকের পর্বে লিখবো।

পুরীর মন্দিরের গর্ভগৃহে প্রবেশের অনুমতি রয়েছে কেবলমাত্র হিন্দুদেরই এবং এই মন্দিরে বিদেশীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ।এক অংশের ইতিহাসবিদের মতে, একাধিকবার অহিন্দু বৈদেশিক শত্রু পক্ষ এই মন্দিরে হামলা চালায় এবং মন্দির ধ্বংস করে জগন্নাথ বিগ্রহ ও প্রভু জগন্নাথের বিপুল ধন সম্পত্তি লুঠ করার পরিকল্পনা করে হয়তো সে কারণেই সেবায়েতরা

পুরী মন্দিরের অন্দরে শুধু মাত্র সনাতন ধর্মাবলম্বী এবং ভারতীয় দের প্রবেশ অধিকার দিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী থাকা কালীন ইন্দিরা গান্ধীকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। তিনি একজন অ-হিন্দুকে বিয়ে করেছিলেন। এছাড়া রবীন্দ্র নাথ থাকুরও কোনোদিন পুরীর মন্দিরে প্রবেশ করেন নি কারন জন্ম সূত্রে তিনি ছিলেন ব্রাহ্ম সমাজের।থাইল্যান্ডের রাজকুমারী মহা শ্রীনিধর্ন প্রথম ওডিশা সফরে পৌঁছন। তিনি বাইরে থেকেই মন্দিরের দর্শন করেন। বিদেশি বলে তাঁকে প্রবেশাধিকারের অনুমতি দেওয়া হয়নি।ইস্কন প্রতিষ্ঠাতা শ্রীল প্রভুপাদ ও পুরীর মন্দিরে প্রবেশ করেন নি কারন তার সাথে থাকা বিদেশি ভক্ত দের মন্দিরে প্রবেশ করতে নিষেধ করা হয়।এমন কি একবার এলিজাবেথ জিগলারকে নামক এক জগন্নাথ ভক্তকে কয়েক কোটি টাকা দান দেয়ার পরেও মন্দিরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। কারণ তিনি ছিলেন খ্রীস্ট ধর্মের মানুষ এবং বিদেশি নাগরিক।এমন বহু বিখ্যাত ভক্ত জগন্নাথ মন্দিরে প্রবেশ করার অনুমতি পাননি।

এখানে প্রশ্ন ওঠে জগন্নাথ তো জগতের নাথ তবে তার দর্শন থেকে কেনো তার বিদেশি এবং অন্য ধর্মের মানুষ বঞ্চিত থাকবেন। এই সমস্যার সমাধান করতেই প্রভু জগন্নাথ প্রতি বছর রথ যাত্রায় মন্দির থেকে বেরিয়ে আসেন। সেদিন মুছে যায় সব ভেদাভেদ সব বিধি নিষেধ। রথে শুধু জগন্নাথ দর্শন নয় তার ভক্তরা তাকে স্পর্শ এবং আলিঙ্গন ও করতে পারে।

ফিরে আসবো জগন্নাথ সংক্রান্ত বিশেষ আলোচনা নিয়ে আবার আগামী পর্বে। পড়তে থাকুন।

ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।