কালী কথা – অরন্যা কালী

87

কালী কথা – অরন্যা কালী

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

সুন্দর বনের ইতিহাস যতটা প্রাচীন মনে হয় বাস্তবে এই অঞ্চলের ইতিহাস তার থেকেও বেশি প্রাচীন। আজও এই নদী কেন্দ্রিক সুন্দর বনের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রাচীন মন্দির এবং সভ্যতার নিদর্শন আবিষ্কৃত হয়। এই সুন্দর বনেই রয়েছে প্রাচীন অরন্যা কালী মন্দির। আজকের কালী কথায় জানাবো এই মন্দিরের ইতিহাস এবং মাহাত্ম।

 

আজ থেকে আড়াইশো বছর আগে জঙ্গলে বিদ‍্যাধরী নদীর পাশে এক সাধু জঙ্গলের মঙ্গলের জন্য এই অরণ‍্য কালীর যজ্ঞ শুরু করেছিলেন।

তখন ভীষণ বন্যায় ভেসে যাচ্ছে এই এলাকা। শোনা যায় পুজোর পরে দেবী কালীর কৃপায় সে যাত্রায় রক্ষা পান এই বিস্তীর্ণ অঞ্চলের মানুষ। তারপর এলাকার মানুষের প্রচেষ্টায় একটু একটু করে ধাপে ধাপে তৈরি হয়েছে এই মন্দির। বর্তমানে অরণ্য কালিবাড়ি বলে প্রসিদ্ধি লাভ করছে এই কালী ক্ষেত্র।অরণ্যের মধ্যে অবস্থান বলেই হয়তো দেবীকে অরন্যা কালী বলা হয়।

 

সেই সময় এই অঞ্চল ছিলো ভীষণ দুর্গম। জল দস্যু বাঘ, কুমির আর বিষাক্ত সাপের ভয় ছিলো পদে পদে।এখন অনেক টাই উন্নয়ন হয়েছে। মন্দিরের জনপ্রিয়তা এবং প্রসিদ্ধিও বেড়েছে।

 

মন্দির প্রতিষ্ঠিত হয়ার পর এই পুজোর দায়িত্ব গ্রামেরই ভট্টাচার্য্য পরিবারের হাতে হস্তান্তর করে গ্রামবাসীরা। তখন থেকেই ভট্টাচার্য্য পরিবার এই পূজার দেখাশোনা করে আসছে।স্থানীয় দের মতে এখানকার মা কালী খুবই জাগ্রত। তার কাছে মন থেকে যা চাওয়া হয় তাই পাওয়া যায়।আজও দেবী অরন্যা কালী এই অঞ্চলের বাসিন্দাদের আশা ভরসার কেন্দ্র বিন্দুতে অবস্থান করছে।

 

প্রতি বছর শ‍্যামা পুজোর দিন পশু বলী হয় পাশাপাশি ফলও বলি দেওয়া হয়। খিচুড়ি ভোগ তৈরি হয়। পুজো উপলক্ষে এই সময়ে কালী মায়ের কাছে প্রার্থনা করতে বহু দূর দূরান্ত থেকে পূণ‍্যার্থীদের আগমন ঘটে।

 

এমন বহু প্রাচীন এবং ঐতিহাসিক কালী মন্দির আছে এই বাংলার বুকে। পরবর্তী পর্বে অন্য

এক কালী মন্দিরের কথা নিয়ে ফিরে আসবো কালী কথায়। পড়তে থাকুন।

ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।