ফলহারিণী অমাবস্যার তাৎপর্য 

44

ফলহারিণী অমাবস্যার তাৎপর্য

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

স্বাগত জানাই আজকের বিশেষ পর্বে।

সামনেই জ্যোতিষ ও তন্ত্র জগতের সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ ও দুর্লভ তিথি ফল হারিণী অমাবস্যা তিথি।শাস্ত্র মতে এই অমাবস্যা তিথিতে যেকোনো তান্ত্রিক এবং শাস্ত্রীয় ক্রিয়া সঠিক ভাবে সম্পাদিত হলে তা নিশ্চিত এবং স্থায়ী ভাবে আমাদের জীবনকে প্রভাবিত করে। আজ জানাবো এই অমাবস্যা তিথির আধ্যাত্মিক তাৎপর্য।

 

জ্যৈষ্ঠমাসের অমাবস্যা তিথিতে ফলহারিণী রূপে দেবী কালী পূজিতা হন।এই দিন আমরা যদি মা কালীর পুজো করি এবং তাকে সন্তুষ্ট করতে পারি, তা হলে তাঁর আশীর্বাদ সর্বদা আমাদের ওপর থাকবে।

 

দক্ষিনেশ্বরে থাকা কালীন ঠাকুর রামকৃষ্ণদেব ফলহারিণী কালী পুজোর দিনই স্ত্রী সারদা দেবীকে পুজো করেছিলেন জগৎ কল্যাণের জন্য। এদিন শ্রীমা সারদাকে ষোড়শীরূপে পুজো করেছিলেন বলে আজও রামকৃষ্ণমঠ ও আশ্রমে এই পুজো ‘ষোড়শী’ পুজো নামে পরিচিত|

 

ধরিত্রীজাত ফলের সঙ্গে এই মাতৃপুজোর কোনও সম্পর্ক নেই। এই ফল মানবজাতির কর্মফলের কথা স্মরণ করায়।দিনটিতে মা স্বয়ং ভক্তদের সুকর্মের জন্য আশীর্বাদ প্রদান করেন। অপরদিকে সন্তানের কুকর্মের জন্য উদ্ভূত অশুভ ফলের প্রভাব থেকে তিনিই আবার সন্তানদের মুক্ত করেন। অর্থাৎ ওই দিনে মা স্বয়ং যেমন সন্তানদের শুভ ফল প্রদান করেন, তেমনি তিনি সন্তানদের অশুভ ফলও হরণ করে থাকেন।

 

জ্যোতিষ এবং তন্ত্রের জগতে এই দিনের অন্য মাহাত্ম রয়েছে। তন্ত্র শাস্ত্র মতে যেকোনো তন্ত্র ক্রিয়া বেশি প্রভাবশালী হয় এই তিথিতে।আবার আগেই বলেছি শাস্ত্র মতে যেকোনো অশুভ গ্রহদোষ খণ্ডন বা কোনো বিশেষ প্রতিকার গ্রহণের ক্ষেত্রে এই অমাবস্যাকে অন্যতম শ্রেষ্ঠ হিসেবে দেখা হয়|

এ নিয়ে পরবর্তী কালে আরো বিস্তারিত আলোচনা করবো।

 

বিশেষ করে যাদের জন্মছকে বিষ যোগ।

গ্রহণ দোষ, কালসর্প দোষ, দারিদ্র যোগ

মাঙ্গলিক দোষ, গুরু চণ্ডাল যোগ ইত্যাদি

অশুভ গ্রহগত সংযোগ আছে তারা এই

তিথিকে কাজে লাগিয়ে সব গ্রহ গত

অশুভ প্রভাব থেকে নিস্তার লাভ করতে পারেন।

 

প্রতি বছরের ন্যায় এবছর ও তারাপীঠ এবং আপনাদের মা হৃদয়েশ্বরী সর্ব মঙ্গলা মন্দিরে শাস্ত্র মতে গ্রহ দোষ খন্ডনের সব ব্যাবস্থা থাকবে।

চলতে থাকবে কালী কথা এবং ফল হারিণী অমাবস্যা নিয়ে শাস্ত্রীয় আলোচনা।

ফিরে আসবো পরের পর্বে।পড়তে থাকুন।

ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।