কৃষ্ণ কথা – অঘাসুর বধ

10

কৃষ্ণ কথা – অঘাসুর বধ

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

জন্ম থেকেই শ্রী কৃষ্ণকে বধ করতে চাইতেন তার মামা কংশ। একের পর এক অসুর এবং দৈত্যকে তিনি পাঠিয়েছেন। একাধিক বার ষড়যন্ত্র করেছেন কৃষ্ণর বিরুদ্ধে। কিন্তু যিনি স্বয়ং ভগবান তাকে বধ করা অসম্ভব। প্রতিবারই শ্রী কৃষ্ণ নিজেকে এবং নিরীহ ব্রজবাসীদের রক্ষা করেছেন। আজকের পর্বে শ্রী কৃষ্ণ কতৃক অঘাসুর বধের বৃত্তান্ত আপনাদের জানাবো।

 

একদিন শ্রীকৃষ্ণ তার বন্ধুদের একত্রিত করে বনভোজনে যান। বনভোজনের আনন্দে তাঁরা সকলেই উৎফুল্ল হয়ে উঠেছিল।মনের আনন্দে সবাই নানারকম খেলাধুলা করতে লাগলেন সেই সময় কংসের আদেশে অঘাসুর কৃষ্ণকে হত্যা করার জন্য বৃন্দাবনে আসেন।সম্পর্কে অঘাসুর ছিল পুতনা ও বকাসুরের ছোট ভাই।

 

খুঁজতে খুঁজতে অঘাসুর বনে প্রবেশ করেন এবং কৃষ্ণকে দেখে এক সাধারণ নরশিশুই মনে করেন ওই মহাসুর। ক্রোধে এবং ভীষণ প্রতিশোধস্পৃহায় আগুনের মতো জ্বলতে থাকে সেই ভয়ঙ্কর অসুর । কৃষ্ণকে দেখে অঘাসুর ভাবে, এই ছেলেই তাঁর বোন ও ভাইকে হত্যা করেছে।যেভাবেই হোক কৃষ্ণকে সে বধ করবেই।

 

অঘাসুর নিজের রূপ বদলাতে জানতো।কৃষ্ণকে বধ করার জন্য জঙ্গলের মধ্যে নিজেকে বিশাল অজগর সাপে পরিণত করে পর্বতের গুহাসদৃশ মুখ প্রসারিত করে কৃষ্ণের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। কৃষ্ণ সহ বাকি গোবালকরা অঘাসুরের মায়ায় মোহিত হয়। ভাবে অজগর সাপের মতো দেখতে একটি প্রাকৃতিক গুহা। সেই গুহার ভিতরে যাওয়ার কৌতূহল প্রকাশ করে তাঁরা। সকলেই জানে, তাঁদের রক্ষা করার জন্য কৃষ্ণ তো রয়েছেই। বিপদ এলে সেই তাঁদের রক্ষা করবে। সেই কথামতো গোপ বালকরা ওই অজগর সাপ সদৃশ গুহার ভিতরে প্রবেশ করে।কৃষ্ণ অন্তর্যামী তিনি সব জেনেও না জানার ভান করে বাইরে অপেক্ষা করতে লাগলেন। এদিকে কৃষ্ণের জন্য অপেক্ষা করছিল অঘাসুর। তাই তাঁদের তখনই গিলে ফেলল না।সেঅ অপেক্ষা করতে লাগলো।

 

কিছুক্ষন পর বালক কৃষ্ণ সব বুঝতে পেরে সঙ্গীদের রক্ষা করার জন্য অঘাসুরের মুখগহ্বরে প্রবেশ করেন। সাথে সাথে অঘাসুর অর্থাৎ সেই অজগর সাপটি তার মুখ বন্ধ করে সব পথ বন্ধ করে দিল। এটাই ছিলো তার চরম ভুল।কৃষ্ণ তার দেহ প্রসারিত করে করতে থাকেন। অঘাসুরের পক্ষে আর বেশিক্ষন সেই দেহ ধারণ করা সম্ভব ছিলো না।নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে অঘাসুরের চোখদুটি বাইকে বেরিয়ে আসে।অঘাসুর সেখানেই মৃত্যুবরণ করে।এবং শ্রী কৃষ্ণ সহ তার সখারা বাইরে বেরিয়ে আসে।

 

পরবর্তী পর্বে কৃষ্ণের এমনই এক লীলা নিয়ে আবার ফিরে আসবো কৃষ্ণ কথায়। পড়তে থাকুন।

ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।