নৈনিতালে পন্ডিতজি

90

নৈনিতালে পন্ডিতজি

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

আমার উত্তরাখন্ড ভ্রমণের শেষ পর্বর অভিজ্ঞতা আজ আপনাদের সাথে ভাগ করে নেবো।শেষ পর্বে নৈনিতাল এবং নৈনিতাল এবং তার আশেপাশের কিছু সুন্দর এবং ধার্মিক স্থান ঘুরে দেখলাম।

নৈনিতাল থেকে সামান্য দূরেই মুক্তেশ্ব‌রে শিবের মন্দির। পাহাড়ি নির্জনতার মাঝে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছে শিব মন্দিরটি। পথ অত্যান্ত দুর্গম তাই শারীরিক এবং মানসিক জোর না থাকলে সেখানে যাওয়া অসম্ভব। তবে শিবের কৃপায় শেষ অবধি সেখানে পৌঁছতে এবং সুন্দর ভাবে সব দেখে ফিরে আসতে পেরেছি।

এই মন্দির অনেকের মতে সেই মহাভারতের যুগ থেকে আছে।মহাভারতের যুদ্ধর পর স্বজন হত্যার পাপ থেকে মুক্ত হতে পাণ্ডবদের দ্বারা শিবের আদেশে এই মন্দির গুলি নির্মিত হয়। যেহেতু পাপ মুক্তির জন্য এই মন্দিরের প্রতিষ্ঠা তাই মহাদেব এখানে মুক্তেশ্বর রূপে বিরাজমান।

আলমোড়া জেলায় অবস্থিত দেবী দুর্গার উদ্দেশ্যে নিবেদিত নন্দ দেবী মন্দির এই অঞ্চলের অন্যতম জনপ্রিয় এবং প্রসিদ্ধ মন্দির। দেবী “নন্দ” কে “অশুভের বিনাশক” বলে মনে করেন।তিনি হিমালয় কন্যা।দেবীর মন্দিরটি ১০০০ বছরের পুরনো এবং এটি একটি শিব মন্দিরের প্রাঙ্গণে পাহাড়ি শৈলীতে নির্মিত। এখানে এসে শুনলাম ভাদ্র শুক্লার অষ্টমীতে মন্দিরে একটি বিশাল নন্দ দেবী মেলা অনুষ্ঠিত হয় । মেলার সময় হাজার হাজার ভক্ত আসেন।

বহুদিন যাবত আমার নীম কারোলি বাবার লীলা ক্ষেত্র এবং আশ্রম দর্শন করার ইচ্ছে ছিলো। এবার ইচ্ছে পূরণ হলো। যারা নীম কারোলি বাবা সম্পর্কে জানেন না তাদের জন্য বলছি।ব্রিটিশ ভারতে উত্তর প্রদেশের ফিরোজাবাদে জন্মেছিলেন এই মহা পুরুষ, প্রথম জীবনে বিবাহ করে সংসার ও শুরু করেছিলেন কিন্তু হটাৎ একদিন সব ছেড়ে ঈশ্বর অনুসন্ধানে বেরিয়ে পড়লেন তিনি, বহু স্থান ঘুরলেন শেষে উত্তরা খন্ডের কাঁচি ধামে নিজের ছোট্ট একটি হনুমান মন্দির স্থাপন করে আধ্যাত্মিক সাধনায় নিজেকে নিয়োজিত করলেন। তিনি ছিলেন বজরংবলীর আশীর্বাদ ধন্য। অনেকেই তাকে বজরংবলীর সাক্ষাৎ অবতার বলে মনে করতো। বাবা ভিড় পছন্দ করতেন না তাই এই এই নির্জন প্রাকৃতিক স্থানে নিজের আশ্রম প্রতিষ্ঠা করে সাধনা করতেন।তার এই লীলা ক্ষেত্র তার বহু অলৌকিক কর্ম কাণ্ডের সাক্ষী থেকেছে। বহু বিখ্যাত মানুষ বাবার টানে এখানে ছুটে এসেছেন। আজও বাবা নীম কারোলির অলৌকিক উপস্থিতি অনুভব করা যায় এই স্থানে এলে।

এবার ফেরার পালা। আগামী বৃহস্পতিবার থেকে আবার সিটিভিএন এর অনুষ্ঠানে এবং নিয়মিত সব চেম্বারে আমাকে পাবেন। চলতে থাকবে শাস্ত্রীয় অনুষ্ঠান এবং ধারাবাহিক লেখা লেখি।
ভালো থাকুন। পড়তে থাকুন। ধন্যবাদ।