শিব তীর্থ – মুকুটেশ্বর শিব
পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক
আজকের পর্বে বাংলার আরো একটি প্রসিদ্ধ শিব মন্দিরের মহিমা বর্ণনা করবো।মুর্শিদাবাদের অন্যতম জনপ্রিয় এবং প্রাচীন শিব মন্দির মুকুটেশ্বর শিব যার ঐতিহাসিক এবং ধর্মীয়
গুরুত্ব অপরিসীম।
ঠিক কবে মন্দিরটি তৈরি হয়েছিল তার সুনির্দিষ্ট তথ্য বর্তমান সেবায়েতদের কাছে নেই। এমনকি প্রবীণদেরও সেই উত্তর অজানা। কথিত আছে প্রায় দুশো বছর আগে বাঘডাঙার রাজা এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
এই মন্দির নির্মাণ নিয়ে রোমাঞ্চকর এক কিংবদন্তী প্রচলিত আছে।শোনা যায় আগে মসড্ডা গ্রামের মাঝামাঝি জায়গা ঘন জঙ্গলে ঢাকা ছিল। সেই সময়ে মুকুট ঘোষ নামে গ্রামের এক গো পালক তার হারানো গরু খুঁজতে গিয়ে জঙ্গলে ঢুকে এক অদ্ভুত দৃশ্য দেখতে পান তিনি দেখেন এক জায়গায় দাঁড়িয়ে নিজে থেকেই দুধ দিচ্ছে ওই গরুটি। এতো দুধ দিয়েছে যে সেই এলাকার মাটি ভিজে গেছে।মুকুট ঘোষ বিষয়টি কাউকে না জানিয়ে পরেরদিন একা একা জঙ্গলের মধ্যে গিয়ে তার গাইয়ের দুধে ভিজে ওঠা জায়গাটা খুঁড়তে শুরু করেন।সেখানে তিন ফুট গভীর গর্ত খোঁড়ার পর তিনি দেখতে পান একটি শিবলিঙ্গ। সেই রাতে তিনি স্বপ্নদেশ পান যে ওই স্থানে একটি মন্দির নির্মাণ করতে হবে এবং মন্দিরের নাম হবে মকুটেশ্বর।
যে সময় মুকুট ঘোষ স্বপ্নাদেশ পান সেই সময়ে অদ্ভুত ভাবে মুর্শিদাবাদের কান্দি রাজপরিবারের এক সদস্যও স্বপ্নাদেশ পান যে মন্দির গড়ার জন্য অর্থ যোগান দিতে হবে। নির্দেশ মতো রাজ পরিবারের অর্থে মন্দির নির্মাণ হয়।সেই সময় থেকে মকুটেশ্বর মন্দিরের পুজো শেষে প্রসাদ সেই রাজপরিবারে নিয়ে যেতে হত সেবায়েতদের।আজও সব রীতি আগের মতনই আছে।
শ্রদ্ধা এবং ভক্তিআছে অটুট।
এই মন্দিরে করা সব মনোস্কামনা পূর্ণ হয় এমনটাই স্থানীয়দের বিশ্বাস।শ্রাবণ মাসের সোমবার এবং বিভিন্ন বিশেষ দিনে শিব ভক্তরা আসেন মন্দিরে পুজো দিতে।শিব রাত্রি এবং চৈত্র
মাসেও বহু মানুষের ভিড় হয় এছাড়া
নীল ষষ্ঠীতে বিশেষ পুজো এবং উৎসব হয়।
আবার ফিরে আসবো শিব তীর্থ নিয়ে
আগামী পর্বে। এখনো বাংলার বহু প্রাচীন শিব মন্দির নিয়ে আলোচনা
বাকি আছে।পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন।ধন্যবাদ