মৌনী অমাবস্যার আধ্যাত্মিক তাৎপর্য

94

মৌনী অমাবস্যার আধ্যাত্মিক তাৎপর্য

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

আগামী ২৮ এ জানুয়ারি মৌনী অমাবস্যা।

আমাদের তন্ত্র ও জ্যোতিষ জগতে এই মৌনী অমাবস্যা একটি গুরুত্বপূর্ণ তিথি হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে যুগ যুগ ধরে|আজ আপনাদের জানাবো মৌনী অমাবস্যার প্রকৃত অর্থ এবং আধ্যাত্মিক তাৎপর্য|

 

পঞ্জিকা মতে মাঘ মাসে মহা শিব রাত্রির আগের শেষ অমাবস্যাই হলো মৌনী অমাবস্যা ৷ অর্থাৎ মাঘ মাসের কৃষ্ণপক্ষের অমাবস্যাই মৌনী অমাবস্যা।মৌনী অমাবস্যা তিথিতেই জন্মে ছিলেন মহান ঋষি মনু বলা হয় ঋষি মনুর নাম থেকেই মৌনী অমাবস্যা নামকরন|শাস্ত্র মতে মৌনী অমাবস্যার এই বিশেষ দিনেই সূচনা হয়েছিল দ্বাপর যুগের|

 

সংস্কৃতে মৌন শব্দের অর্থ হলো “যে কথা বলতে বা শব্দ উচ্চারণ করতে পারে না অর্থাৎ যে চুপ অর্থাৎ নিস্তব্ধ অবস্থায় থাকে ” অন্যদিকে নিঃশ্বব্দ কথার অর্থ হলো” বিশ্বভ্রমান্ডের নিঃসীম শুন্যতাকে যদি জানতে হয় এবং ঈশ্বরের স্বরূপ যদি অন্তরে উপলব্ধি করতে হয় তবে হতে হবে মৌন|এই উদ্দেশ্যে মৌনী অমাবস্যার এই তিথিতে সাধকেরা মৌনব্রত পালন করে থাকেন শাশ্বত জ্ঞানকে উপলব্ধি করতে প্রকৃত সাধক এই তিথিতে মৌন ব্রত পালনের মাধ্যমে কুন্ডলিনী জাগ্রত করতে পারেন এবং অসীম শক্তির অধিকারী হতে পারেন তাই যুগ যুগ ধরে তন্ত্র সাধনার ক্ষেত্রে মৌনী অমাবস্যা একটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে আসছে|

 

জ্যোতিষ শাস্ত্রে এই দিন টির আলাদা তাৎপর্য আছে, এদিন সূর্য ও চন্দ্র মকর রাশিতে অবস্থান করে ৷প্রায় একমাস ধরে সূর্য এই অবস্থানে থাকে এবং অন্যদিকে চাঁদ থাকে আড়াই দিন|চন্দ্র ও সূর্যের এই অবস্থান ও রাশি পরিবর্তন মানুষের জীবনকে প্রভাবিত করে নানান ভাবে|

 

আধ্যাত্মিক দৃষ্টি ভঙ্গি থেকে এই মৌনী অমাবস্যার পূণ্য তিথিতে মৌনব্রত পালন করলে জীবনের সব আকাঙ্খা, মোহ এবং ইন্দ্রিয়কে নিজের অধীনে রাখা যায় এমনকি এই তিথিকে সঠিক ভাবে কাজে লাগালে একজন সাধক জন্ম মৃত্যুর আবর্ত থেকে মুক্তি লাভ করে মোক্ষ লাভ ও করতে পারেন|

 

বহু মানুষের বিশ্বাস এই তিথিতে স্বর্গের দেবতারা নেমে আসেন মর্তে এবং প্রয়াগরাজের গঙ্গা-যমুনা-স্বরস্বতীর মিলনস্থল ত্রিবেনীসঙ্গমে পূণ্য স্নান করেন|

 

নিজেদের কর্মফল থেকে মুক্তি লাভের আশায় ত্রিবেনী সহ দেশের বিভিন্ন নদী সঙ্গমে স্নান করেন লক্ষ লক্ষ মানুষ|শাস্ত্র মতে মৌন ব্রত পালন করে, অমাবস্যায় যদি গঙ্গা স্নান করা যায় তাহলে মানব জীবনের বহু জন্মের পাপ ধুয়ে যায়|এদিন নৈঃশব্দ্য পালন করলে মানসিক শান্তি পাওয়া যায় এবং রোগমুক্তি ঘটে|শাস্ত্র মতে গ্রহ দোষ খন্ডনের জন্য মৌনী অমাবস্যা আদৰ্শ তিথি।

 

আগামী পর্বে ফিরে আসবো প্রজাতন্ত্র

দিবস উপলক্ষে বিশেষ পর্ব নিয়ে।পড়তে থাকুন।

ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।