কথা দিয়েছিলাম এক সম্পূর্ণ নতুন বিষয় নিয়ে এক ধারাবাহিক লেখনী শুরু করবো, শুরু করেও দিয়েছি ইতিমধ্যে, হ্যাঁ দ্বাদশ জ্যোতির্লিঙ্গ নিয়ে সূচনা পর্ব এর আগে আপনাদের সামনে উপস্থাপন করেছি এবং যে উৎসাহ ও ভালোবাসা আপনারা দেখিয়েছেন তাতে লেখার উৎসাহ কয়েক গুন বেড়ে গেছে, তাই আর বিলম্ব না করে শুরু করা যাক |আজ বলবো জ্যোতির্লিঙ্গ বৈদ্যনাথ এর কথা, স্ববিস্তারে|
দ্বাদশ জ্যোতির্লিঙ্গের মধ্যে বৈদ্যনাথ মন্দির বা বৈদ্যনাথ ধাম অন্যতম|হিন্দু ধর্মের অতি পবিত্র এই স্থান অবস্থিত ভারতের ঝাড়খন্ড রাজ্যের দেওঘর জেলায়|শুধু বৈদ্যনাথ নয় এই স্থানে রয়েছে আরো কয়েকটি ছোটো বড়ো মন্দির যার ফলে প্রায় সারা বছর তীর্থ যাত্রী দের ভিড়ে জমজমাট থাকে এই স্থান|এই মন্দিরের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে দ্বার কেশী নদী ও কাছেই রয়েছে ত্রিকুট পাহাড়|
এখানে শিবের নাম বৈদ্যনাথ কেনো হলো তার পেছনেও আছে এক পৌরাণিক কাহিনী|কথিত আছে এই স্থানে রাবন একবার শিব কে তুষ্ট করতে কঠোর তপস্যা শুরু করেন এবং নিজের দশ টি মাথার এক একটি কে যজ্ঞে আহুতি দিতে থাকেন|একটা সময়ের পর যখন রাবন অসুস্থ হয়ে পড়েন তখন শিব স্বয়ং এসে তার সেবা শুশ্রুষা করে তাকে সুস্থ করে তোলেন, যেহেতু শিব চিকিৎসক বা বৈদ্যর ভূমিকায় অবতীর্ন হয়েছিলেন তাই এই স্থানে তিনি বৈদ্যনাথ নামে পূজিত হন|
কিভাবে এই স্থানে এই বিশেষ জ্যোতির্লিঙ্গ স্থাপিত হলো তা নিয়ে শিব পুরানে একটি রোমাঞ্চকর ঘটনার উল্লেখ আছে|রাবন চেয়ে ছিলেন তার লংকা কে সর্ব শক্তি তে শক্তিমান করে গড়ে তুলতে এবং তপস্যায় শিব কে তুষ্ট করে তিনি একটি শিব লিঙ্গ লাভ করেন কিন্তু শিব বলেন এই বিশেষ শিব লিঙ্গ টি লংকা ছাড়া অন্য কোনো স্থানে রাখা বা স্থাপিত করা যাবে না|রাবনের এই কর্মকান্ডের সকল দেবতারা ভীত হয়ে পড়েন কারন কার্য সিদ্ধি হলে রাবন হবেন অপরাজেয় তাই বরুন দেব এর চক্রান্তে পথের মধ্যে রাবনের মূত্র ত্যাগ করার প্রয়োজন হয়ে সেই সময় বিষ্ণু ব্রাহ্মণ এর ছদ্মবেশে সেখানে আসেন ও কিছু ক্ষণের জন্য শিব লিঙ্গ নিজের হাতে রাখতে সম্মতি দেন |কিন্তু রাবন ফিরে এসে দেখেন শিব লিঙ্গ টি ভূমিতে স্থাপিত করা হয়ে গেছে |শত চেষ্টা তেও তিনি শিব লিঙ্গ কে এক চুল ও সরাতে পারলেন না |ব্যর্থ হয়ে হাল ছেড়ে দিয়ে শূন্য হাতে লংকায় ফিরে গেলেন |সেই শিব লিঙ্গ স্থাপন করার স্থানটি হচ্ছে এই বিশেষ স্থান যেখানে রয়েছে জ্যোতির্লিঙ্গ বৈদ্যনাথ মন্দির |কথিত আছে জীবিত কালে রাবন স্বয়ং প্রতিদিন এই শিব লিঙ্গের পূজা করতে আসতেন |
যদিও কিছু জ্যোতির্লিঙ্গর প্রকৃত স্থান নিয়ে কিছু বিতর্ক ও মতপার্থক্য আছে এবং বৈদ্যনাথ ধাম ও তার ব্যতিক্রম নয়|তবে ভবিষ্য পুরান, শিব পুরান ও আদি শংকরাচার্য্যর দ্বাদশ জ্যোতির্লিঙ্গ স্তোত্রম্ এ জ্যোতির্লিঙ্গ বৈদ্যনাথ ধামের উল্লেখ পাওয়া যায়|নানা দিক দিয়ে বৈদ্য নাথ ধাম প্রতিটি শিব ভক্ত তথা সমগ্র সনাতন ধর্ম এ বিশ্বাসী মানুষের কাছে এক অতি পবিত্র তীর্থ ক্ষেত্র|
ফিরে আসছি পরের পর্বে এক নতুন জ্যোতির্লিঙ্গের জানা অজানা নানা কথা নিয়ে, পড়তে থাকুন পাশে থাকুন আর জ্যোতিষ সংক্রান্ত যেকোনো সমস্যার সমাধান ও পরামর্শর জন্য অবশ্যই যোগাযোগ করবেন উল্লেখিত নাম্বার এ|ধন্যবাদ |