ভক্তের ভগবান – গৌতম বুদ্ধ এবং দুই শিষ্য

101

ভক্তের ভগবান – গৌতম বুদ্ধ এবং দুই শিষ্য

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

ভগবানের স্মরণ নেয়া ভক্তের উদ্ধার করার জন্য ভগবান সদা সচেষ্ট থাকেন।ভগবানের অবতার বুদ্ধও সারা জীবন সেই চেষ্টাই করেছেন। তার অনেক ভক্ত তার সান্নিধ্য পেয়ে ধন্য হয়েছেন অনেককেই তিনি অজ্ঞানতার অন্ধকার থেকে জ্ঞানের আলোয় এনেছেন। বুদ্ধের এমনই দুই

ভক্ত ছিলেন আনন্দ এবং রবি। আজকের পর্বে তাদের কথা জানাবো।

 

বুদ্ধের দুই প্রিয় শিষ্য একদিন কিছু অদ্ভুত ঘটনা প্রত্যক্ষ করলেন। তারা দেখলেন একদিন সকালে এক ব্যাক্তি এসে বুদ্ধ কে জিগেস করলেন যে ভগবান আছে কি নেই। এবং জানালেন যে তিনি ভীষণ ভাবে ঈশ্বর বিশ্বাসী। বুদ্ধ উত্তরে বললেন যে না ঈশ্বর নেই। ব্যক্তিটি খুশি না হলেও মুখে কিছু না বলে সেখান থেকে বিদায় নিলেন। দুপুরে আরো একজন বুদ্ধের কাছে এলেন এবং একই প্রশ্ন করলেন। ইনি ছিলেন একজন নাস্তিক এবং ঈশ্বরে বিশ্বাস করতেন না। তার উত্তরে বুদ্ধ বললেন একমাত্র ঈশ্বরই সত্যি বাকি সব মিথ্যা।সেদিন সন্ধ্যায় আরো একজন এসে ঈশ্বর সম্পর্কে একই প্রশ্ন করলেন এবং বুদ্ধ কিছু না বলে মৌন থাকলেন।

 

ভক্ত আনন্দ এবং রবি সেদিন রাতে বুদ্ধর কাছে এসে জানতে চাইলেন কেনো তিনি একই

প্রশ্নের উত্তরে তিনজকে আলাদা আলাদা উত্তর দিলেন। বুদ্ধ বললেন প্রথম ব্যক্তি ছিলেন ঈশ্বর বিশ্বাসী কিন্তু তিনি ঈশ্বর সম্পর্কে অনুসন্ধান করেননি। শুধু বিশ্বাস করলে হয়না সাধনা প্রয়োজন। অনুসন্ধান প্রয়োজন। দ্বিতীয় ব্যক্তি ছিলেন নাস্তিক কিন্তু তিনিও অজ্ঞানী কোনোরকম সাধনা এবং জ্ঞান ছাড়া নাস্তিক হওয়া যায়না।আর তৃতীয় ব্যাক্তির ক্ষেত্রে তিনি কেনো নীরব ছিলেন তা জানার জন্য পরদিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বললেন।

 

পরদিন সকালে সেই তৃতীয় ব্যক্তি আবার এলেন এবং জানতে চাইলেন ঈশ্বর আছে না নেই। বুদ্ধ বললেন তার একটি মূল্য বান রত্ন তিনি হারিয়ে ফেলেছেন এবং সেটা খুঁজে দিতে পারলে তবেই এর উত্তর দেবেন। ব্যাক্তিটি সারাদিন নানা স্থানে সেই রত্ন খোঁজ করে সন্ধ্যায় বুদ্ধর কাছে এলেন এবং বুদ্ধ তাকে বললেন রত্নটি তিনি তার কুটিরে হারিয়ে ফেলেছেন তাই বাইরে খুঁজে লাভ নেই। এতে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হয়ে এই ব্যক্তি এই পরিহাসের মানে জানতে চাইলেন। বুদ্ধ তখন হেসে বললেন

ঈশ্বর ও তার মধ্যে আছে এবং তিনি এইরকম নির্বোধের ন্যায় তাকে নানা স্থানে খুঁজে চলেছেন তাই তার মনে ঈশ্বরকে নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে তার উচিৎ ঈশ্বরকে নিজের অন্তরে খোঁজা।

 

এরপর বুদ্ধ তার দুই শিষ্য কে ডেকে বললেন ঈশ্বর সূর্যের ন্যায় সত্য। তাকে মানা না মানার প্রশ্ন নেই তাকে জানতে হয় এবং তার জন্য প্রয়োজন জ্ঞান এবং সাধনা। একজন গুরুর উচিৎ সেই সাধনায়

তাকে উৎসাহ দেয়া। জ্ঞান ডান করা।

তিনি তাই করেছেন।

 

আবার পরের পর্বে ফিরে আসবো ভক্ত এবং ভগবানের এমনই এক লীলা নিয়ে। যথা সময়ে। পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।