গণেশে চতুর্থী উপলক্ষে বিশেষ পর্ব
রহস্যময় এক গণেশ মন্দির
পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক
আসন্ন গণেশচতুর্থী উপলক্ষে আজ থেকে শুরু করছি গণেশকে ধারাবাহিক আলোচনা। আজ প্রথম পর্বে আপনাদের একটি রহস্যময় গণেশ মন্দিরের কথা লিখবো।কেনো রহস্যময় বলছি তা পড়লে বুঝতে পারবেন।
সিদ্ধিদাতা গণেশের মাথা ধর থেকে আলাদা হওয়ায় পরে কোথায় গেলো তা সত্যি এক রহস্য|আদি বিনায়ক মন্দিরে গণেশের যে আদি রূপ আছে সেই রূপে তার যে মাথা আমরা দেখতে পাই মাথা নাকি এই মর্তেরই এক মন্দিরে আছে।
শিব পুরাণ পড়লে জানা যায় মস্তক ছিন্ন করার পরে তা অপ্সরাগণ নিয়েছিলেন কিন্তু তারপর তা কোথায় গেল তার শিব পুরাণে বলা নেই।আবার”ব্রহ্মবৈবর্তপুরাণের” ‘গণপতি খন্ডে’ উল্লেখ আছে গণেশের মুন্ড গোলকধাম এ চলে যায় শ্রী হরির কাছে। আর শ্রী হরির দেহের সঙ্গে সেই মস্তক মিশে যায়। গনপতি শ্রী হরির আরেক অংশ। তাই শ্রী হরির এই তেজ অর্থাৎ গণেশের কাটা মুন্ডু শ্রী হরির শরীরেই মিশে যায়।
একটি প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী ভারতের উত্তরাখণ্ডের পাতাল ভুবনেশ্বর মন্দিরে আছে গণেশের কেটে যাওয়া মুন্ড আর সেই মুন্ড পাহারা দিচ্ছেন স্বয়ং দেবাদিদেব মহাদেব।
উত্তরাখণ্ডের পিথোরাগড় থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে ভূবণেশ্বর গ্রাম। এই ভুবনেশ্বর মন্দিরের ভূগর্ভে একাধিক গুহা রয়েছে। আর এই একাধিক গুহা গুলি একটি জায়গায় গিয়ে মিলিত হয়েছে।জনশ্রুতি অনুযায়ী এই সকল গুহার মিলনস্থলে যে উঁচু পাথরের ঢিবিটি রয়েছে সেটি গণেশের মনুষ্য মুন্ড।বলা হয় এই মন্দিরে একজন মানুষ একবারই প্রবেশ করতে পারেন। তাই কোন মানুষ যদি এই মন্দিরের শ্রী গণেশের চ্ছেদ করা মুন্ড রাখার মূল স্থলে না গিয়ে মাঝপথ থেকে ফিরে আসেন তবে তিনি দ্বিতীয়বার আর ওই মন্দিরে প্রবেশ করতে পারেন না
আবার এমনটাও বলা হয় যে এই মন্দিরের গুহার দেওয়াল ধরে হাঁটলে পূণ্য অর্জন হয় এবং দুঃখ-দুর্দশা দূর হয়। সরযু, রামগঙ্গা ও গুপ্তগঙ্গার মিলনস্থলে গড়ে উঠেছে এই মন্দির। এই মন্দির প্রদক্ষিণ করলে পাপ ক্ষয় হয় বলেও অনেকে মনে করেন।শুদ্ধ মনে ভক্তি সহকারে এই মন্দির দর্শন করলে গণেশের কৃপায় সকল বিঘ্ন কেটে যায় বলেও অনেকে বিশ্বাস করেন।সব মিলিয়ে এক অজানা রহস্য ঘিরে আছে এই মন্দিরকে এবং এই রহস্যর কেন্দ্রে আছেন পার্বতী পুত্র গণেশ।
গণেশ চতুর্থী উপলক্ষে আরো একটি বিশেষ পর্ব নিয়ে আগামী দিনে ফিরে আসবো। পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।