বিশেষ পর্ব – কৌশিকী অমাবস্যা এবং তন্ত্র সাধনা
পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক
আগের পর্বে আপনাদের দেবী কৌশিকীর মাহাত্ম শুনিয়ে ছিলাম আজকের এই বিশেষ পর্বে আপনাদের জানাবো কেনো কৌশিকী অমাবস্যা এতো গুরুত্বপূর্ণ এবং জ্যোতিষ বা তন্ত্রে কৌশিকী অমাবস্যার ভূমিকা কি।
শাস্ত্র মতে এই কৌশিকী অমাবস্যা বছরের আর বাকি অমাবস্যাগুলোর মধ্যে শ্রেষ্ঠ।
এই অমাবস্যায় গোটা ব্রহ্মাণ্ডের দশ মহাবিদ্যার দ্বিতীয় মহাবিদ্যা ‘তারা দেবী’কে ‘মহাকালী’ রূপে আহ্বান করা হয়। কথিত আছে, এই দিনেই নাকি সাধক শ্রেষ্ঠ বামাক্ষ্যাপা তাঁর ‘বড় মা’ অর্থাৎ ‘তারা দেবী’র দর্শন পেয়ে ছিলেন এবং এই তিথিতেই তারাপীঠের মহাশ্মশানের শ্বেতশিমূল গাছের তলায় বসে সাধনা করে সিদ্ধিলাভ করেছিলেন তিনি।
বলা হয়, এই দিনে কোনও ভক্ত ‘তারা দেবী’কে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করলে তার মনঃস্কামনা পূর্ণ হয়।প্রতিবছরই কৌশিকী অমাবস্যারা দিনে বীরভূমের তারাপীঠ মন্দিরেও ‘মহাকালী’র আহ্বান করা হয়।
এবং দেবী তারার বিশেষ পুজো করা হয়।
কথিত রয়েছে কৌশিকী অমাবস্যায় বিভিন্ন তন্ত্র এবং গুপ্ত সাধনা করলে, মেলে আশাতীত ফলাফল। এছাড়া বৌদ্ধ মতেও এই দিনের আলাদা গুরুত্ব রয়েছে। অনেকেই এই কৌশিকী অমাবস্যার রাতকে ‘তারা রাত্রি’ বলে থাকেন। বলা হয়, তন্ত্রের ধনাত্মক ও ঋণাত্মক শক্তি দিয়ে এই রাতে সাধক চাইলে স্বর্গ ও নরক যেকোনও দিকেই যেতে পারেন। তবে তা নির্ভর করে তাঁর সাধনার ওপর।
এই তিথি তন্ত্র ও জ্যোতিষ জগতের জন্যে অত্যান্ত তাৎপর্য পূর্ণ তিথি|যারা বিভিন্ন গ্রহগত দোষের ফলে জীবনে পিছিয়ে পড়ছেন|চাকরি ব্যবসা শিক্ষা ও শরীর সংক্রান্ত সমস্যায় ব্যাতিব্যাস্ত তারা যদি তন্ত্র ও শাস্ত্র মতে গ্রহ দোষ খণ্ডন করিয়ে সমস্যার সমাধান চান তাহলে কৌশিকী অমাবস্যা তাদের জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ সময়।
দেবী কৌশিকী যেমন এই তিথিতে অবির্ভুতা হয়ে অসুরদের নাশ করেছিলেন তেমনই এই তিথিতে বিশেষ হোম যজ্ঞ এবং পুজো পাঠের মাধ্যমে করা গ্রহের প্রতিকার সব অশুভ প্রভাবকে নাশ করে জীবনের সব বাঁধা বিপত্তি দুর করতে সক্ষম।
ফিরে আসবো আগামী পর্বে। থাকবে আরো একটি বিশেষ পর্ব। চলত থাকবে আধ্যাত্মিক এবং শাস্ত্রীয় আলোচনা। পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।