শ্রাবনী অমাবস্যা ও কালসর্প দোষ

668

বৈদিক জ্যোতিষ শাস্ত্র গণিত,আধ্যাত্মিকতা ও জ্যোতির্বিজ্ঞানের এক অপূর্ব সংমিশ্রনে সৃষ্টি যা মানুষের জীবনের উপর গ্রহ নক্ষত্রর প্রভাব নির্নয় করে|স্বাভাবিক ভাবেই গ্রহ নক্ষত্রর অবস্থান ও মহাজাগতিক কিছু ঘটনা জ্যোতিষ শাস্ত্রের সাথে ওতপ্রোত ভাবে জড়িত|তেমনি দুটি তিথি বা গ্রহগত অবস্থান হলো অমাবস্যা ও পূর্ণিমা|সামনেই শ্রাবনী অমাবস্যা যা একটি বিশেষ কারনে জ্যোতিষ শাস্ত্রে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে|সে বিষয়ে পরে আসছি আগে এই অমাবস্যা ও পূর্ণিমা ব্যাপার টা একটু সহজ করে বুঝে নেয়া যাক|

পূর্ণিমা চন্দ্রের একটি কলা। এটি তখনই ঘটে যখন চাঁদ, পৃথিবীর যে পাশে সূর্য অবস্থিত তার ঠিক উল্টো পাশে অবস্থান করে|এর ফলে আমরা পূর্ণালোকিত চন্দ্র কে দর্শন করি|
আর অমাবস্যা হচ্ছে চন্দ্রকলার প্রথম ধাপ। এটি মূলত সেই সময় যখন চাঁদ ও সূর্য একই বরাবর থাকে। ফলে, পৃথিবী থেকে চাঁদকে তার কক্ষপথে দেখা যায় না|এই দুটি তিথির বিশেষ গুরুত্ব আছে আমাদের তন্ত্র ও জ্যোতিষ শাস্ত্রে|

শ্রাবন মাস চলছে, এই শ্রাবন মাসের অমাবস্যা কে বলা হয় শ্রাবনী অমাবস্যা|দেশের অনেক স্থানে এই অমাবস্যা কে হরিয়ালি অমাবস্যাও বলা হয়|আগামী 19 এ জুলাই অর্থাৎ রবিবার রাত 11:29 থেকে শুরু হবে শ্রাবনী অমাবস্যা|চলবে পরদিন অর্থাৎ সোমবার বার 20 এ জুলাই রাত 10:56 অবধি |এই শ্রাবনী অমাবস্যা বা হরিয়ালি অমাবস্যা দুটি কারনে জ্যোতিষ শাস্ত্রে বা আধ্যাত্মিক দৃষ্টি ভঙ্গী থেকে বেশ গুরুত্বপূর্ণ, প্রথমত এ দিন শ্রাদ্ধ ও তর্পনের মাধ্যমে পিতৃ দোষ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়, দ্বিতীয়ত এই তিথীতে বিশেষ পূজা ও যজ্ঞর মাধ্যমে কাল সর্প দোষ খণ্ডন করা হয়|এবার আসুন কি এই কালসর্প দোষ আর কেনোই বা তা খণ্ডন প্রয়োজন|

কোনও ব্যক্তির জন্মকুণ্ডলিতে রাহু ও কেতুর অবস্থান বিন্দু দু’টির মাঝখানে যদি বাকি গ্রহগুলি আটকে পড়ে, তাঁর কালসর্পযোগ ঘটেছে ধরে নিতে হবে|জ্যোতিষ শাস্ত্রে কালসর্প যোগকে ভয়াবহ বলে বর্ণনা করা হয়েছে|এই দোষে দুষ্ট জাতক জাতিকারা জীবনে পদে পদে নানান বাঁধা ও প্রতিকূল পরিস্থিতির সম্মুখীন হন|সাফল্য আসতে চায়না সহজে|এমনকি কুন্ডলি তে কোনো ভালো যোগ থাকলে তার শুভ ফল পাওয়াও কঠিন হয়ে পড়ে|

রাহু ও কেতুর অবস্থান অনুসারে মোট বারো রকমের কালসর্প দোষ রয়েছে জ্যোতিষ শাস্ত্রে|এগুলি হলো – অনন্ত কাল সর্প দোষ, কুলিক কালসর্প দোষ,বাসুকি কালসর্প দোষ,শঙ্খপাল কালসর্প দোষ,পদ্ম কালসর্প দোষ,মহাপদ্ম কালসর্প দোষ,তক্ষক কালসর্প দোষ,কর্কটক কালসর্প দোষ,শঙ্খচূড় কালসর্প দোষ,ঘটক কালসর্প দোষ,বিষধর কালসর্প দোষ এবং শেষনাগ কালসর্প দোষ|এদের প্রতিটির প্রভাব অশুভ এবং জীবনের ভিন্ন ভিন্ন ক্ষেত্রে প্রতিকূলতার সৃষ্টি করে|

সমস্যা যেমন আছে তার সমাধান ও আছে প্রয়োজন শুধু সঠিক জ্যোতিষ পরামর্শ ও প্রতিকার বিধান আর অবশ্যই উপযুক্ত তিথি মেনে তা করলে জীবনের সব বাঁধা কে অতিক্রম করে সাফল্য আসতে বাধ্য|কালসর্প হোক বা অন্য কোনো দোষ, ভয় পাবেননা|আসন্ন শ্রাবনী অমাবস্যা কে কাজে লাগান|আর কিভাবে তা সম্ভব তাবলে দেয়ার জন্য আমি আছি আমার তিন দশকের বেশি জ্যোতিষ চর্চার অভিজ্ঞতা নিয়ে|আর দেরি করবেন না, হাতে সময় খুব কম|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|