কালী কথা – শকুন্তলা কালী
পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক
স্বপ্নাদেশে পেয়ে শুরু হয়েছিল কোন্নগরে শকুন্তলা কালী পুজো । প্রায় দেড়শো বছর ধরে
আজও হয়ে আসছে সেই পুজো।
আজকের পর্বে শকুন্তলা কালী।
লোকশ্রুতি আছে শ্রী চৈতন্যদেব প্রায় ৫৩৪ বছর আগে পানিহাটিতে এসেছিলেন রাঘব পন্ডিতের টোলে ।তখন তিনি গঙ্গাস্নান করে উল্টো দিকে জনপথ দেখতে পান। তখন তিনি প্রশ্ন করেন উহা কোন নগর এরপরেই নাকি কোন্নগরের নামকরণ হয়েছিল। সেই সময়ে কোন্নগরে তেমন মানুষের বাস ছিল না।চক্রবর্তী পরিবার ছিলো এই অঞ্চলের আদি বাসিন্দাদের অন্যতম।
এই পরিবারের পূর্বপুরুষ ইন্দ্রনাথ চক্রবর্তী পুজো করে ফেরার পথে এক রাতে তিনি দেখতে পান সাদা কাপড় পরে খোলা চুলে কোন এক রমণী রাতের অন্ধকারে হেঁটে আসছিলেন। তাঁকে অনুসরণ করে পূজারী খানিক দূর আসতেই দেখতে পান সুন্দরী রমণী এক ভাগাড়ের মধ্যে থাকা অশ্বত্থ গাছের নিচে এসে বিলীন হয়ে গেলেন। ওইদিন রাতেই ওই পূজারীকে দেবী স্বপ্নাদেশ দেন, ভাগাড়ের সেই অশ্বত্থ গাছের নিচে যেখানে শকুনের বাসা রয়েছে তার তলায় দেবীর ঘট স্থাপন করে পুজো করার জন্য। তারপর
অশ্বত্থ গাছের শকুনের বাসার নিচে হোগলা পাতা তালপাতার মণ্ডপ সাজিয়ে শুরু হয় দেবীর আরাধনা।খুব সম্ভবত শকুনের বাসস্থানে এই কালীর পুজো শুরু হয় তাই লোকমুখে নাম হয় শকুন্তলা কালী।
এখানে পুজোর দিন। সূর্য অস্ত যাওয়ার পরে কাঁধে করে দেবীকে নিয়ে আসা হবে তার বেদীতে। আবারো সূর্য ওঠার আগেই শকুন্তলা কালী মায়ের বিসর্জন হয়।
কয়েকশো বছরের প্রাচীর এই পুজোকে ঘিরে প্রচুর ভক্তের সমাগম ঘটে মন্দির চত্বরে। প্রতিবছর বাংলা বৈশাখ মাসের কৃষ্ণপক্ষের দ্বিতীয় অথবা তৃতীয় শনিবার এই পুজো আয়োজন করা হয়। পুজোর দিন রাতভর চলে গঙ্গাস্নান।
আবার আগামী পর্বে কালী কথা নিয়ে ফিরে আসবো আপনাদের জন্য থাকবে অন্য একটি কালী মন্দিরের ইতিহাস এবং
অলৌকিক ঘটনা। পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।