কালী কথা – মিত্র বাড়ির কালী পুজো
পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক
আজ কালী কথায় আপনাদের উত্তরি কলকাতার অন্যতম পুরোনো এবং প্রসিদ্ধ বনেদি বাড়ি মিত্র বাড়ির শতাব্দী প্রাচিন কালী পুজোর কথা লিখবো।
আজ যে রাস্তার নাম নীলমণি মিত্র লেন।
সেই রাস্তার পাশেই আছে মিত্র বাড়ি।নীল মণি মিত্র বাড়িরই এক কৃতি সন্তান ছিলেন তার নামেই এই রাস্তার নাম।
বাড়ির গৃহ মন্দিরে রয়েছে ছোট্ট কালী প্রতিমা। খেয়াল করলেই দেখা যাবে কালী দাঁড়িয়ে শিবের বুকের ওপর, বাঁ পা এগিয়ে।যদিও দক্ষিনা কালী রূপেই কালী পুজো হয়। তবে কেনো এমন রূপ? তার পেছনে একটা গল্প আছে।
এই বংশের অন্যতম প্রাণ পুরুষ প্রাণকৃষ্ণ মিত্র তার শৈশবে অন্যান্য মৃৎশিল্পী বন্ধুদের সঙ্গে খেলার ছলে একদিন কালী প্রতিমা তৈরি করেন। বাঁ পা এগিয়ে রাখলেন।এই কালী দক্ষিণাকালিকার মতোই পূজিত হন এখনও। পরিবর্তন হয়নি আকারে। দক্ষিনা কালী হলেও বাঁ পা আগে আছে।
শুরুতে অবস্থা ভাল ছিল না মিত্র দের তাই প্রথম পুজোয় ঢাক বাজেনি । কালী পুজো শুরু হওয়ার পর মিত্র দের অবস্থার দ্রুত পরিবর্তন হয়। কলকাতার অন্যতম ধনী এবং বিখ্যাত
পরিবারে উত্তীর্ণ হয় মিত্র রা তবে এখনও মিত্র বাড়ির কালী পুজোয় ঢাক বাজে না।এটাই
নিয়ম হয়ে গেছে।
বর্তমানে কালী পুজোর বয়স দুশো বছরের বেশি।
কালীপুজোয় কালীকে নিবেদন করা হয় একশো আটটি অপরাজিতা।আগে বলিপ্রথা
থাকলেও এখন আর নেই।শোনা যায় একবার পুজোর সময়ে বলির ছাগশিশু রাজকৃষ্ণ মিত্রর পায়ের কাছে চলে আসে, তারপর থেকে তারপর থেকে বলি প্রথা বন্ধ হয়।
এক সময়ে বহু প্ৰখ্যাত মনীষীর আনাগোনা ছিলো এই বাড়িতে। কালী পুজো দেখতে আসতেন শহরের বহু বিখ্যাত ব্যাক্তি। মিত্র বাড়ির কালী পুজোর সাথে জড়িয়ে আছে স্বয়ং সাধক রামপ্রসাদের স্মৃতি।
বাংলার এমন আরো বনেদি বাড়ির ঐতিহাসিক কালী পুজোর কথা থাকবে আগামী দিনে।
ফিরে আসবো কালী কথার পরবর্তী
পর্বে।পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।