কালী কথা – পাশকুড়ার ডাকাত কালীর পুজো

275

কালী কথা – পাশকুড়ার ডাকাত কালীর পুজো

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

আজ কালী কথার এই পর্বে আপনাদের পাশকুড়ার আড়াইশো বছরের বেশি পুরোনো

শ্রী শ্রী শ্মশান কালী মায়ের পুজোর ইতিহাস জানাবো। এই পুজোকে অবশ্য অনেকে

বেগুনবাড়ি কালী পুজো বলেও জানে।

 

এই এলাকায় কান পাতলে আজও শোনা যায় একটি প্রচলিত লোককাহিনী। এই কাহিনী অনুসারে এখানকার রাজা রাজনারায়ণ রায়ের প্রধান কুস্তিগীর ছিলেন হিনু দিনু নামে দুই ভাই। এই দুই ভাই ছিলেন অতি দরিদ্র তবে খুব বীর এবং সাহসী যে সময়ের কথা সেই সময়ে, কলেরার কোন চিকিৎসা ছিল না। কলেরার প্রকোপে গ্রামের পর গ্রামের মানুষ মারা যেত। একসময় এই এলাকায় সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়লে হিনু এবং দিনু দুজনেই কলেরা আক্রান্ত হয়ে খুব অসুস্থ হয়ে পড়েন। বাঁচার আশা যখন প্রায় নেই তখন

তারা দেবী কালীর কাছে প্রার্থনা করেছিলেন  এবং তার পূজা করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আরোগ্য কামনা করেছিলেন। বেশ কিছু দিন পর প্রায় অলৌকিক ভাবেই দুই ভাই সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠেন।

 

তবে মন্দির তৈরি বা পূজার ব্যবস্থা করার সামর্থ্য তাদের ছিল না। অন্য উপায় না দেখে শেষে এই দুই ভাই তাদের প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে ডাকাতি শুরু করেন এবং ডাকাতি করে অর্থ উপার্জন করে মায়ের পুজোর সাথে সাথে একটি মন্দিরও তৈরি করেন।

 

সেই সময়ে এখানকার বেগুন ছিলো বিখ্যাত এবং প্রচুর বেগুন চাষ হতো চারপাশে ফলতো এই বেগুন বাড়ি নামেও পরিচিত ছিলো সেই সময়ে তাই কালী মন্দিরের নাম হয়

বেগুনবাড়ি কালী মন্দির।

 

ডাকাতরা যখন এখানে পুজো করতো তখন

নর বলীর কথা শোনা গেলেও বর্তমানে ছাগ বলি প্রথা চালু রয়েছে আগত তীর্থযাত্রী গণ তাদের মানত পূরণের জন্য হাজার হাজার ছাগল বলি দেন এবং বহু মানুষ বিশ্বাস করেন বেগুন

বাড়ির মা কালী সবার মনোস্কামনা পূর্ণ করেন।

প্রতি বছর কালী পুজো এবং অন্যান্য অমাবস্যায় অসংখ্য তীর্থযাত্রী জড়ো হন।

 

এমন বহু জাগ্রত এবং প্রাচীন কালী মন্দির আছে বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে। তাদের নিয়ে আছে অসংখ্য গল্প এবং অলৌকিক ঘটনা। সেসব নিয়ে চলতে থাকবে কালী কথা। পড়তে থাকুন।

ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।