কালী কথা – লেক কালী বাড়ির ইতিহাস

33

কালী কথা – লেক কালী বাড়ির ইতিহাস

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

ফল হারিণী অমাবস্যা আমাদের তন্ত্র এবং জ্যোতিষ জগতে এক অতি গুরুত্বপূর্ণ তিথি। এই তিথিতে দেবী ফল হারিণী রূপে আমাদের কৃপা করেন এবং তার কৃপায় কর্ম ফল খণ্ডন হয়। পবিত্র এই সময়ে কালী কথা বলার এবং শোনার আলাদা মহাত্ম আছে।আজ কালী কথায় আপনাদের কলকাতার অন্যতম প্রসিদ্ধ কালী মন্দির লেক কালী বাড়ির ইতিহাস আপনাদের জানাবো।

 

আমি যদি বলি শ্রীশ্রী ১০৮ করুণাময়ী

কালীমাতা মন্দির অনেকেই হয়তো বুঝবেন না আমি কোন মন্দিরের কথা বলছি কিন্তু যদি লেক কালী বাড়ি বলি এক ডাকে সবাই চিনবেন|কারন ওই নামেই এই মন্দির বেশি পরিচিত যদিও পোশাকি নাম শ্রীশ্রী ১০৮ করুণাময়ী

কালীমাতা মন্দির|

 

টালিগঞ্জ এর রবীন্দ্র সরোবর বা বিখ্যাত ঢাকুরিয়া লেক সংলগ্ন সাউদার্ন এভিনিউ এর পাশেই রয়েছে কলকাতারই এই প্রাচীন কালী মন্দির বা লেক

কালীবাড়ি|

 

সময়ের নিরিখে খুব বেশি প্রাচীন না হলেও কলকাতার পুরনো কালী মন্দির গুলির মধ্যে এই মন্দির নিঃসন্দেহে অন্যতম| স্বাধীনতার ঠিক দুবছর পর অর্থাৎ হাজার 1949 সালে স্থানীয় তন্ত্রসাধক হরিপদ চক্রবর্তী এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন| শোনা যায় তন্ত্র সাধক হরিপদ চক্রবর্তী দেবীর স্বপ্নাদেশ পেয়ে এই স্থানে একটি পর্ণকুটির নির্মাণ করে দেবী মূর্তি প্রতিষ্ঠা করেন এবং পুজো শুরু করেন| পরবর্তীতে লোকমুখে ছড়িয়ে পরে এই দেবীর মাহাত্ম্য এবং ধীরে ধীরে সেই ছোট্ট কালী মন্দির আজকের মন্দিরের রূপ নেয়|

 

এই মন্দিরের প্রতিষ্ঠিত কালীমূর্তিটির নাম করুণাময়ী কালী|হরিপদ চক্রবর্তী এই মন্দিরে একটি পঞ্চ মুন্ডির আসন প্রতিষ্ঠা করে তন্ত্র সাধনা করতেন|নর মুন্ড দিয়ে নির্মিত সেই পঞ্চ মুন্ডির আসন আজও এখানে স্বজত্নে রক্ষিত রয়েছে|জনশ্রুতি অনুসারে সাধক হরিপদ চক্রবর্তী মা কালীর দর্শন লাভ করে ধন্য হয়েছিলেন|

 

বর্তমান মন্দির ভবনটি বছর দশেক আগে নতুন ভাবে সংস্কার করা হয়|মন্দিরে কালী মূর্তির পাশাপাশি রয়েছে মা সন্তোষী, বগলা ও ধূমাবতীর মূর্তি যা এই শহরতলীতে আর বড়ো একটা চোখে পড়েনা।

 

প্রতি শনি বার ও মঙ্গলবার বিশেষ পূজা উপলক্ষে বহু মানুষের ভিড় হয় এখানে|বিশেষ বিশেষ তিথি তে দেবীর স্বর্ণ বেশও হয়|দীপান্বিতা অমাবস্যা বা কালীপুজো উপলক্ষে প্রতি বছর ব্যাপক

ভক্ত সমাগম হয় এই মন্দিরে|আজও তন্ত্র মতে সমস্ত উপাচার মেনে নিষ্ঠা সহকারে পুজো হয়।

শোনা যায় বহু মানুষের বহু মনোস্কামনা পূর্ণ হয়েছে এখানে এসে।

 

বাংলার আধ্যাত্মিক ঐতিহ্য অতি প্রাচীন এবং গভীর তার তাৎপর্য।রয়েছে অসংখ্য কালী মন্দির এবং তাদের ঘটনা বহুল ইতিহাস।ধারাবাহিক ভাবে

সেই সব নিয়ে আলোচনা করবো। পড়তে থাকুন।

ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।