বিশেষ পর্ব – হনুমানজির পঞ্চমুখী রূপ 

47

বিশেষ পর্ব – হনুমানজির পঞ্চমুখী রূপ

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

পবনপুত্র হনুমানজীর জীবনের নানা ঘটনা নিয়ে ধারাবাহিক আলোচনায় আজকের এই পর্বে জানাবো হনুমানজির পঞ্চমুখী রূপের ব্যাখ্যা এবং এই বিশেষ রূপ ধারণের কারন|

 

কেনো বজরংবলী কে পঞ্চ মুখী রূপে অবতীর্ন হতে হয়েছিলো তার উত্তর রামায়নেই রয়েছে।

প্রভু শ্রীরাম এবং রাবণের যুদ্ধ চলাকালীন পরাজয় এড়াতে রাবণ তাঁর ভাই অহিরাবনের নের কাছে সাহায্য চেয়েছিলেন।অহিরাবন ছিলেন পাতালের রাজা। রাবণের ভাই অহিরাবন তার মায়ার মধ্য দিয়ে প্রভু শ্রীরামের সেনাকে ঘুমের মধ্যে ফেলে শ্রী রাম এবং লক্ষ্মণকে বন্দী করে করে পাতালে নিয়ে যান।

 

হনুমানজি রাম ও লক্ষণকে উদ্ধার করতে পাতাল লোকে গিয়ে দেখলেন সেখানে পাঁচটি মোবাতির পাঁচটি শিখা জ্বলছে এই শিখা গুলোই অহিরাবনের শক্তির উৎস|এই সময় হনুমান পঞ্চমুখী রূপে অবতীর্ন হন।পঞ্চমুখ অবতারে হনুমান তার পাঁচটি মুখ দিয়ে একসাথে সেই পাঁচটি মোমবাতি নেভান শক্তি হীন অবস্থায় রাবণের ভাই অহিরাবননকে যুদ্ধে পরাজিত এবং হত্যা করে ভগবান শ্রী রাম এবং লক্ষ্মণকে উদ্ধার করে আনেন। সংক্ষেপে

এই হলো পঞ্চমুখী রূপে অবতীর্ন হওয়ার কারন|

 

ভারতীয় জ্যোতিষ শাস্ত্র, বাস্তু শাস্ত্র এবং আধ্যাত্মিক জগতে হনুমানের এই রূপের গুরুত্ব অপরিসীম।পাঁচটি মুখের রয়েছে নিদ্দিষ্ট নাম ও ব্যাখ্যা।পঞ্চমুখি রূপের পুজোর আলাদা তাৎপর্য আছে। মনে করা হয় গৃহে বজরংবলীর পঞ্চমুখি রুপ থাকলে নানাবিধ বিপদ দূর হয়।

 

প্রথম মুখটির নাম শ্রী হনুমান  –

 

এই মুখের তাৎপর্য হ’ল এই মুখটি পাপের ফল থেকে রক্ষা করে এবং মনের বিশুদ্ধতা দেয়।

 

দ্বিতীয় মুখটির নাম নরসিংহ  –

 

এই মুখের তাৎপর্য হ’ল এই মুখটি শত্রুদের ভয়কে সরিয়ে দেয় এবং বিজয় দেয়। নরসিংহ হলেন ভগবান বিষ্ণুর অবতার, যিনি তাঁর ভক্ত প্রহ্লাদকে তাঁর দুষ্ট পিতা হিরণ্যকশিপু থেকে রক্ষা করার জন্য এই রূপ নিয়েছিলেন।

 

তৃতীয় মুখটির নাম গরুড় –

 

এই মুখের তাৎপর্য হলো এই মুখটি অশুভ শক্তি, নেতিবাচক প্রভাব দূরে সরিয়ে দেয়

গরুড় হলেন ভগবান বিষ্ণুর বাহন।

 

চতুর্থ মুখটির নাম বরাহ –

 

এই মুখটিও বিষ্ণুর অবতার স্বরূপ। এই মুখটি সুখ ও সমৃদ্ধি দান করে এবং মনকে শান্ত রাখে|

 

পঞ্চম মুখটি হয়গ্রিব –

 

এই মুখটি ঘোড়ার আকৃতি বিশিষ্ট |এই মুখ শক্তি ও জ্ঞান দান করে ও আধ্যাত্মিক উন্নতি ঘটায় |

 

রূদ্র অবতার হনুমান কল্যানের দেবতা হিসাবে বিবেচিত হন।শাস্ত্র মতে পঞ্চমুখী হনুমানজি তাঁর ভক্তদের সমস্ত দুর্ভোগকে নষ্ট করে দেন এবং নিয়মিত তার আরাধনা অপার ঐশ্বর্য ও সমৃদ্ধি প্রদান করে|

 

পবন পুত্র হনুমানকে প্রনাম জানিয়ে শেষ করছি আজকের এই পর্ব|চলতে থাকবে বজরংবলীকে নিয়ে ধারাবাহিক আলোচনা। দেখা হবে আগামী পর্বে। পড়তে থাকুন।

ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।