চড়ক এবং গাজন উৎসবের ইতিহাস

165

চড়ক এবং গাজন উৎসবের ইতিহাস

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

বাঙালির নব বর্ষের সূচনা হয় গাজন এবং চড়ক উৎসবের মধ্যে দিয়ে। এই গাজন এবং চড়ক দুটি বেশ প্রাচিন কাল থেকেই বঙ্গদেশে প্রচলিত। শিব পার্বতী ছাড়াও বহু লৌকিক দেব দেবী এই উৎসবে মিলে মিশে একাকার হয়ে গেছে।

 

কেউ বলেন গর্জন থেকে গাজন, কেউ বলেন ‘গাঁয়ের জন’-এর উৎসব থেকে গাজন।প্রকৃত অর্থ যাই হোক দুটি অর্থই বেশ মানানসই।কারন এককালে ঢাকের বাদ্যি, ভোলা মহেশ্বরের নামে সন্ন্যাসীদের গর্জন ও গাজনগীতিতে আকাশ-বাতাস মুখরিত হয়ে উঠতো বাঙালি মেতে ওঠে গাজন উৎসবে।পরবর্তী শহর অঞ্চলে

এই উৎসব কিছুটা জৌলুস হারালেও আজও গ্রাম গঞ্জের মানুষের কাছে পয়লা বৈশাখী আমেজ মানেই গাজন এবং চড়ক উৎসব।

 

চৈত্র মাস হল শিব-পার্বতীর বিবাহের মাস। এই মাসেই তাই গাজনের ধুম। এই গাজনের মাধ্যমে শিব ভক্তরা তাদের আরাধ্য মহাদেব কে এবং দেবী পার্বতীকে স্মরণ করেন।গাজনের শেষ দিনের অনুষ্ঠান চড়ক যা এই উৎসবেরই একটি অঙ্গ।

 

এককালে কলকাতার বাবুরা ঘটা করে চড়ক উৎসব পালন করতো।বাগবাজারের এই চড়ক ছিল কলকাতার বিখ্যাত ও সর্বপ্রধান চড়ক। চড়ক গাছের সঙ্গে উপর উপর চারটি মাচান বেঁধে তার মাঝখানে এক জন করে মহাদেব সাজিয়ে চার কোণে চার জন করে মোট ষোলো জনকে পিঠ ফুঁড়ে ঝুলিয়ে দেওয়া হত। পিছিয়ে ছিলোনা জেলা গুলির। কোথাও মুখোশ নাচ কোথাও সন্ন্যাসীদের কঠিন সাধনার মাধ্যমে এই উৎসব পালিত হতো।

বিশেষ করে উত্তর বঙ্গে গম্ভীরা রূপে পালন হতো এই উৎসব।

 

পরবর্তীতে শারীরিক নৃশংসতার কারণে কোথাও কোথাও গাজনের কিছু উপাচার নিষিদ্ধ হয়। তবে সন্ন্যাসীদের নিষ্ঠা এবং ভক্তি অটুট থাকে। আজও বাংলা জুড়ে গাজন এবং চড়কের মেলা বসে।আনন্দ এবং উৎসাহ আগের মতোই আছে।

 

আপনাদের সবাইকে জানাই গাজন এবং চড়ক উৎসবের অনেক শুভেচ্ছা এবং শুভ নববর্ষ। ভালো থাকুন। সঙ্গে থাকুন। ফিরে আসবো আগামী পড়বে। পড়তে থাকুন।

ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।