একান্ন পীঠ – ক্ষীর ভবানী

83
পুরান মতে কাশ্মীরে পড়েছিল দেবীর কণ্ঠ যদিও ঠিক কোন স্থানে দেবীর শিলারূপ অঙ্গ অবস্থান করছে তা নিয়ে মতভেদ আছে। কাশ্মীরে অবস্থিত অমরনাথ, সারদা পীঠ এবং ক্ষীর ভবানী এই তিনটি মন্দিরকেই শক্তি পীঠের মর্যাদা দেয়া হয়।
যদিও দেবীর অঙ্গ সারদা পীঠে পড়ে ছিলো বলেই মনে করা হয় আমার আজকের আলোচ্য বিষয় সারদা পীঠ এবং ক্ষীর ভবানী।
দেবী এখানে ভগবতী এবং তার ভৈরব স্বয়ং অমরনাথ যদিও কোনো কোনো শাস্ত্রে দেবীর ভৈরব রূপে ত্রিসন্ধ্যেশ্বর এর নাম আছে।
সারদা পীঠ সম্পর্কে জানা যায় ঋষি পুলস্থ্য এই স্থানে সরস্বতী বন্দনা করে ছিলেন এবং দেবী তাকে দর্শন দিয়ে ছিলেন বলে একাধিক শাস্ত্রে উল্লেখ আছে। আবার মাতঙ্গ ঋষি কাশ্মীরের এই স্থানে সাধনা করে ছিলেন এবং দেবী দূর্গা কালী এবং সরস্বতী ত্রিশক্তি রূপে তাকে দেখা দিয়ে ছিলেন। তীর্থে ভ্রমণরত আদি শংকরাচার্য্য এই স্থানে এসে দেবীর স্তব করেছিলেন বলেও ইতিহাস থেকে জানা যায়।
সারদা পীঠ সংলগ্ন ক্ষীর ভবানী মন্দিরটি ও অনেকের কাছে দেবীর শক্তি পীঠের অঙ্গ।
অতি প্রাচীন এই মন্দির সম্পর্কে বলা হয় দেবী এক সময়ে লঙ্কায় থাকতেন রাবণ যখন মা সীতার অপহরণ করেছিলেন তখন দেবী ক্ষোভে ফেটে পড়েন আর নিজের স্থান ছেড়ে দেন। এরপর পবন পুত্র হনুমানকে নিজের মূর্তিকে লঙ্কা থেকে অনেক দূরে নিয়ে যেতে বলেন তিনি। তখন দেবীর আজ্ঞা পালন করে হনুমান মায়ের মূর্তি এখানে স্থাপনা করেন।সেই থেকে দেবী ভবানী এই মন্দিরেই বিরাজ করছেন।
অতীতে কাশ্মীর শাসন করতেন হরি সিংহের মতো হিন্দু রাজারা তারাই এই মন্দির নির্মাণ, মন্দির সংস্কার, রক্ষনাবেক্ষন এবং পুজোর দায়িত্ব পালন করতেন।
এক সময় সব স্থান ছিলো খুবই দুর্গম। সেই দুর্গম পথ অতিক্রম করে শুক্লা অষ্টমী তিথিতে যখন দেবী মন্দিরে বিশেষ পুজো হতো তখন অসংখ্য ভক্ত এই কষ্টসাধ্য পথ পেরিয়ে দেবী ভবানীর কাছে আসতেন। বেশি ভাগ তীর্থ যাত্রী এক সাথে অমরনাথ, সারদা পীঠ এবং ক্ষীর ভবানী মন্দির দর্শন করতেন।সেই পরম্পরা আজও চলছে।
ফিরে আসবো আগামী পর্বে। সাথে নিয়ে অন্য
এক শক্তি পীঠের ইতিহাস এবং পৌরাণিক ব্যাখ্যা নিয়ে। দেখতে থাকুন।