একান্ন পীঠ – দেবী শিবানী

103
আজকের একান্ন পীঠ পর্বে মধ্যপ্রদেশের নাগ পুরের কাছে রামগিরিতে চিত্রকুট পর্বতে অবস্থিত শক্তি পীঠ শিবানী নিয়ে লিখবো।
পুরান অনুসারে এই স্থানে সতীর ডান বক্ষ পড়েছিল।আবার মতান্তরে এই স্থানে পড়েছিলো দেবীর জানু দেশ।এখানে অধিষ্ঠিত দেবীর নাম শিবানী এবং ভৈরব হলেন চন্ড।
ভরতচন্দ্রের অন্নদা মঙ্গল, বাল্মীকি রামায়ণ,কালীকা পুরানে সহ একাধিক প্রাচীন
গ্রন্থে এই শক্তি পিঠের উল্লেখ আছে।
রাম, সীতা এবং লক্ষণ যখন তাদের চোদ্দ
বছরের বনবাস কাটাচ্ছিলেন, তার মধ্যে সাড়ে এগারো বছর সময় অতিবাহিত করে ফেলেছিলেন এই শক্তি পীঠ সংলগ্ন চিত্রকূট পাহাড়ে।
সেই মহাভারতের সময়ে শ্রীকৃষ্ণের নির্দেশে অর্জুন
রামগিরি পর্বতে এসে সাধনা করেছিলেন এবং দেবী যোগ মায়া তাকে দেখা দিয়ে নিজের দিব্য শীলরূপটি কোথায় আছে তার নির্দেশ দেন। তারপর অর্জুন নিজে মাটি খুঁড়ে মাতা শিবানীকে শীলা রূপে উদ্ধার করে এই স্থানে মন্দির বানিয়ে স্থাপন করেন এবং তার অনুপস্থিতি তে স্থানীয় ফুলবাহক দের দেবীর নিত্য পুজোর আদেশ দেন।
এক সময় এই প্রাচীন মন্দির কালের নিয়মে
ধ্বংস হলে রাজা দ্বিতীয় রঘুজি ভোসলে নতুন ভাবে দেবী শিবানীর মন্দির বানিয়ে দেন।
বর্তমানে সাদা পাথরের তৈরি এই মন্দিরে দেবী শিবানীর শীলা রূপ টি কষ্টি পাথর এবং রুপো দিয়ে ঢাকা তার পাশাপাশি বহু দেবদেবীর মূর্তি খোদাই করা আছে। অনেকগুলি সিঁড়ি পেরিয়ে তারপরে একেবারে মন্দিরের প্রধান ফটকে উঠে আসতে হয়। তারপর এই মন্দিরের মূল অংশ শুরু হয়।
যাত্রাপথ বেশ দুর্গম এবং কষ্টসাধ্য।
অশ্বিন ও চৈত্র মাসের একটি বিশেষ সময়ে এখানে বিশেষ পুজো হয় এবং সেই সময়ে মায়ের প্রকৃত রূপ ভক্তরা দেখতে পান।
আবার ফিরে আসবো আগামী পর্বে।সাথে নিয়ে অন্য এক শক্তি পীঠের কথা। পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন।ধন্যবাদ।