কালী কথায় বাংলা তথা কলকাতার বহু বিখ্যাত কালী মন্দিরের কথা ইতিমধ্যে বলেছি।আজ কলকাতার বেলগাছিয়া অঞ্চলে অবস্থিত এক প্রসিদ্ধ কালী মন্দিরের নিয়ে লিখবো যা
তারাশঙ্করী পীঠ নামে বিখ্যাত|
পুরানে উল্লেখিত শক্তি পীঠ নাহলেও তারাপীঠের মতো এটিকেও একটি সিদ্ধপীঠ রূপে দেখা হয়। ১৯৫২ সালে মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেন যোগী মহারাজ পরেশচন্দ্র রায় মৌলিক এবং তন্ত্রমতে মায়ের আরাধনা শুরু করেন ।
আজও লোক মুখে এক অদ্ভুত ঘটনার উল্লেখ পাওয়া যায় এই মন্দির কে কেন্দ্র করে।
শোনা যায় অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী যোগী মহারাজ পরেশচন্দ্র রায় মৌলিক। তিনি ভবিষ্যত দেখতে পারতেন|একবার তৎকালীন কংগ্রেস নেতা গনি খান চৌধুরী মন্দিরে এসেছিলেন তখন মাতৃ সাধক ভবিষ্যদ্বাণী করে বলেছিলেন, সাংসদ হিসেবে নির্বাচিত হলে রেলমন্ত্রকের দায়িত্ব পাবেন তিনি।পরবর্তীতে বাস্তবে হয়েছিল ঠিক তেমনটাই।
এসবই অবশ্য জনশ্রুতি যার সত্যতা প্রমান করা কঠিন।
বহু প্রাচীন কাল থেকে একটি অদ্ভুত রীতি পালিত হয় এই মন্দিরে|মন্দির প্রতিষ্ঠার সময় বারাণসীর মণিকর্নিকা মহাশ্মশান থেকে এক সধবার চিতার আগুন আনা হয় এখানে সেই থেকে আজ পর্যন্ত জ্বলছে চিতার আগুন|অত্যন্ত পবিত্র অগ্নি রূপে এই আগুন কে শ্রদ্ধা করা হয় এই মন্দিরে|
মা তারার পাশাপাশি এই মন্দিরের পূজিত হন যশমাধব তার মূর্তি নিমকাঠের তৈরি যা আনা হয়েছিলো বাংলাদেশ থেকে।নিত্য পুজোয়
যশমাধবকে দেওয়া হয় নিরামিষ ভোগ।
একই সঙ্গে তারাশঙ্করী পীঠে পূজিত হন কালভৈরব|তারাশঙ্করী পীঠের আরও এক আকর্ষণ হন ‘নবমুণ্ডি আসন’। বাঘ, হাতি, শেয়াল, সাপ, অপঘাতে মৃত ব্যক্তি, চণ্ডাল ইত্যাদির ৯টি মাথার খুলি দিয়ে সজ্জিত এই আসন তন্ত্র সাধনায় ব্যাবহিত হতো।
প্রায় প্রত্যেক বিশেষ তিথি এবং দীপান্বিতা অমাবস্যায় এখানে বিশেষ পুজো এবং হোম যজ্ঞর আয়োজন হয়।
একটি সহজ উপাচার বলে দিচ্ছি যার মাধ্যমে আপনারাও মা তারাশঙ্করীর বিশেষ আশীর্বাদ পেতে পারেন। এগারোটি আতপ চাল একটি কলা এবং একটি ঘিয়ের প্রদীপ একটি থালায় রেখে অমাবস্যার রাতে মা তারা শঙ্করীকে স্মরণ করে নিজের মনোস্কামনা জানিয়ে প্রবাহ মান জলে ভাসিয়ে দিন।আপনার মনোস্কামনা দ্রুত পূরণ হবে।
আগামী পর্বে আবার ফিরে আসবো অন্য কোনো কালী মন্দিরের কথা নিয়ে|ধারাবাহিক ভাবে চলতে থাকবে কালী কথা। পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।