একান্ন পীঠ – সুগন্ধা

46
শক্তি পীঠ নিয়ে আলোচনায় আপনাদের ভালো লাগছে জেনে আমি উৎসাহিত ও গর্বিত|
আজ যে বিশেষ পীঠটির কথা লিখবো তা বর্তমানে আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশে অবস্থিত।আজকের পর্বে জানবো শক্তি পীঠ সুগন্ধার কথা|
বাংলাদেশ এর বরিশালের শিকারপুর গ্রামে অবস্থিত এই বিশেষ শক্তি পীঠ সুগন্ধা বাংলাদেশ তথা গোটা বিশ্বে বসবাস কারী হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে এটি একটি অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ তীর্থ ক্ষেত্র|
পুরান মতে দেবীর নাসিকা পতিত হয়েছিলো এই স্থানে|দেবীর ভৈরব এখানে ত্র্যম্বক|মন্দিরের স্থান টি অতি সুন্দর, পাশ দিয়ে বয়ে গেছে সুগন্ধা নদী|দেবী এখানে সুনন্দা নামেও প্রসিদ্ধা|
অন্নদা মঙ্গল কাব্যে সুগন্ধা নামক শক্তি পীঠের উল্লেখ আছে, সেখানে বলা হচ্ছে –
সুগন্ধায় নাসিকা পড়িল চক্রহতা|
ত্র্যম্বক ভৈরব তাহে সুনন্দা দেবতা|
এছাড়া শিব চরিত ও পীঠ নির্নয় তন্ত্রেও শক্তি পীঠ সুগন্ধার উল্লেখ আছে|
বহু কাল পূর্বে শিকার পুরের জমিদার শ্রীরাম রায় স্বপ্নাদেশ পেয়ে গভীর জংগলের মধ্যে খুঁজে পান ত্রম্বকেশ্বর মহাদেবের মূর্তি এবং ওই স্থানেই নির্মাণ করান শিব মন্দির।সেই সময়ে ত্রম্বকেশ্বর শিব ছিলেন এখানে আরাধ্য দেবতা।
পরবর্তীতে আরো একটি অলৌকিক ঘটনা ঘটে।শিকারপুর গ্রামে পঞ্চানন চক্রবর্তী নামে একজন নিষ্ঠাবান ব্রাহ্মণ বাস করতেন|দেবী কালী এই ব্রাহ্মণ কে স্বপ্নাদেশ দিয়ে সুগন্ধা নামক এই বিশেষ শক্তি পীঠের সন্ধান দেন|পড়ে এই ঘটনা লোক মুখে প্রচারিত হয় ও দেবীর মন্দির স্থাপিত হয়|
অত্যন্ত দুক্ষের বিষয় প্রাচীন সুগন্ধার মন্দির টি বহুদিন আগেই ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে, এমনকি প্রাচীন দেবী মূর্তি ও আর নেই|বর্তমান মন্দির ও মূর্তি দুটোই আধুনিক সময়ে নতুন করে নির্মিত|দেবীর প্রস্তুরীভূত দেহাংশ ও এখানে সংরক্ষিত নেই যা অন্য অনেক শক্তি পীঠে আছে|
বর্তমানে এখানে দেবী উগ্রতারার মূর্তি বিরাজিতা। তাকেই দেবী সুগন্ধা রূপে পূজা করা হয় । মাথার ওপর কার্ত্তিক, ব্রহ্মা, বিষ্ণু, শিব , গণেশ বিরাজমান |দেবী খড়্গ, খেটক, নীলপদ্ম, নর মুণ্ডের কঙ্কাল ধারন করে আছেন |
এককালে স্থান টি ছিলো অতি দুর্গম, দুর দুর থেকে তন্ত্র সাধকরা আসতেন এখানে তন্ত্র সাধনা করতে|
সুগন্ধা মন্দিরে নিষ্ঠা সহকারে ও মহা সমারোহে পালিত হয় শিব চতুর্দশী|সেই উপলক্ষে ব্যাপক জন সমাগম হয়।
আজ এখানেই শেষ করছি শক্তি পীঠ সুগন্ধা
নিয়ে আলোচনা।যথা সময়ে পরের পর্বে
অন্য কোনোশক্তি পীঠ নিয়ে
ফিরে আসবো।পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।