একান্ন পীঠ – যশোরেশ্বরী

90
আজ একান্ন পীঠ পর্বে যে শক্তিপীঠের কথা লিখবো তা বাংলা দেশে অবস্থিত এবং যশোরেশ্বরী নামে জগৎ বিখ্যাত।
দেহত্যাগের পর দেবী সতীর শরীর যে একান্ন খন্ডে বিভক্ত হয় তার পাঁচটি খন্ড বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ে এর মধ্যে এর মধ্যে সাতক্ষীরার ঈশ্বরীপুর গ্রামে সতীর করকমল বা পাণিপদ্ম পতিত হয়। পরবর্তীতে এই পবিত্র স্থানেই গড়ে ওঠে
যশোরেশ্বরী মন্দির।
তন্ত্রচূড়ামণিতে বলা হয়েছে—
‘যশোরে পানিপদ্ম দেবতা যশোরেশ্বর /চণ্ডশ্চ ভৈরব যত্র তত্র সিদ্ধ ন সংশয়।’
অর্থাৎ যশোরে সতীর পাণিপদ্ম বা করকমল পড়েছে। দেবীর নাম যশোরেশ্বরী, ভৈরব হলেন চণ্ড। এই সতীপীঠে কায়মনোবাক্যে পুজো করলে ভক্তের মনোবাসনা পূর্ণ হয় বলে সর্বসাধারণের বিশ্বাস।
মনেকরা হয় বহু প্রাচীনকাল থেকেই এখানে এক অজ্ঞাত ব্রাহ্মণ কতৃক নির্মিত যশোরেশ্বরী মন্দির অবস্থিত ছিলো পরবর্তীকালে বাংলার শাসক লক্ষ্মণ সেন তৈরী করেন মন্দির। তার আরো পরে রাজা প্রতাপাদিত্য কর্তৃক মন্দিরের সংস্কার এবং নবরূপ প্রদান করা হয়।
মন্দির নিয়ে একটি অলৌকিক এবং
ঐতিহাসিক ঘটনার উল্লেখও পাওয়াযায়।
জনশ্রুতি আছে যে মহারাজা প্রতাপাদিত্যর আমলে তার সেনাপতি এখানকার জঙ্গল থেকে একটি আলৌকিক আলোর রেখা বের হয়ে মানুষের হাতেরর তালুর আকারের একটি পাথরখণ্ডের উপর পড়তে দেখেন।পরবর্তীতে তিনি ওই স্থানে কালীর পূজা করতে আরম্ভ করেন এবং যে স্থানে সেই পাথরটি ছিলো সেই স্থানেই একটি সুন্দর কালী মন্দিরটি নির্মাণ করেন যা আজ যশোরেশ্বরী কালী মন্দির নামে প্রসিদ্ধ|এই মন্দির দর্শন করতে এসেছিলেন মোঘল সেনাপতি মানসিংহ|
বর্তমানে মন্দির-বেদির ওপর প্রতিষ্ঠিত মাতৃমূর্তির শুধু মুখমণ্ডলই দৃষ্টিগোচর হয়|মায়ের মাথার ওপর টকটকে লাল রঙের চাঁদোয়া। কণ্ঠে রক্তজবার মালা ও নানা অলংকার। মাথায় সোনার মুকুট। লোলজিহ্বা দেবীর ভীষণা মূর্তি তবে মুখ মন্ডলে এক অদ্ভুত প্রশান্তি ও স্নিগ্ধতা|
শ্রীযশোরেশ্বরীর পুজো তন্ত্রমতে হয় এবং প্রতিবছর মন্দিরে খুব ধুমধাম করে শ্যামাপুজো হয় যা দর্শন করতে আসেন অসংখ্য মানুষ ও নিজেরদের মনোস্কামনা জানান দেবীর কাছে|
আজ এখানেই শেষ করছি একান্ন পীঠ পর্ব
ফিরে আসবো পরের পর্বে।পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।