কালী কথা – শ্যাম নগরের ব্রহ্মময়ী দেবী

272

সামনেই দীপান্বিতা অমাবস্যা। দীপাবলী উপলক্ষে শুরু করছি কালী কথার নতুন পর্ব যা চলবে ধারাবাহিক ভাবে।বিগত পর্বগুলিতে কিছু প্রসিদ্ধ এবং জাগ্রত দেবী মন্দিরের কথাআমি আপনাদের সামনে তুলে ধরছি|আজকের পর্বে শ্যাম নগরের অন্যতম প্রাচীন ব্রহ্মময়ী কালী মন্দির নিয়ে।উত্তর চব্বিশ পরগনার শ্যামনগর স্টেশনের কাছেই রয়েছে একটি প্রাচীন গ্রাম যার নাম মুলজোড়া|এই গ্রামেই অবস্থিত প্রসিদ্ধ ব্রহ্মময়ী কালী মন্দির|অবশ্য এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন কলকাতার পাথুরিয়াঘাটার জমিদার গোপীমোহন ঠাকুর|এই মন্দির প্রতিষ্ঠার সাথে জড়িত আছে এক অলৌকিক কাহিনী|প্রাচীন জনশ্রুতি অনুসারে গোপীমোহন ঠাকুরের মেয়ের নাম ছিল ব্রহ্মময়ী|মেয়ের যখন নয় বছর বয়েস তখন তার বিবাহের দিন নির্ধারিত হয়|বিবাহের দিন ব্রহ্মময়ী প্রথা অনুসারে গঙ্গাস্নানে গিয়ে হঠাৎই ডুবে যায় গঙ্গার জলে|অনেক খোঁজা খুঁজির পরেও তাকে আর পাওয়া যায় না|পড়ে দেখা যায় কলকাতার গঙ্গাঘাট থেকে স্রোতের টানে শবদেহ ভেসে এসেছে মূলাজোড়ের ঘাটে|সেই রাতেই দেবী গোপীমোহনকে স্বপ্নাদেশ দেন যে তিনি স্বয়ং তার গৃহে এতদিন ব্রহ্মময়ী রূপে ছিলেন এবং গোপী মোহন যেনো শোক ভুলে মূলাজোড়ে ‘ব্রহ্মময়ী’ নামে একটি কালীমন্দির প্রতিষ্ঠা করেন|দেবীর আদেশ গোপীমোহন অক্ষরে অক্ষরে পালন করেন|প্রতিষ্ঠিত হয় এই ব্রহ্মময়ী কালী মন্দির ও কন্যা জ্ঞানে ব্রহ্মময়ীর পূজা শুরু হয়|সেই পুজো চলে আসছে আজও|ভাগীরথী তীরে অবস্থিত কালী মন্দিরটি নবরত্ন শিল্পশৈলীতে নির্মিত রয়েছে উদ্যান ও ১২টি শিবমন্দি|মন্দিরের গর্ভগৃহে প্রতিষ্ঠিত দেবী বিগ্রহটি কালোপাথরের নির্মিত যা উচ্চতায় প্রায় ফুট তিনেক|দেবী এখানে স্বর্ণালঙ্কারভূষিতা ও সবসনা|দেবী এখানে প্রসন্ন মুখমণ্ডলে বিরাজিতা ও ঘরের মেয়ে রূপে পূজিতা হন|প্রতি দীপান্বিতা অমাবস্যায় এবং রটন্তী চতুর্দশীতে বিশেষ কালীপূজা হয় এখানে এছাড়াও গোটা পৌষমাস ব্যাপী এখানে উৎসব হয় যা দেখতে আসেন অসংখ্য মানুষ|আজকের পর্ব এখানেই শেষ করছি|ফিরে আসবো আগামী পর্বে কালী কথার পরবর্তীপর্ব নিয়ে। পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন।ধন্যবাদ।