নব রাত্রি উপলক্ষে পূজিতা দেবী দুর্গার চতুর্থ রূপ হলো কুষ্মাণ্ডা রূপ এই রূপে দেবী পূজিতা হন নব রাত্রির চতুর্থ রাত্রে|আজকের পর্বে দেবীর এই রূপ নিয়ে লিখবো।দেবীর এইরকম অদ্ভুত নাম এর নিদ্দিষ্ট শাস্ত্রীয় ব্যাখ্যা আছে ‘কু’ শব্দের অর্থ কুৎসিত এবং ‘উষ্মা’ শব্দের অর্থ ‘তাপ’; ‘কুষ্মা’ শব্দের একত্রিত অর্থ কুৎসিত বা তাপ কে হরণ করেন যিনি। কুষ্মান্ডা রূপে দেবী জগতের সকল দুঃখ কষ্ট বা কিছু আপাত দৃষ্টিতে কুৎসিত সব কিছুকে গ্রাস করে নিজের উদরে ধারণ করেন তাই তার নাম ‘কুষ্মাণ্ডা’।মহাপ্রলয়ের পরে যখন সর্বত্র শুধু নিশ্ছিদ্র অন্ধকার ছেয়ে রয়েছে, তখন এই দেবী কুষ্মাণ্ডা নব রূপে ব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টি করেছিলেন|দেবী অষ্টভুজা” নামেও পরিচিতা আবার দেবীকে “কৃষ্ণমাণ্ড” নামেও ডাকা হয়|দেবী সিংহবাহিনী ও ত্রিনয়নী দেবীর হাতে থাকে সুদর্শনচক্র, ধনুর্বাণ, রক্তপদ্ম, কমণ্ডলু, অমৃত কলস ও জপমালা|মনে করা হয়, দেবী কুষ্মাণ্ডা অল্প পূজাতেই সন্তুষ্ট হন। তার পূজায় কুষ্মাণ্ড বা কুমড়ো বলি দেওয়ার রীতি প্রচলিত আছে।কাশীতে দেবী কুষ্মাণ্ডার মন্দির বিখ্যাত। কাশীতে তিনি দুর্গা নামেই পূজিতা হন।তিনি কাশীর দক্ষিণ দিকের রক্ষয়িত্রী। কাশীখণ্ড তে উল্লেখ রয়েছে, অসি নদীর সঙ্গমস্থলে কুষ্মাণ্ডার অধিষ্ঠান।নব রাত্রিতে যারা দেবীর কুষ্মান্ডা রূপের পুজো করবেন তারা প্রথমে একটি কলস স্থাপন করবেন তারপর সাধ্য মতো অন্যান্য দেবতাদের পূজা করবেন । তাঁদের পূজা করার পর, দেবী কুষ্মান্ডার পূজা শুরু করুন।পুজোর দিন ভোরে ঘুম থেকে উঠে স্নান করে হাতে ফুল নিয়ে দেবীর পূজা করা উচিত।দেবী কুষ্মান্ডার ধ্যান করার পর, তাঁকে ধূপ, লাল ফুল, সাদা ফল নিবেদন করুন। এই ভাবে পুজো করলে দেবীর আর্শীবাদ এবং সৌভাগ্যবান হয়ে উঠতে পারেন।দেবী কুষ্মান্ডার ভোগ হিসেবে হালুয়া এবং দই দিন। আপনি এটিকে প্রসাদ হিসেবে নিতে পারেন।পুজোর শেষে দেবীর আরতি করুন।শাস্ত্র মতে দেবীর কুষ্মান্ডা রূপের আরাধনায় বৈভব, সুখ সমৃদ্ধি ও যশ এবং খ্যাতি বাড়ে বলে মনে করা হয়|আপনারাও নবরাত্রির এই পবিত্র সময়কে শাস্ত্র মতে ব্যবহার করে নিজের জীবনের যাবতীয় সমস্যা দূর করতে পারেন কারন নবরাত্রির এই সময় গ্রহ দোষ খন্ডনের শ্রেষ্ঠ সময়। ফিরে আসবো আগামী পর্বে দেবীর পরবর্তী রুপ নিয়ে। পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।